শ্রমমানের প্রশ্ন তুলে ইউরোপ-আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিবে না: হাতেম
লাইভ নারায়ণগঞ্জ : আমি কোনও ভাবেই মনে করি না বাংলাদেশের শ্রমমান নিয়ে প্রশ্ন তুলে আমেরিকা বা ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কোনও বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে, এমন কোনও পরিস্থিতি বাংলাদেশে নেই। আমি বলেছিলাম কোনও সুযোগ নেই। কারণ এলডিসি দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের শ্রমমান সবচেয়ে উন্নত। এছাড়াও অন্যান্য পোশাক রপ্তানিকারক যে দেশগুলো আছে, তাদের মধ্যেও আমরা বেস্ট। কারণ হচ্ছে আই এল ও কনভেনশন ‘৮৭, এটা আমেরিকা নিজেই স্বাক্ষর করে, যেটা বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষর করেন। এরপর কালেক্টিভ মার্কেটিং এর যে কনভেনশন সেটাও আমেরিকা স্বাক্ষর করে। এটায় ইন্ডিয়া, চায়না বা ভিয়েতনাম স্বাক্ষর করেনি। মানে বাংলাদেশের শ্রমমান নিয়ে প্রশ্ন করার কোনও সুযোগ নেই। বাংলাদেশের শ্রম অধিকার নিয়ে যে আইন, সেখানে স্পষ্ট করে সব বলা আছে। এরপরেও যদি রাজনৈতিক কারণে যদি কোনো নিষেধাজ্ঞা আছে, সেখানে আমাদের কিছু করার নাই। তবে সরকার সেটাকে কূতনৈতিকভাবে মোকাবেলা করবে। আমরা মালিক-শ্রমিক সরকারের সাথে ঐক্যমতের মাধ্যমে এটার মোকাবেলা করবো।
নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে আয়োজিত বৈশাখী টিভি’র ১৯ বছরে পদার্পন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাম্প্রতিক বাংলাদেশের শ্রমবাজার নিয়ে সবাইকে আশ্বস্ত করেন বিকেএমইএ-এর নির্বাহী সভাপতি ও বিশিষ্ট শিল্পপতি এম এ হাতেম। এ সময় তিনি গণমাধ্যমকে দেশের স্বার্থে সংবাদ প্রচারে উদ্বুদ্ধ করেন।
তিনি বলেন, ‘মিডিয়ার সাথে সব সময় আমার একটা অন্তরঙ্গ সম্পর্ক থাকে। প্রতিটা চ্যানেল বা পত্রিকায় প্রায়ই আমার বক্তব্য থাকে। মিডিয়ার যেকোনো বিষয়ে আমার কাছে আসলে আমি বক্তব্য দেই। এমনও হয়েছে এমারজেন্সি আমার বক্তব্য দরকার, রাস্তার গাড়ি থামিয়ে আমি ওখান থেকে বক্তব্য দিয়েছি। রেকোর্ড লাগলে আমি তখনই রেকোর্ড পাঠিয়ে দিয়েছি। এভাবেই আমি মিডিয়ার সাথে সম্পৃক্ত। একসময় আমি এমেচার ফটো জার্নালিজমের সাথে জড়িত ছিলাম। ওই সূত্রে আমি এই জগতের সাথে কানেক্টেড।’
তবে তিনি হতাশাবাদ ব্যক্ত করেন এই বলে, মাঝে মাঝে আমি দেখি, আমরা যে বক্তব্যগুলো দেই, মাঝে মাঝে মিডিয়া এমনভাবে উপস্থাপন করে, মনে হয় আমাদের বক্তব্যগুলো আমাদের উদ্দেশ্য থেকে অন্য দিকে ধাবিত হয়। কয়েকদিন আগে ঢাকার একটা প্রোগ্রামে আমি বক্তব্য দিচ্ছিলাম, আমাকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করছিলো যে আমেরিকা স্যাংশন নিয়ে আসতে পারে ইত্যাদি। আমি বললাম যে না। একটা মিডিয়া আগে পিছের সব কথা বাদ দিয়ে প্রচার করলো বলেছি, আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিলে আমাদের কিছু করার নেই। নিউজটা নেগেটিভ হয়ে গেলো। আমাকে বড় এক ইন্ডাস্ট্রির মালিক দুপুরের পর ফোন দিয়ে প্রশ্ন করলেন, আমি এটা কি বললাম, কথাটা পুরোপুরি নেগেটিভ। একটা চ্যানেলের স্ক্রল এর মধ্যে এ কথাগুলো প্রচার হচ্ছে। পরে আমি সেই গণমাধ্যমের নিউজ এডিটরকে ফোন দিয়ে এটা কারেকশন করতে বললাম যতো দ্রুত সম্ভব। পরে আরেকদিন একজন ইউটিউবে আমার বক্তব্য এমনভাবে আগে পিছে বাদ দিয়ে দেখিয়েছে, যেন সবাই জিনিসটা নেগেটিভ ভাবেই নেয়। সাংবাদিকদের এসব নিউজগুলো করার আগে কিছু জিনিস মাথায় রাখা দরকার। দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কখনো নিউজ করা উচিত না। কেউ যদি কিছু বলেও ফেলে যা দেশের বিরোধী, সেগুলো প্রচার করা উচিত না। অনেক সময় আমরা বক্তব্য দিতে গিয়ে অমনোযোগী হয়ে কিছু বলে ফেলি, সেগুলোর মূল উদ্দেশ্য বুঝে সাংবাদিকদের নিউজ করতে হবে। দেশের জন্য যে কথাগুলো প্রচার করলে ভাল, আমাদের সেটাই প্রচার করা উচিত।’
বৈশাখী টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিথি রফিকুল ইসলাম রফিকের সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র আব্দুল করিম বাবু, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দিপু, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন, প্রেক্লাবের স্থায়ী সদস্য ইউসুফ আলী এটম, ফটো জার্নালিস্ট এসাসিয়েশনের সাবেক সভাপতি শফিউদ্দিন বিটু, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাউদ মাসুদ, জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন স্মিথ, নাগরিক টিভির জেলা প্রতিনিধি ও অনলাইন পোর্টাল লাইভ নারায়ণগঞ্জ’র সম্পাদক কামাল হোসেন, সিনিয়র সাংবাদিক হাসান আলী, শরিফ সুমন, প্রেক্লাবের স্থায়ী সদস্য নাহিদ আজাদ, বন্দর ক্লাবের সভাপতি জিয়াউল হাসান জিশু, বুলবুল আহাম্মেদ সোহেল ৭১টিভি, ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মোহাম্মদ মাসুমসহ সাংবাদিকবৃন্দ।