বাজারে ইফতার সামগ্রির দাম চড়া, ক্ষুব্দ ক্রেতা
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: শুরু হযেছে পবিত্র মাহে রমজান। কিন্তু এই রমজানেই বেড়েছে ইফতারীর সামগ্রীর দাম। গতবছর তুলোনায় এ বছরের চিনি, খেজুর, সয়াবিন তেল, ছোলা থেকে শুরু করে শরবতের পাউডার পর্যন্ত বিভিন্ন সামগ্রীর দাম অধিক বেশি বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা।
সোমবার (১১ মার্চ) নগরীর দিগুবাবুর বাজার সরেজমিনে পাওয়া যায় এমন তথ্য। বাজারে প্রতি কেজি বুটের ডাল বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকা কেজি, বেসন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়, খেসারি ডাল ৪০ টাকা কেজি। পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১১০ টাকায় ও পাল্লা প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকায়, ইসবগুলের ভুসি কেজি প্রতি ২২০০ টাকায়, চিনি প্রতি কেজি ৩৮ থেকে ৪০ টাকায়, রুহআফজা বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ৪৭০ টাকায়। এছাড়াও হাতে বানানো মুড়ি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি আর মেশিনের থেকে তৈরি মুড়ি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি, চিরা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়।
এছাড়া বিভিন্ন প্রকার খেজুরও বিক্রি হচ্ছে বাজারে। বাজারে দাপাস খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা প্রতি কেজি, লুলু খেজুর পতি কেজি ৪৬০ টাকা, নাখাল খেজুর ৪০০ টাকা, গালা (বস্তা) খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, জিহাদী খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, কালমি খেজুর বিক্রি হচ্চে ৭০০ টাকায় আবার অন্য একটি জাতের কালমি খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়।
এছাড়া মরিয়ম খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১১০০ টাকায়, আজওয়া খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায়, তিনিশিয়া বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায়, ফরিদা খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায়, আম্বার বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ১৫৫০ টাকায়। এক জাতের মাব্রুম বা কামরাঙা মরিয়ম খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায় আবার অন্য জাতের মাব্রুম খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ টাকায়, ম্যাক জুয়েল নামের খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকায় এবং সাফায়ী খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা প্রতি কেজি।
ক্রেতা নাসিমা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অন্যান্য দেশে রোজার মাস আসলে দাম কমায়, আর এ এদেশে দাম বাড়ায়। এই রমজানে জিনিসের দাম যতটুকু বাড়বে ওই দামসহ সারা বছর চলবে, আবার সামনের রমজানে এর থেকেও দাম বাড়বে। আগে বাজারে ৪-৫ হাজার টাকা নিয়ে আসলে বাজার করা যেত, কিন্তু এখন পুরো মাসের রমজানের বাজার করতে গেলে ১০ হাজার টাকায় ও হয় না। সামনে কি দিন আসতেসে এক আল্লাহ জানে। আমাদের মতো মানুষ বাজারে আসলে চোখে পানি আসে। কি কিনবো, পরিবারকে কি খায়াবো?
আরেকজন ক্রেতা আরিফ হোসেন বলেন, রোজার সময় ইফতেরিতে আপেল, বেগুনী আর শরবত না পেলে মনখারাপ করে, কান্নাকাটি করে। বাজারের অবস্থা তো আমার মেয়ে বুঝবে না, বুঝলে হয়তো কান্নাকাটি করতো না। এখন একজন চাকুরিজীবীর বেতনের ৬০-৭০ শতাংশ শুধু খাবারে খরচ হচ্ছে। যত দিন যায় দাম ততো বাড়ে। এই রোজা, করোনা এগুলো বাহানা মাত্র, খবরে দেখেছি পেয়াজ গুদামে রেখে বলছে বাজারে পেয়াজ নাই। দ্বিগুণ বেড়েছে পেয়াজের দাম। একদিকে পেয়াজ গুদামে বসে পচে গেছে, অন্যদিকে মানুষ কতো কষ্ট করে কিনছে। এটা শুধু পেয়াজ না, সবকিছু এভাবেই দাম বাড়ানো হচ্ছে। এই জেলায় মাসে ৪০-৫০ হাজার টাকা না হলে পরিবার মা-বাবা নিয়ে চলা যায় না, কিন্ত কতজন মানুষ আছে যার বেতন ৫০ হাজার টাকা ?