শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪
Led03বন্দররাজনীতি

বন্দরবাসীর সাথে আমার সম্পর্কের ব্রীজটা তৈরি করেছিলেন নাসিম ভাই: শামীম ওসমান

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, ‘আমরা আমাদের বড় ভাইকে যতটা ভয় পেতাম, আব্বা আম্মাকেও এতটা ভয় পেতাম না। আমি আপনাদের কাছে দোয়ার ভিক্ষা চাই। আপনার আমার ভাইয়ার জন্য, আমার আব্বার জন্য, আমার মায়ের জন্য, এই এলাকায় যারা চলে গেছেন তাদের জন্য, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের জন্য, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যাতে তাদের সবাইকে ক্ষমা করে দেন এবং বেহেস্ত নসিব করেন। আপনারা কষ্ট করে এখানে এসেছেন, এই ভালোবাসাই আমাদের জন্য অনেক পাওয়া; আমরা আর কিচ্ছু চাই না।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমানের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বাদ আছর বন্দর নাসিম ওসমান মডেল হাইস্কুল মাঠে আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

শামীম ওসমান বলেন, ‘বন্দরবাসীর সাথে আমার সম্পর্কটা অন্যরকম। আর এই সম্পর্কের ব্রীজটা তৈরি করেছিলেন নাসিম ভাই।’

প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা কাজিম উদ্দিনকে স্মরণ করে শামীম ওসমান বলেন, কিছুদিন আগে কাজিম ভাই ও রশিদ ভাই আমার বাসায় এসেছিলেন। আমি রশিদ ভাইয়ের সামনেই কাজিম ভাই কে বলেছিলাম, ভাই নির্বাচনটা এবার আপনি করেন। রশিদ ভাই পাশেই বসা। কাজিম ভাই বললেন, না ভাই; রশিদ ভাই মুরুব্বি নির্বাচনটা উনি করুক। এটাকে বলে রাজনীতি। আমি ঐদিন কাজিম ভাইয়ের কাছ থেকে শিখেছি।

শামীম ওসমান বলেন, আমরা কিছু কাজ করতে চাই, বড় বড় অনেক কাজ নিয়ে আসছি। এইমাত্র যখন আমরা এখানে বসা, তখন আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আমাদের জন্য নির্দেশ এসেছে। বন্দরের নির্বাচনে স্বশরীরে অবস্থান করার জন্য। অন্য সহযোগী সংগঠনের কাছেও ওই নির্দেশ আসবে। আমি একটা কথা বলতে চাই। নির্বাচনের সময় বিনা কারণে আমাদের ছবি ব্যবহার করবেন না। যার যার মত সে সে নির্বাচন করেন।

বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে শামীম ওসমান বলেন, কেউ কেউ উদ্দেশ্যমূলক ভাবে কিছু কথা বলছেন। আমি কারো ব্যাকগ্রাউন্ড নিয়ে কথা বলতে চাই না। আমি আরো দুইটা মুখ এখানে আশা করেছিলাম। এটা তো কোন দলের প্রোগ্রাম না, এটা মিলাদ মাহফিল। এখানে সবাই আসবে। বিভিন্ন কারণে হয়তোবা তার আসেন নাই, সেটা তাদের ব্যাপার।

তিনি বলেন, আমার খুব বেশি ঘৃণা লাগে যখন কেউ বলে টাকা দিয়ে নির্বাচন করা যায়। এই জনগণ কি এত সস্তা? যে কয়েকটা টাকার জন্য নিজেদের ঈমান বিক্রি করে দিবে। তবে এখানে এসে শুনলাম কেউ কেউ কিছু কথা বলছে। কথা গুলো যদি আমরা আমলে নেই, তাহলে আগামীকাল থেকে কেউ কিন্তু মাঠে নামতে পারবেন না। আমি সেলিম ওসমান না। আমরা জানি কি করতে হবে। আমরা চাই একটি সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন হোক। যার কপালে লেখা আছে সে নির্বাচিত হোক।

এ সময় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামীকাল থেকে এখানে যেন কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেটা তোমরা দেখবা।’

শামীম ওসমান আরও বলেন, নির্বাচনে কেউ মহরা দেখাবেন না। যদি আমরা ক্ষমতাসীন দল হয়ে ক্ষমতা দেখাতাম তাহলে কিন্তু কেউ নির্বাচন করতেন না। আমরা কাউকে হ্যাঁ/না বলি না। রাজনীতি যদি ক্ষমতার জন্য হয় তাহলে আমি চাইনা আমার সন্তান কিনবা সেলিম ভাইয়ের সন্তান কেউ রাজনীতি করুন। রাজনীতি যদি কাউকে ভালোবাসার জন্য করা হয়, সেটা হচ্ছে এবাদত।

তিনি বলেন, আমি আপনাদের কাছে পরিষ্কারভাবে অনুরোধ করছি, ঈমান কেউ বিক্রি করবেন না। কারা কারা নির্বাচন করছে আমি জানিও না। আজকে এখানে এসে কিছু কথা শুনলাম। আমার বড় ভাই সেলিম ওসমানের সামনে কেউ কেউ কিছু কথা বলেছেন। এই কথাগুলো শোনার পরে যদি আজ আমার ভাইয়ের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠান না হতো, তাহলে হয়তো আমি আজ একটা সিদ্ধান্ত দিয়ে যেতাম। কিন্তু সেই কাজটা করবো না। তাই যারা কথা বলবেন, বুঝে শুনে কথা বলবেন। কারণ মুখের বুলি ও বন্দুকের গুলি একবার বের হয়ে গেলে আর ফেরানো সম্ভব নয়। আর এটাই শেষ না সামনে আরো সময় আছে। মিলেমিশে ছিলেন, মিলেমিশে থাকেন।

পরিবারের পক্ষে এসময় উপস্থিত ছিলেন- মরহুম নাসিম ওসমানের ছোট ভাই নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানের ছেলে ইমতিনান ওসমান অয়ন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- নারায়াণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, নারায়াণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল (ভিপি বাদল), নারায়াণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ রশীদ, নারায়াণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক শাহ্‌ নিজাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী, নারায়াণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক জিএম আরমান,শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান, নারায়াণগঞ্জ মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজনু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু, বন্দর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সানু, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সভাপতি এড. মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া, বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহম্মেদ, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ দেলোয়ার হোসেন প্রধান, ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ কামাল হোসেন, আলিরটেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাকির হোসেন, সরকারি তোলারাম কলেজ ছাত্র লীগের সভাপতি ও ভিপি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজর আলী, নারায়াণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ আফজাল হোসেন, সাবেক কাউন্সিলর দুলাল, মহানগর ছাত্রলীগর সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান সম্রাট, সাধারণ সম্পাদক রাসেল প্রধান প্রমূখ।

RSS
Follow by Email