শনিবার, মে ৪, ২০২৪
Led02জেলাজুড়েসোশ্যাল মিডিয়া

সাংবাদিকদের সাথে ‘পেনশন স্কিম’অবহিতকরণ সভা করলেন ডিসি

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে জেলা প্রশাসনের সর্বজনীন পেনশন স্ক্রিম সংক্রান্ত অবহিতকরণ সভার আয়োজন করা হয়েছে। শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ওই সভার আয়োজন করা হয়। এ সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মাহমুদুল হাসান’র তত্ত্বাবধানে ওই সভা পরিচালনা করা হয়।

সভার শুরুতে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) দেদারুল ইসলাম সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ করার জন্য প্রজেক্টরে মাধ্যমে একটি সভা করেন। সেখানে সাধারণ মানুষের ভবিষ্যতে সুন্দর জীবন নিশ্চিত করতে ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম’ বুঝানো হয়। এই সর্বজনীন পেনশন স্কিম এর মধ্যে পৃথক ৪টি সুবিধায় পেনশন জমা করে সুনিশ্চিত ভবিষ্যৎ গড়ার সুবিধা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ সময় সর্বজনীন পেনশন স্কিম’র মধ্যে ‘প্রবাস স্কিম, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা’ নিয়ে পৃথক আলোচনা করা হয়।

সভায় নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মাহমুদুল হক বলেন, যারা সরকারি চাকুরি করেন না তাদের অনেকের মধ্যে খেদ ছিল যে, সরকারি চাকুরেরা পেনশন পাচ্ছেন, আমরা কেন পাই না। তাদের জন্যই সরকার পেনশন স্কিমের মতো অভাবনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। আপনি যে বেসরকারি চাকুরি করেন, ব্যবসা করেন, বিদেশে থাকেন, আপনিও সরকারি চাকুরিজীবীদের মতো বেতন বা আয়ের একটা অংশ জমা রাখতে পারেন। ৬০ বছর বয়সের পরে মানুষের কর্মক্ষমতা অনেকটা কমে যায়, তখন আপনার একাউন্টে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টাকা চলে আসবে।

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে দুই লাখ লোক টিসিবি কার্ডের আওতায় আছেন। সারাদেশে ১২৩ রকমের সামাজিক সহায়তা দেওয়া হয় জনসাধারণের মাঝে। ২০০৮ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়েছিলেন। আজকে আপনারাই সাক্ষী যে সরকারি অনেক সেবা ঘরে বসে পাওয়া যাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ স্বপ্ন নয়, বাস্তব। বয়স্ক ভাতা প্রথমে চালু হয়েছিলো ১০০ টাকা করে। তিন মাস পরপর তিনশো টাকা করে দেওয়া হতো। এটি নিয়ে হাসাহাসিও হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া জানতেন যে একদিন এটি অনেক বড় তহবিলে পরিণত হবে। সত্যিই এখন দেড় লক্ষ কোটি টাকা দেওয়া হয় সারাদেশে বয়স্ক ভাতা হিসেবে।

জেলা প্রশাসক বলেন, আমার অনেক আত্মীয় ৩০-৪০ বছর বিদেশে কাজ করে দেশে ফিরে নিঃস্ব অবস্থায় থাকেন। তাদের জন্যও এটি দারুণ এক সুযোগ। পেনশন স্কিম পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে বৃদ্ধাশ্রম থাকবে না। হয়তো কিছু কিছু থাকবে, কিন্তু জনসাধারণের আর্থিক সক্ষমতা বাড়ায় বৃদ্ধাশ্রম কমবে। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে উন্নত দেশ। আমাদের সবারই কোনো না কোনো আত্মীয় বিদেশে থাকেন। সাংবাদিকদের বলা হয় সমাজের দর্পণ। আপনারা জনগণকে তথ্যগুলো পৌঁছে দিবেন যাতে তারা উপলব্ধি করতে পারেন যে পেনশন স্কিমের আওতায় আসা দরকার। যারা ভিক্ষা করেন, যারা শ্রমিক, যারা দারিদ্র সীমার নিচে বাস করেন, তারা প্রত্যেকে আসতে পারবেন এর আওতায়। কেউ পাঁচ বছর বা দশ বছরের টাকা একবারে দিয়ে দিতে চান, তাদের জন্য সেই সুযোগও রাখা হয়েছে। সরকার কিন্তু সরকারের লাভের জন্য পেনশনের এই উদ্যোগ নেয়নি। আপনাদের নিরাপত্তার জন্যই করেছে। কেউ যদি মারা যান, তার নমিনি পেনশন পেতে থাকবেন। আমরা ২০৪১ সালে এমন বাংলাদেশ দেখতে চাই, যে দেশে রাস্তায় কোনো ভিক্ষুক থাকবে না, কোথাও অসহায় মানুষ থাকবে না। সেজন্যই এই উদ্যোগ। সরকারি চাকুরিজীবীদের স্ত্রী, সন্তানরাও এর আওতায় আসতে পারবেন। মোটকথা সর্বজনীন পেনশনের আওতায় সবাই এলে সমাজে বৃদ্ধাশ্রম ও ভিক্ষুক কমে যাবে বলে জানান তিনি।

মো. মাহমুদুল হক বলেন, অনেকেই পেনশন স্কিম নিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করছে। সরকার সঞ্চয়পত্র ও প্রাইজবন্ড পরিচালনা করে আসছে। সম্প্রতি পেনশন স্কিম কার্যক্রম চালু করেছে। এটি নিয়ে শঙ্কা বা বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দিপু, সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন, আহসান সাদিক শাওন, কোষাধ্যক্ষ আনিসুর রহমান জুয়েল, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক লুৎফুর রহমান কাকন, কার্যকরী সদস্য আবু সাউদ মাসুদ, মাহফুজুর রহমান, আব্দুস সালাম, সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান বাদুল, রুমন রেজা, সিনিয়র সাংবাদিক সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, অহিদুল হক খানসহ সাংবাদিক বৃন্দ।

RSS
Follow by Email