তল্লাশির নামে শ্রমিকদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে: মাহমুদ কলি হারুন
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: গার্মেন্ট শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি ২৫০০০ টাকা ঘোষণা, শ্রমিক হত্যার বিচার ও বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন সহ চলমান মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে গ্রেফতার হওয়া সকল শ্রমিকদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির নেতাকর্মীরা। শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) বিকেল ৪ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে ওই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদ কলি হারুনের সভাপতিত্বে ও অর্থ সম্পাদক মেহেদি হাসান উজ্জ্বলের সঞ্চালনায় উক্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ সভাপ্রধান অঞ্জন দাস, জেলার সদস্য সচিব আব্দুল আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম বাবু, ইমদাদ হোসেন, যুগ্ম সদস্য সচিব জাহিদ সুজন, বিসিক আঞ্চলিক শাখার সংগঠক অভি হাওলাদার, সিদ্ধিরগঞ্জ ইপিজেড অঞ্চলের সংগঠক জিয়াউর রহমান, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের জেলা সভাপতি ফারহানা মুনাসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
অঞ্জন দাস বলেন, আজ ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে নির্মম একটি দিন। ২০১২ সালের এই দিনে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকার তাজরীন ফ্যাশনে নির্মম হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছিলো। সেদিন মালিকপক্ষের অব্যবস্থাপনায় আগুনে পুড়ি ছাই হয়ে যায় ১১৭ জন শ্রমিকের প্রাণ। আহত হয় দুই শতাধিকের বেশি শ্রমিক। ঘটনার ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও মামলায় দীর্ঘসূত্রিতা, বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও স্বজনপ্রীতির দোষে আজও শাস্তি হয়নি তাজরীনের মালিক দেলোয়ার হোসেনসহ অন্যদের। যথাযথ ক্ষতিপূরণ কিংবা দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসার টাকা পায়নি বেচে ফিরে আসা শ্রমিকেরা। তাদের অনেকেই চিরস্থায়ী পঙ্গুত্ব বরণ করে নিয়েছেন। এদেশের ক্ষতিপূরণ আইন বদল করতে হবে। দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এর সাথে চলমান মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে করা শ্রমিকদের সকল দাবিদাওয়া মেনে নিতে হবে। আমরা ঈশা খাঁর সময়ে বসবাস করছি না। ১২৫০০ টাকা দিয়ে এই দেশে জীবনযাপন করা যায় না। শ্রমিকদের ২৫০০০ টাকাই মজুরি ঘোষণা করতে হবে।
মাহমুদ কলি হারুন বলেন, মালিকপক্ষ সরকারের সহযোগিতায় চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে নস্যাৎ করার পরিকল্পনায় নেমেছে। এর জন্য সবসময়কার লেঠেল বাহিনীকে তারা সাথেই পেয়েছে। পুলিশ সরাসরি গুলি করে শ্রমিক হত্যা করছে। এর জবাব আজ নয় কাল তাদের দিতে হবে। আমাদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনের অন্যতম নেতা বাবুল হোসেনকে তারা ২৪ ঘন্টা গুম রেখে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করেছে। রিমান্ডে তার উপর শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। শ্রমিকাঞ্চলগুলোতে নিয়মিতভাবে পুলিশি মহড়া চলছে। বাসাবাড়িতে তল্লাশির নামে শ্রমিকদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। যাতে করে তারা মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে যুক্ত না হয়। আমরা বলি এসব করে শেষ রক্ষা হবে না। অনতিবিলম্বে শ্রমিকদের সকল দাবি মেনে নিন। শ্রমিকনেতা বাবুল হোসেন সহ আটককৃত সকলকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। নয়তো মালিকদের দম্ভের মসনদ ভেঙ্গে দিবে শ্রমিকরা। এর থেকে এই লুটতরাজ সরকারও রক্ষা পাবে না।