বৃহস্পতিবার, মে ৯, ২০২৪
Dis_leadবন্দররাজনীতি

স্মরণকালের বৃহত্তর সংবর্ধনায় সিক্ত হলেন সেলিম ওসমান

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের রাজনীতির ইতিহাসে খুব অল্প মানুষই নিজ কৃতকর্মের কারণে পেয়েছেন সংবর্ধনা। কেউ পেয়েছেন রাজনৈতিক ব্যাত্তিদের কাছ থেকে, আবার কেউ পেয়েছে অন্য কোন সংগঠনের পক্ষ থেকে। তবে, এবার স্মরণকালের সর্ব বৃহত্তর সংবর্ধনা পেলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য ব্যাবসায়ী নেতা সেলিম ওসমান। তার দানবীরতা, মানবীকতাসহ বিভিন্ন খাতে অসংখ্য উন্নয়ন মূলক কাজে অবদান রাখায় তাকে এই সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে বন্দর উপজেলার সমরক্ষেত্র মাঠে সেলিম ওসমানকে সংবর্ধনা প্রদান করেন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ব্যবাসায়ী, বিভিন্ন পেশার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ সদর-বন্দর অঞ্চলের সর্বস্তরের জনগন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের কয়েকদিন আগ থেকেই পুরো বন্দর জুড়ে চলছিলো ব্যাপক প্রস্তুতি। সাধারণ মানুষের মধ্যে ছিলো উৎসাহ-উদ্দিপনা। কেননা বন্দর উপজেলার প্রায় প্রতিটি মানুষই উপকৃত হয়েছেন সেলিম ওসমানের দ্বারা। বিগত ৯ বছরে হাজার হাজার শিশু-কিশোরদের জন্য শিক্ষার পাশাপাশি খেলা-ধুলা, সংস্কৃতির উন্নয়নে তিনি রেখেছেন অভাবনীয় ভূমিকা।

বিকেল ৩টা বাজে অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, দুপুর ২টা থেকে সদর-বন্দরের বিভিন্ন ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, মহল্লা থেকে মিছিল নিয়ে আসতে শুরু করেন সাধারণ জনগন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। শুধু তাই নয়, সেলিম ওসমানকে সংবর্ধানা দিতে সেখানে উপস্থিত হন- বীর মুক্তিযোদ্ধা, আইনজীবী, ডাক্তারসহ বিভিন্ন পেশার ব্যাক্তিবর্গও।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বিগত ৯বছর যাবত সেলিম ওসমানের নানান উন্নয়ন নিয়ে তৈরি করা ‘ডকুমেন্টরি’ প্রদর্শন করা হয়। যাতে শিক্ষায় তার অবদান, সদর-বন্দরের অবকাঠাম গত উন্নয়নসহ মানবতা মুলক কর্মকান্ড। পরে দোয়া পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বক্তব্য পর্ব।

অনুষ্ঠানে বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ রশিদ এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান।

জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হক নিপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু চন্দন শীল, সেলিম ওসমানের সহধর্মিনী মিসেস নাসরিন ওসমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, নারায়ণগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সানাউল্লাহ সানু, বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধান, বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বাংলাদেশ ক্লাস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রবীর কুমার সাহা, এনসিসিআই এর পরিচালক মোরশেদ সারোয়ার সোহেল, বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লিটন সাহা, বাংলাদেশ হুঁশিয়ারি সমিতির সভাপতি নাজমুল আলম, বাংলাদেশ নিটিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সেলিম সারোয়ার, বাংলাদেশ ডাইন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমজাদ হোসেন খসরু, আইনজীবী সমিতির সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল।

আরো উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জের সাবেক নারী সংসদ সদস্য হোসনে আরা বাবলি, শামীম ওসমানের একমাত্র পুত্র ইমতিনান ওসমান আয়ন, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জিএম আরমান, মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি মোদাচ্ছেরুল হক দুলাল, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামীম ওসমান বলেন, ওরা খাওয়ার জন্য পাগল হয়ে থাকে, ওরা এত খায়, মনে হয় ওরা বাংলাদেশটাকেই চিবিয়ে খাবে। তারপরেও ওদের খুদা মিটে না। এটা সব জায়গাতে আছে। এদের মধ্যে সেলিম ওসমান ব্যতিক্রম। আমার বড় ভাই সেলিম ওসমান ধান্ধা করার জন্য আজকে আসে নাই। উনার প্রতিটি টাকা রক্ত বিক্রি করা পরিশ্রমের। আজকাল খুব কম মানুষই আছে, নিজের টাকা দিয়ে প্রতিষ্ঠান করে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস রাজনীতি একটা ইবাদত। ২০০১ সালে আমাকে ফেল করিয়ে দেওয়া হলো। আড়াই লাখ টাকা নিয়ে দেশ ছেড়ে চলে গেলাম। সেখানে ১৮ ঘন্টা কাজ করতাম। অনেকে বলতো ৫ বছর এমপি ছিলা কি করলা? আমি মনে মনে ভাবতাম, আর হাসতাম। কারণ আমার পিতা একেএম সামসুজ্জোহা। পয়সা কামানোর জন্য, ধান্ধা করার জন্য রাজনীতিতে আসি নাই।

অনুষ্ঠানে সেলিম ওসমান বলেন, আমাদের বন্দরে যারা যখন সভা সমাবেশ করতে চাইছে আমরা করতে দিয়েছি। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, বিএনপি, কাউকে আটকাইনি। সবাইকে নিয়ে সভা সমাবেশ করেছি। আমার আয়োজনে এক মঞ্চে সকলকে একত্রিত করেছি। এমন কোন দল ছিলো না যারা আমার মঞ্চে ছিলেন না। অতন্ত্য দুঃখের সাথে বলছি, ২৮ তারিখ জুজুর ভয় দেখানো হচ্ছে, আপনারা এই জুজুর ভয় পাবেন না। বন্দরে অনেকই আমার সাথে মিটিং করে, আমার সাথে থেকে এখন ফনা ধরছে। এই ফনার ফনা থাকবে না কিন্তু। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বলে গেলাম, বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনাকে কেউ কিচ্ছু করতে পারবে না। আমি যে দলই করি না কেনো, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে আমি হবো নাকি শামীম ওসমান হবে সেটা বিষয় না। বিষয় হলো একটাই, বঙ্গবন্ধুর কণ্যাকে দিয়ে আগামীর সরকার গড়তে হবে। এটা আপনাদের প্রত্যাকের ঈমানের অঙ্গ।

পরিশেষে ক্রেস্ট ও ফুলের তোরা দিয়ে বিভিন্ন দলের, পেশার ও সাধারণ মানুষ সেলিম ওসমানকে সংবর্ধনা প্রদান করেন।

RSS
Follow by Email