৪২ লাখ টাকা ও সার্ভেয়ার গ্রেফতারকান্ডে এসএম রানাকে জড়িয়ে সংবাদের প্রতিবাদ
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহন শাখার সার্ভেয়ার কাউছার আহমেদ গ্রেফতার ও ৪২ লাখ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় নানা গুঞ্জন চলছে। এ ঘটনায় জৈনক ‘রানা’ নামের একজনের নাম উঠে আসায় ব্যপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। তবে, স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় এসএম রানা নামের এক ব্যবসায়ীকে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় তিনি নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
৪২ লাখ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ‘ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী মোঃ জাহিদুল ইসলাম সুমন জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহন শাখার সার্ভেয়ার কাউছার আহমেদ ঢাকার বেইলী রোডের জনৈক সার্ভেয়ার ইকবালের নিকট পৌছে দেয়ার দায়িত্ব প্রদান করেন’।
এদিকে, নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ মানবাধিকার কাউন্সিল এর নারায়ণগঞ্জের সহ-সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এসএম রানা তাকে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, আমি ‘এস এম রানা’ । ওই ঘটনায় আমাকে নিয়ে মিথ্যা, বানোয়াট ও মনগড়া সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। কোন রকম যাচাই না করে এমন সংবাদ প্রকাশে আমার সম্মানহানী হয়েছে যা আইনত অপরাধ। উক্ত সংবাদের আলোকে আমি খবর নিয়ে জানতে পেরেছি, যার কাছে টাকা-পয়সা পাওয়া গেছে সেই আসামী জাহিদুল ইসলাম সুমন ও আমাকে জড়িয়ে কাল্পনিক মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। আমি সুমনকে চিনি না এবং সে আমার কোন আত্মীয় না। এহেন ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করা আইনত অপরাধ।
তিনি আরও বলেন, আমি একজন সমাজকর্মী ও মানবাধিকার কর্মী, ক্রীড়া সংগঠক, জেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটির একজন সদস্য, নারায়ণগঞ্জের এলিট ক্লাবখ্যাত ‘নারায়ণগঞ্জ ক্লাব’র সহ সভাপতি বটে। আমি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, নিয়মিত আয়কর দাতা।
এস এম রানা অভিযোগ করে জানান, একটি স্বার্থান্বেষী মহল আমার সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ অপপ্রচারে লিপ্ত। আমার মনে হয়, অপপ্রচারকারীদের প্ররোচনায় সংবাদপত্রগুলো ঘটনার সত্যতা যাচাই না করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে। এহেন সংবাদ পরিবেশনের ফলে আমার মান-সম্মান ক্ষুন্ন হচ্ছে।
তিনি বলেন, বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা আমি পছন্দ করি। সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আমার অনুরোধ, আগামীতে যে কোন সংবাদ প্রকাশের পূর্বে তথ্য যাচাই বাছাই করে সংবাদ প্রকাশ করুন। এটা আমার বিনীত অনুরোধ। আর আমার নাম ও ছবি ব্যবহার করে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের জোড় প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
উল্লেখ, এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে দুদক মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় সার্ভেয়ার কাওসার আহমেদকে। মামলার অপর আসামি সিদ্ধিরগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের প্রাক্তন আউটসোর্সিং কর্মচারী জাহিদুল ইসলাম সুমন পলাতক রয়েছেন। দুদক সূত্রে জানা যায়, গত ১০ জানুয়ারি রাত দশটার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের প্রাক্তন আউটসোর্সিং কর্মচারী জাহিদুল ইসলাম সুমন (২৮) একটি কার্টনসহ নিরাপত্তা কর্মীদের হাতে আটক হন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ওই কার্টন খুলে টাকা গুনে ৪২ লাখ টাকা পাওয়া যায়। পরে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে টাকাগুলো জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কোষাগারে জমা রাখা হয়।
জব্দ করা ৪২ লাখ টাকার সাথে দুর্নীতির সম্পৃক্ততা আছে ধারণা করে গত ১৪ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক দুর্নীতি দমন কমিশনে চিঠি দেন। পরে ১৬ জানুয়ারি দুদক তাদের জেলা কার্যালয়ে মানি লন্ডারিং, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও দন্ডবিধির কয়েকটি ধারায় একটি মামলা করে। ওই মামলায় জাহিদুল ইসলাম সুমন ও কাওসার আহমেদকে আসামি করা হয়। কাওসারকে গ্রেপ্তার ও জাহিদুল ইসলাম সুমন পলাতক রয়েছে বলে জানায় দুদক।