সেই টুটুলের অত্যাচারে অতিষ্ট সিদ্ধিরগঞ্জবাসী, সরকার বিরোধী কাজেও জড়িত
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: সিদ্ধিরগঞ্জে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে বিভিন্ন অপকর্মের মূল হোতা এস এম আমিনুল হক টুটুল। তার নামে স্থানীয় থানায় ও আদালতে বিভিন্ন মামলা চলমান থাকলেও বীরদর্পে এলাকায় এখনো অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে যুবদলের এই ক্যাডার। স্থানীয়দের দাবি দ্রুত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। নয়তো তার দ্বারা আক্রান্ত হবে সিদ্ধিরগঞ্জের আরও বহু পরিবার।
জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জ জুড়ে নানা অপকর্মের সাথে প্রতিনিয়তই তার নাম উঠে আসছে। বিভিন্ন ভুক্তভোগী তার অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে থানায় অভিযোগ এবং আদালতে মামলা করলেও কোন রকমের প্রতিকার পাচ্ছে না। তার বিভিন্ন অপকর্মের জন্য রয়েছে এক বিশাল সন্ত্রাস বাহিনী। যাদের নিয়ে নানান সময় সরকার বিরোধী নানান কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে এই যুবদল ক্যাডার।
তার অত্যাচারে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার মানুষজন অতিষ্ঠ বলেও জানায় অনেকে।
সম্প্রতি সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক মরহুম হুমায়ুন কবির এর পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে এস এম আমিনুল হক টুটুলের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে, এস এম টুটুল রাজনৈতিক প্রভাবে হুমায়ুন কবিরের পরিবারের সদস্যদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন প্রকার হয়রানি মুলক আচরণ করেছে। যার সতত্যা, নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েক জনের সাথে আলাপ করে পাওয়া গেছে।
জানা যায়, মরহুম হুমায়ুন কবির মৃত্যুকালে ৪জন ছেলে ও একজন মেয়ের জন্য প্রচুর সম্পত্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রেখে যান। আর তাই সিদ্ধিরগঞ্জের একটি মহল তাদের সামাজিক ভাবে হয়রানি করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। তারা সিদ্ধিরগঞ্জের সাইলো এলাকার সিরাজুল হকের স্ত্রী আমেনা বেগমকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে, মরহুম হুমায়ুন কবিরের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন।
সরেজমিনে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার এক রাজনৈতিক নেতার ভাগিনা পরিচয় দিয়ে ঘুরে বেড়ায় এস এম টুটুল। তার মা তাকে অপকর্মের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য প্রয়াত হুমায়ুন কবিরের পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করছেন।
এছাড়াও তার নামে রয়েছে বিভিন্ন মামলা। খোঁজ নিয়ে যানা যায়, এস এম টুটুলের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়। যার মামলা নং- ২৪(৪)২৩। ধারা- ১৪৩/ ৩২৩/ ৩২৬/ ৩০৭/ ৪২৭/ ৪৩৫/ ৩৭৪/ ১১৪/ ৫০৬ দ:বি: আইন। অভিযুক্ত টুটুল সিদ্ধিরগঞ্জের মহাসিন হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীর কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করায়, গত ২৩শে জানুয়ারী নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়।
এদিকে, সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকার জয়নাল ব্যপারির ছেলে মো স্বপন বাদি হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ২৬(৬)২২। ধারা- ১৪৩/ ৪৪৭/ ৩২৪/ ৩২৫/ ৩৭৯/ ৫০৬ দ:বি: আইন।
অন্যদিকে, অভিযুক্ত টুটুলের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার সাজেদা মিয়ার ছেলে মো. সাজু মিয়া গত বছরের ৬ আগস্ট স্থানীয় থানায় একটি জিডি দায়ের করেন। জিডি নং- ৩১৭।
এছাড়া, এস এম টুটুলের বিরুদ্ধে জমির জাল দলিল সৃজন করার কারণে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার আলী মর্তুজা নামের এক ব্যাক্তি নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুইটি মামলা দায়ের করেন। যার ক্রমিক নং- ২৪০/২২। ধারা- ৪০৬/ ৪২০/ ৪৬৭/ ৪৬৮/ ৪৭১/ ৫০৬(২)/ ৩৪ দ:বি: আইন। মামরা নং- ৩৬২/২২। মামলা দুটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। পাশাপাশি গত ৮ ফেব্রুয়ারী এস এম টুটুলের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন আলী মর্তুজা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিএনপির গত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ সফল করতে পুরো থানা এলাকা জুড়ে পোষ্টার লাগিয়ে রেখেছে অভিযুক্ত টুটুল। সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, বহু মামলার আসামী হয়েও নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াচ্ছে সে। জেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি গিয়াসউদ্দিনের ছত্রছায়ায় থেকে সে তার ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে চলছে। স্থানীয়রা জানান, যুবদলের এই ক্যাডার টুটুল গত ২৮ তারিখ পল্টনে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের সময় উপস্থিত ছিলো। এমন একজন শীর্ষ সন্ত্রাসীকে এলাকায় দেখতে চায়না বলেও জানান তারা।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা সুত্রে জানা যায়, তার অপকর্মের কারনে মরহুম হুমায়ুন কবির এর পরিবার গত ৩০ অক্টোবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, এর আগেও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কাছে এই এস এম আমিনুল হক টুটুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে কয়েকজন ভুক্তভোগী।