নারায়ণগঞ্জের মন্দিরে মন্দিরে বিসর্জনের বিষাদ, সিঁদুর খেলার আনন্দ
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: দেবী দুর্গা বিদায় নিচ্ছেন। দুর্গাপূজার মণ্ডপগুলোতে একদিকে বিসর্জনের বিষাদ, অন্যদিকে সিঁদুর খেলার আনন্দ। ফলে আনন্দ-বিষাদে ভরে আছে ভক্তদের অন্তর।
নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি মন্দিরে মঙ্গলবার বিকালে লাল-সাদা শাড়ি পড়ে শত শত গৃহিণী বরণডালা ও সিঁদুরের কৌটা নিয়ে হাজির হয়। তাঁরা দেবীর চরণ স্পর্শ করে সঙ্গী বা উপস্থিত অন্য ভক্তদের কপালে-কপোলে সিঁদুর মাখিয়ে দিচ্ছেন।
এ বছর জেলার ২২৪টি মন্ডপে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ সদরে ৮০টি, বন্দরে ২৯টি, রূপগঞ্জে ৪৬টি, সোনারগাঁয়ে ৩৫টি ও আড়াইহাজারে ৩৪টি। নারায়ণগঞ্জের পূজা সব সময়ই জাঁকজমকপূর্ণ হয়। তাই নারায়ণগঞ্জসহ রাজধানী ঢাকা, কুমিল্লা, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জের সনাতন ধর্মালম্বীরা এ জেলায় পূজা দেখতে আসেন।
নারায়ণগঞ্জ সদরের ৮০টি মন্ডপের প্রতীমা বিসর্জন দিচ্ছে লক্ষ্যা পাড়ে। বিসর্জন দেখতে সেখানে বিকাল থেকেই ভীড় করেছে হাজার হাজার ভক্ত। পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক ও শহীদ সরোয়ারদী সড়কের দু’পাশে বসে আছে অনেকে।
কুমিল্লা থেকে নারায়ণগঞ্জের পূজা দেখতে এসেছেন শান্তা ঘোষ। তিনি জানান, বিসর্জনের পর এই সিঁদুরখেলা মূলত বিবাহিত নারীদের একটি মাঙ্গলিক আচার। স্বামী-সংসারের মঙ্গল কামনা করে সবাই বরণডালা সাজিয়ে বা সিঁদুরের কৌটা সঙ্গে নিয়ে আসেন। এই সিঁদুর দেবীর চরণ স্পর্শ করিয়ে কৌটায় করে সংরক্ষণ করেন। এই সিঁদুরই তাঁরা সারা বছর ব্যবহার করেন।
যাঁরা বরণডালা সাজিয়ে আনেন, তাতে থাকে—ধান, দূর্বা, বেলপাতা, কাঁচা হলুদ, কড়ি, যেকোনো রকম অন্তত একটি ফুল, নাড়ু আর মিষ্টি। আর সিঁদুরের কৌটা তো থাকেই। এই বরণডালা নিয়েই দেবী প্রণাম করে ঘরে ফেরেন তাঁরা।
নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি মণ্ডপে বিকালে সিঁদুর খোলার আয়োজন করা হয়েছে।
সন্ধ্যার পর থেকে প্রতিমা মন্দির গুলো থেকে শোভাযাত্রা করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শীতলক্ষ্যার পাড়ে। নদীর নং সার ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জের রাম সীতা মন্দিরের প্রধান পুরোহিত রতন চক্রবর্তী জানান, এবার দেবী এসেছে ঘোটকে, যাচ্ছেনও ঘোটকে। এর তাৎপর্য হলো বিশ্বে উত্তেজনা বাড়বে। তবে দেবীর চরণে অঞ্জলি দিয়ে তাঁরা শান্তি আর কল্যাণই কামনা করেছেন।