শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪
Led02জেলাজুড়েশিক্ষাসদর

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে না.গঞ্জ হাই স্কুলে আলোচনা সভা

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ‘নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল এন্ড কলেজ’। বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে স্কুলের হল রুমে ওই সভার আয়োজন করা হয়। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্কুল কমিটির সভাপতি চন্দন শীল।

আলোচনা সভায় নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল এন্ড কলেজ অধক্ষ্য মো. মাহমুদুল হোসেন ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় স্কুলের শিক্ষক অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্কুল কমিটির সভাপতি চন্দন শীল বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি আম শ্রদ্ধা জানাই। বিশেষ করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। শ্রদ্ধা জানাই ৪ লক্ষ মা-বোনদের প্রতি যারা নিজের সন্তান হারিয়েছেন এই মুক্তিযদ্ধের জন্যে। আমাদের পূর্ব-পুরুষরা রক্তের বিনিময়ে যে দেশ স্বাধীন করেছেন, তাদের সংগ্রামী চেতনা আমাদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পৌঁছে দিতে হবে।

তিনি বলেন, দেশকে স্বাধীন করতে অনেক নেতাই নিজের জীবন উজার করেছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান। তিনি আমাদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন যে, যদি আমরা একটা স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তা হবে একটি অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। সেই রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হবে। প্রত্যেক ধর্মের মানুষ মিলে-মিশে থাকবে। তারই প্রতিফলন হয়েছে ১৯৭০ এর সাধারণ নির্বাচন। পাকিস্তানিরা টাল-বাহানা করলেও বঙ্গবন্ধু বাঙালিদের ঐক্যবদ্ধ করে ১১ দফা, ৬ দফা আন্দোলন করেন। যাতে পাকিস্তান বাধ্য হয়ে সাধারণ নির্বাচন দিয়েছিল এবং নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করে জয়লাভ করেছিল আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। কিন্তু পাকিস্তান ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি। পরবর্তীতে ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন আমরা যখন মরতে শিখেছি তখন কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবা না। রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেবো। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ। এরপর থেকেই শুরু হয় যুদ্ধ। বাঙালিদের মুক্তির প্ল্যানিং এ বঙ্গবন্ধুকে সাহায্য করেছিলেন শিক্ষক, সাংবাদিক, সাহিত্যিকসহ অনেক বুদ্ধিজীবিরা। এদের মধ্যে সুরকার-গীতিকার ছিলেন আলতাফ মাহমুদ, সাংবাদিক সিরাজুল হোসেন, ডাক্তার ফজলে রাব্বি। হার যখন নিশ্চিত তখন ওরা আমাদের বুদ্ধিজীবিদের বিভৎসভাবে হত্যা করে। চোখের ডাক্তারের চোখ উঠিয়ে ফেলা হয়, হার্টের ডাক্তারের হৃদপিন্ড ফেলা হয়। দেশকে মেধা-শূণ্য করার চেষ্টা করে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ এ স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। এই ইতিহাস আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের জানাতে হবে। বঙ্গবন্ধুর চেতনায় তাদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তবেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

চন্দন শীল বলেন, বুদ্ধিজীবিদের হত্যাযজ্ঞের পরিকল্পনাকারী ছিলেন মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলি। আরও ছিলো আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মাঈনুদ্দিন যারা লন্ডনে লুকিয়ে আছে। সরকারের কাছে দাবি আমার, তাদের দেশে ফিরে এনে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। বঙ্গবন্ধু যদি বেঁচে থাকতেন তবে এদেশ পুরো এশিয়া মহাদেশে উন্নত দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারতাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য তাকে হত্যা করা হয়েছে। এতে করে আমাদের দেশ উন্নয়নের দিক থেকে ১০০ বছর পিছিয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ কিভাবে ধারণ করতে হয় তা দেখিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তিনি দেশের উন্নয়নের জন্যে কাজ করে যাচ্ছেন। তার দীর্ঘ আয়ুর জন্যে আমি দোয়া করি। তিনি যেন আরও বেশি নির্বাচনে জয়যুক্ত হয়ে আসেন এবং দেশকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যেতে পারেন তা কামনা করি।

RSS
Follow by Email