ফের চলছে সড়ক দখলের পাঁয়তারা!
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নগরীতে হকার ও যানজট নিরসনে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন একাট্টা হয়ে কাজ করছে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকেই এ কাজের প্রভাব দৃশ্যমান হতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধু সড়ক, মীরজুমলা সড়ক, শায়েস্তা খাঁ সড়ক সহ বহু চিহ্নিত জায়গা থেকে হকার ও অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করা হয়। সড়ক আগের তুলনায় ফাঁকা হওয়ায় দুর্ভোগ অনেকটাই কমে আসে। দীর্ঘ সময়ের এ ভোগান্তি কমে আসায় মেয়র আইভী ও এমপি সেলিম-শামীম ভাতৃদ্বয়ের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে নগরবাসী। কিন্তু অন্যদিকে বসে নেই হকাররা।
পুনর্বাসনের দাবিতে ও তা না হলে সড়কে বসার দাবি জানিয়ে আন্দোলন করে আসছে হকাররা। জনপ্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাৎ, সড়কে বিক্ষোভ মিছিল, শহীদ মিনার দখল করে বক্তৃতা দেওয়াসহ নানান উপায়ে হকার নেতারা আন্দোলনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। যার জন্য দূর্ভোগ পোহাচ্ছে জনসাধারণ। ২২ ফেব্রুয়ারি পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে জনপ্রতিনিধিদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মারে হকার নেতারা। ঐদিন বিকেলে জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হকের সাথে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমানের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, হকারদের কোনভাবে নগরীতে বসতে দেওয়া হবে না। এতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, হকারদের কোনভাবে নগরীতে বসতে দেওয়া হবে না।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সেলিম ওসমান বলেছিলেন, ‘হকাররা আমাদের জনপ্রতিনিধিদের চ্যালেঞ্জ করেছে যেটা উচিত হয়নি। এর আগেও আমরা বলেছি হকাদের যে, তোমরা একটা তালিকা দাও, আমরা পর্যায়ক্রমে সমস্যাগুলোর সমাধান করব।’ ২৫ ফেব্রুয়ারি গণমাধমে হকারদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তালিকা জমা দেয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। তবে জনপ্রতিনিধিদের সিদ্ধান্তের তোয়াক্কা না করেই সড়ক দখলের পাঁয়তারা করছে হকাররা।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু সড়ক, শায়েস্তা খাঁ সড়ক, নবাব সিরাজউদ্দোল্লাহ সড়কে আবার বসতে শুরু করেছে হকার। সেই সাথে অবৈধ পার্কিং এর মাধ্যমেও সড়ক দখলের চেষ্টা চলছে। যার ফলে যাতয়াতের পথ সরু হচ্ছে ও যানজট বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চাষাঢ়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সকালে গেলে দেখা যায়, শহীদ মিনারের বাহিরে জুস-খাবারের অবৈধ স্টল দিয়ে ফুটপাথ দখল করা হয়েছে। চাষাঢ়া থেকে ফুটপাথ হয়ে দক্ষিণ দিকে আসতে থাকলে ফল, কাপড়, মহিলাদের ব্যবহৃত প্লাস্টিক ব্যান্ড, খাবার সাম্রগ্রির অবৈধ স্টল দিয়ে ফুটপাথ হকারদের দখলে এসে গেছে। পাশাপাশি ব্যক্তিগত ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের যানবাহন অবৈধভাবে পার্ক করে সড়ক সংকীর্ণ করে রেখেছে। একই অবস্থা দেখা যায় শায়েস্তা খাঁ ও নবাব সিরাজউদ্দোল্লাহ সড়কে। এর দরুণ ভোগান্তি বাড়তে শুরু করেছে নগরবাসীর।
ফুটপাথে হাটতে থাকা পথচারী নাফিসা বেগম বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে অনেক সহজেই ফুটপাথে চলাচল করতে পেরেছি। তবে ২-৩ দিন ধরে আবার এই হকাররা বসতে শুরু করেছে। এতে করে হাটতে বেশ সমস্যা হচ্ছে। যার ফলে বাচ্চাকে নিয়ে স্কুলে যেতে সময় লাগছে বেশি।
চাকুরিজীবী সাব্বির বলেন, ফুটপাথে হকাররা আবার বসতে শুরু করেছে। আশা করি, প্রশাসন এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।
সড়ক ফের হকারদের দখলে যাওয়ায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে নগরবাসী। তাদের বিশ্বাস, দ্রুত নগরী থেকে হকার উচ্ছেদ হবে, অবৈধ পার্কিং বন্ধ হবে এবং যানজট নিরসন হবে।