শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪
Led01রাজনীতি

২৭ দিনে ২০ মামলা, না.গঞ্জে বিএনপির শীর্ষ নেতারা আত্মগোপনে

# পুরো জেলায় ৫শ’ ১৪জন গ্রেপ্তার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: সিদ্ধিরগঞ্জে সড়ক অবরোধ করে অগ্নিসংযোগ, ফতুল্লা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে প্রতিবন্ধকতা, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার অভিযোগ ও আড়াইহাজারে পুলিশ হত্যাচেষ্টা ও নাশকতার অভিযোগে বিএনপি কেন্দ্রিয় নেতাসহ জেলার শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে জেলার বিভিন্ন থানা গুলোতে। মামলা হওয়ার পর থেকে নারায়ণগঞ্জ অনেকটা বিএনপিশূন্য। গ্রেপ্তার এড়াতে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল ও মৎস্যজীবী দলের প্রায় সব নেতাই গা ঢাকা দিয়েছেন। ২৮ অক্টোবর বিএনপির ঢাকার মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকে পুলিশি অভিযানের মুখে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে নতুন নতুন মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাকিরা আত্মগোপনে রয়েছেন।

বিএনপির চেয়ারর্পাসন খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন অসুস্থ, কারাবন্দী অবস্থা থেকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারর্পাসন তারেক রহমান দেড় দশক ধরে যুক্তরাজ্যে, একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ ইতিমধ্যে ২০ জন কেন্দ্রীয় ও শীর্ষস্থানীয় নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। নারায়ণগঞ্জে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতারা আত্মগোপনে, মহানগরের আহ্বায়ক আত্মগোপনে থাকলেও দলকে মাতিয়ে রাখা সদস্য সচিব পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের শীর্ষ দুই পদের (সভাপতি/আহ্বায়ক ও সাধারণ সম্পাদক/সদস্যসচিব) নেতার সংখ্যা খুবই স্বল্প। বিএনপি ও তিন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনসহ যুগপৎ শরিক দলের শীর্ষ পদে থাকা ৫শ’ ১৪জন নেতা ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। অনেক নেতা আত্মগোপনে আছে, তবে এদের মধ্যে কাউকে মাঝেমধ্যে দেখা যাচ্ছে, তবে সবাই বাসায় কম থাকেন বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে। তবে মাঝে মাঝে বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের জটিকা মিছিলে দেখা মিলে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ি, গত ২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপির টানা হরতাল-অবরোধ চলাকালে সহিংসতার ঘটনায়, নারায়ণগঞ্জের ৭টি থানায় ২০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন বিএনপি ও যুগপৎ শরিক দলের ৫১৪জন নেতাকর্মী।

নির্দলীয় সরকারের অধীন সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে টানা এক বছরের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছিল বিএনপি। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ ঘিরে হামলা, সংঘর্ষ ও সহিংস ঘটনার পর দলটির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর মধ্যেও টানা কেন্দ্র ঘোষিত কয়েকটি কর্মসূচি পালন করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের নেতৃবৃন্দ। কর্মসূচি পালনে আড়াইহাজার পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে সংর্ঘষ তৈরী হয়, মহাসড়তে বেশ কয়েকটি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এরপর সোনারগাঁ, বন্দর, রূপগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ, ফতুল্লা ও নারায়ণগঞ্জ সদর থানা এলাকা গুলোও বিএনপির বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগ উঠে। এসব ঘটনায় কেন্দ্রীয় নেতাসহ স্থানীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। এর পর থেকে নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে থেকেই সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনের তফসিল বাতিলের দাবিতে হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি পালন করছেন। এসব কর্মসূচি ঘিরে যানবাহনে আগুন, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে।

২৩ নভেম্বর বিএনপির এক শীর্ষ নেতা মন্তব্য করেছেন বলেন, সরকার নির্বাচনের নামে তামাশা মঞ্চস্থ করার পরিকল্পনা করছে। জনগণের আন্দোলন অব্যাহত রেখে দেশের গণতান্ত্রিক আদর্শকে ফিরিয়ে আনতে চায় তাঁর দল। বিএনপির নেতাদের অভিযোগ, আরেকটি একতরফা নির্বাচন করার জন্য সরকার ২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিএনপির বিরুদ্ধে অনেকটা ‘ক্র্যাক ডাউন’ শুরু করেছে। গ্রেপ্তারের পাশাপাশি পুরোনো বিভিন্ন মামলায় সাজার রায়ও দেওয়া হচ্ছে।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের মধ্যে চললে নির্বাচনের আমেজ। বিএনপি-জামাত নির্বাচনে অংশগ্রহন না থাকায় অনেকটা খালি মাঠে গোল দিবে ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগে। এক সভায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, আমাদের খুব শখ ছিল ওদের সাথে খেলবো, কিন্তু খেলার মাঠে কেউ নাই। তারা রাতে চুরি করে, বাসে আগুন দেয় আর মানুষ পুড়িয়ে মারে। এরা মানুষ হতে পারে না। ইনশাল্লাহ ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হবে। এক দিন এদিক ওদিক হবে না। ২০০’র বেশি সিট পেয়ে শেখ হাসিনা আবার ক্ষমতায় আসবেন। কেউ কেউ বাংলাদেশকে আফগানিস্তান, গাজার মতো অবস্থায় ফেলতে চায়। শেখ হাসিনা থাকা অবস্থায় এটা হতে পারে না।

RSS
Follow by Email