সোমবার, নভেম্বর ১৮, ২০২৪
Led01রাজনীতি

হকাররা কেন গার্মেন্টসে চাকরি করে না: সেলিম ওসমান

#হকাররা মিছিল বের করে পরীক্ষার্থীদের ক্ষতিগ্রস্ত করেছে
#পুনর্বাসন সেখানে হয়, যদি কাউকে ক্ষতিগ্রস্থ করি
#ফুটপাত ব্যতিত অন্য কোন জায়গা থাকলে বলা হোক

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে বর্তমানে আলোচিত ঘটনার অন্যতম একটি ‘হকার ইস্যু’। বঙ্গবন্ধু সড়কসহ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রধান সড়ক গুলো এখন প্রায় ফাঁকা বলাই চলে। কিছু কিছু স্থানে চোর-পুলিশের লুকোচুরি লক্ষ্য করা যায় হকার পুলিশের। তবে মানুষের চলাফেরা থেকে শুরু করে অনেকটা মুক্তভাবেই চলাচল করছে গণ পরিবহন গুলো। এমন শহর ব্যবস্থাপনায় প্রসংশিত হচ্ছে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী, সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান ও সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। তবে, সড়ক দখল করা হকারদের মধ্যে চলছে বিপরিত প্রতিক্রিয়া। প্রতিনিয়ত আন্দোলনের মাধ্যমে চালিয়ে যাচ্ছে সড়ক দখল করার পায়তারা।

হকারদের পরিবারের কথা চিন্তা করে দানবীর খ্যাত সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান ইতোমধ্যে তাদের সাথে আলোচনা করেছে। তিনি হকারদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু তার জন্য নারায়ণগঞ্জে হকারদের কাছে তালিকা চেয়েছে। আর সেই তালিকা অনুযায়ি মেয়র আইভী ও সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের সাথে আলোচনা করবে। কিন্তু এখনো সেই তালিকা দিতে পারেনি সিটি কর্পোরেশনের ফুটপাত দখলকারী হকাররা। বরং হকার তালিকা করার নামে অবৈধভাবে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান এসব নেতাধারী দালাল থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি জানান ‘বিশিষ্ঠ নেতাধারী কিছু দালাল আছে যারা, অতিরিক্ত অর্থ নেয়ার চেষ্টা করছে, যার ফলে বিগত ৫বছরে বার বার তারা আইডী কার্ড দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।

রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে সাথে আলাপকালে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান হকারদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে, তালিকা জমা দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

তিনি জানান, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের পরদিন আমাদের নারায়ণগঞ্জের সিটি কর্পোরেশনের হকাররা। শহীদ মিনারে বিনা অনুমতিতে, কারো অনুমতি না নিয়েই একটা সমাবেশ করে। এরপর তারা শহরের উপর একটা মিছিল বের করে। এতে আমাদের পরীক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তখনই তাদেরকে ডেকে এনে রাইফেল ক্লাবে দীর্ঘ সময় আলোচনা করি। সে আলোচনার মধ্যে আমি তাদেরকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। তাদের সংখ্যা কত? তারা আজ পর্যন্ত আমাকে সংখ্যাটা বলতে পারেনি। তারা বলেছে, ৫ বছর আগে তারা একটা লিস্ট দিয়েছিল সিটি কর্পোরেশনে কাছে। কিন্তু ৫ বছর আগে আমি, তাদের সাথে রাইফেল ক্লাবে বসেছিলাম। আমাকে লিস্ট দাও। তারা আমাকে লিস্ট দেয় নি। সিটি কর্পোরেশন কোনো অবস্থায়ই চায় না, জনগণ কষ্ট পাক। সেই সাথে আমরা সংসদ সদস্যরাও চাই না মানুষ কষ্ট পাক।

তিনি আরও বলেন, তারা পুনর্বাসনের কথা বলে। পুনর্বাসন কোথায় হয়? পুনর্বাসন সেখানে হয়, যদি কাউকে ক্ষতিগ্রস্থ করি। কেউ একটা ব্যবসা করছে, ব্যবসার ক্ষতিগ্রস্থ করলাম। সরকারই তাকে ক্ষতিপূরণ দিতে পারে। কিন্তু তারা কারো অনুমতি ছাড়া, কোনো লাইসেন্স ছাড়া রাস্তায় ফুটপাত দখল করে রয়েছে। ফুটপাত মানে হচ্ছে, যেখানে মানুষ চলাফেরা করতে পারে। মানুষ যেন দোকান-বাজার যেতে পারে, বাচ্চারা যেন নিরাপত্তার সাথে স্কুলে যেতে পারে। ফুটপাতে কোনো গাড়ি চলে না।

সেলিম ওসমান বলেন, ফুটপাত মানুষের হাঁটার জন্য সম্পূর্ন মুক্ত রাখার দরকার। এটা সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব। সিটি কর্পোরেশনের সাথে দিন-দিন হকার ইস্যু যখন বেড়েই চললো। তখন কিছু অপরাজনৈতিক ছিল, যার পরিপ্রেক্ষিতে বহিরাগতরা এই নারায়াণগঞ্জকে বেছে নিল। আমরা তাদের কাছে বার-বার বলেছি, স্থানীয়দের লিস্ট বানিয়ে দাও, যারা নারায়াণগঞ্জে বসবাস করে চলতে পারে না। নারায়াণগঞ্জ মানে কিন্তু সোনারগাঁও না, বৈদ্যেরবাজার না। নারায়াণগঞ্জ মানে হচ্ছে সিটি কর্পোরেশনের যারা বাসিন্দা।

তিনি বলেন, মানুষের অসুবিধা হয়। হকাররা বলছে যে সাধারণ মানুষেরা এখান থেকে কেনা-কাটা করতে পছন্দ করে, আমিও বলি। আমাদের নারায়াণগঞ্জে যেহেতু গার্মেন্টসের সংখ্যা অনেক বেশী বেড়ে গেছে। আমাদের বহিরাগত শ্রমিকও অনেক বেশী বেড়ে গেছে। বাহির থেকে লোক এসে যদি গার্মেন্টসে কাজ করতে পারে। তাহলে, হকাররা কেন গার্মেন্টসে চাকরি করেনা? আমি বার বার তাদেরকে বলছি তোমরা একটা অলটারনেটিভ দাও। তারা সেটা দিচ্ছেনা। এমনও বলেছি রোজার মাসে যদি তোমাদের ক্ষতি হয়, সেটার ব্যবস্থাও আমরা করব। কিন্তু, মানুষকে কষ্ট দেয়া যাবে না। তোমরাও কষ্ট পেও না, মানুষকেও কষ্ট দিও না। তাদের এই তালিকা বানানো এখন পর্যন্ত শেষ হচ্ছে না। বিভিন্ন জায়গা থেকে আমার কাছে কমপ্লেন আসছে। কোন একটি মহল তালিকায় নাম দেয়ার জন্য হকারদের ইনভেস্ট করতে হচ্ছে। আমরা বলেছিলাম ৫শ’ করে ১৫ শ’ লোকের তালিকা দাও। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত আমাদের হাতে কোনো তালিকা তুলে দিতে পারে নাই। এবং আমি তালিকা গুলি তাদেরকে ভাগ করে দিতে বলছি। আমি তাদের বার বার বলেছি, এই বঙ্গবন্ধু সড়ক বা সিটি কর্পোরেশনের যেকোনো সড়ক। যেখানে ফুটপাত আছে। ফুটপাত ব্যতিত অন্য কোন জায়গা থাকলে সেটা বলা হোক। কিন্তু তারা সেই ধরনের কিছু বলছে না।

RSS
Follow by Email