বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪
মতামত

বর্তমান সময়ের চ্যলেঞ্জ মোকাবেলায় স্কাউটিং

স্কাউটার মোঃ ফজলুল হক ভূইয়া মন্টু: বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে এবং নতুন প্রজন্মকে দক্ষ, নৈতিক ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে স্কাউটিং কার্যক্রমের বিকল্প নেই। জলবায়ুর পরিবর্তন, তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার ও মাদকের সহজলভ্যতা কিশোর সন্ত্রাস বা কিশোর গ্যাং এর মতো বড় বড় চ্যালেঞ্জগুলোর সামনে এই প্রজন্মের বৃহদাংশ যখন নিজেদের অস্তিত্ব বিলীন করে দিচ্ছে ঠিক সেখানে স্কাউটরা ব্যতিক্রম। তারা বর্তমান সময়ের সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে এবং জাতিকে তার নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে নিজেদের দিনে দিনে প্রস্তুত করে চলেছে। সুতরাং জাতির কল্যাণে দেশ গড়ার এই কারিগরদের সংখ্যা আরও বহুগুণ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। ইতোমধ্যে বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে স্মার্ট রাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে এবং বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিক মানে করার পদক্ষেপ গহন করেছেন। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে স্কাউটিং কার্যক্রমের মিল রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে ঘোষনা দিয়েছেন প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে ২টি করে কাব স্কাউট দল, ২টি করে স্কাউট দল,২টি করে রোভার দল ও মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গার্ল—ইন স্কাউট দল থাকতে হবে।

বর্তমান সময়ের যে চ্যালেঞ্জ গুলো রয়েছে তা মোকাবেলায় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল ছাত্র—ছাত্রীদের স্কাউটসের পতাকা তলে সমাবেত করে স্কাউটসের প্রতিজ্ঞা, আইন,মটো শ্লোগান, স্কাউট পদ্ধতি মূলনীতি, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে তাদের জীবনে প্রয়োগ করার কৌশল নিধার্রন করতে পারলে বিদ্যালয়ের সকল ছাত্র—ছাত্রীদের আত্মনিবেদিত, সৎ ও যোগ্য তথা সুনাগরিক দেশপ্রমিক হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। নব প্রজন্মকে শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, আধ্যাত্মিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তৃনমূল, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ব্যক্তিগতভাবে সৎ, সুন্দর, দক্ষ, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে গড়ে তুলতে পারলে সমাজ থেকে তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার ও মাদকের ছোবল, কিশোর সন্ত্রাস বা কিশোর গ্যাং এর মতো বড় বড় চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করা সম্ভব।

সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে যেসব সামাজিক প্রতিষ্ঠান নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে সেগুলোর মধ্যে স্কাউটিং অন্যতম। স্কাউটিং যেমন— স্বেচ্ছাসেবী, দেশপ্রেমিক, যোগ্য ও দক্ষ মানব সম্পদ তৈরিতে কাজ করছেন, তেমনি শিশু—কিশোর ও যুবকদের শারীরিক, মানসিক ও নৈতিক গুণাবলির বিকাশ ঘটাতেও বিশেষ ভূমিকা রাখছে। সমাজ গঠনে স্কাউটিংয়ের অবদান অনেক। ব্যবহারিক জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে বিশ্বের যুবসমাজের মানসিক, শারীরিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিভা বিকাশের একমাত্র পস্ন্যাটফর্ম স্কাউটিং। ব্যাডেন পাওয়েলের গড়ে তোলা সংগঠনটির মাধ্যমে স্কাউট সদস্যরা যোগ্যতাসম্পন্ন বিশ্বনাগরিক হিসেবে নিজেদের বিকশিত করে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে স্কাউট আন্দোলনের সর্বস্তরে বিস্তৃতি করা এখন সময়ের দাবি। স্কাউট মূলনীতি— স্রষ্টার প্রতি কর্তব্য পালন (আধ্যাত্মিক দিক), অপরের প্রতি কর্তব্য পালন (সামাজিক দিক), নিজের প্রতি কর্তব্য পালন (ব্যক্তিগত দিক)। স্কাউট লক্ষ্যঃশেখার জন্য কাজ,উপার্জনের জন্যশেখা, বাঁচার জন্য উপার্জন,সেবা কাজের জন্য বাঁচা, স্কাউট উপাদান গুলো হচ্ছে: প্রতিজ্ঞা ও আইনের চর্চা এবং তার প্রতিফলন,হাতে কলমে শিক্ষণ ,ছোট ছোট দলের সদস্য হিসেবে কাজ করা (যেমনঃ ষষ্ঠক/উপদল পদ্ধতি) , ক্রমোন্নতিশীল ও উদ্দীপনামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম (ব্যাজ পদ্ধতি), বয়স্ক নেতার সহায়তা, প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ ,প্রতিকী কাঠামো, সামাজিক সম্পৃক্ততা তাই বলা যায় প্রতিষ্ঠিত স্কাউট আজ প্রতিটি দেশে সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। যে কোনো দুর্যোগে, অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে স্কাউট সদা প্রস্তুত নিজেদের আত্মনিয়োগ করতে। আমি মনে করি জলবায়ুর পরিবর্তন, তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার ও মাদকের সহজলভ্যতা কিশোর সন্ত্রাস বা কিশোর গ্যাং এর মতো বড় বড় চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় স্কাউটসরা গুরত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করতে পারে।

RSS
Follow by Email