বর্ণাঢ্য আয়োজনে শিল্পকলা একাডেমির সুবর্ণজয়নন্তী পালিত
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বাঙালি সংস্কৃতির প্রচার-প্রসার ও বিশ্বময় সম্প্রসারণের লক্ষে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশে শিল্পকলা একাডেমি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারিতে একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পেড়িয়ে যাওয়ায় দেশজুড়েই শিল্পকলা একাডেমির সুবর্ণজয়নন্তী পালিত হয়েছে। নারায়ণগঞ্জেও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সুবর্ণজয়ন্তী পালিত হয়েছে।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে আনন্দ র্যালি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা কালচারাল অফিসার রুনা লায়লার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়্যারম্যান চন্দন শীল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় গ্রুপ থ্রিয়েটার ফেডারেশনের সভাপতি উত্তম সাহা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাকিব আল রাব্বি।
শুরুতে জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণ হতে একটি আনন্দ শোভা যাত্রা বের হয়। শোভা যাত্রাটি নগরীর শায়েস্তা খাঁ সড়ক হয়ে শিল্পকলা একাডেমিতে এসে শেষ হয়। আনন্দ শোভাযাত্রায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ ও সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন। জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে আলোচনা সভার সূচনা করা হয়। সভায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে নৃত্য ও সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। আলোচনা সভা শেষে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষদের নিয়ে কেক কাটেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চন্দন শীল বলেন, বাঙালি জাতি পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি। মেধা, যোগ্যতা সব দিক দিয়েই সেরা আমরা। কিন্তু আমাদেরকে দাবিয়ে রাখা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন, আমাদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা দরকার, পাকিস্তানিদের থাবা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। আমাদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হলে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ হবে। একটা সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হবে যেখানে কোন ভেদাভেদ থাকবে না। মানুষের মৌলিক অধিকার রাষ্ট্র নিশ্চিত করবে। তিনি স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন যে, আমাদের রাষ্ট্র হবে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র। যেখানে সব ধর্মের মানুষ মিলে মিলে বসবাস করবে। বাঙালি জাতি সংস্কৃতির দিক দিয়ে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট ও সমৃদ্ধশালী। তা আরও সমৃদ্ধশালী করতে ও পুরো বিশ্বে আমাদের সংস্কৃতি তুলে ধরতে ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালে কিছু কুলাঙ্গার জাতির জনককে হত্যা করে। তার হত্যার কারণে আমরা আরও ১০০ বছর পিছিয়ে গিয়েছি। যে ট্রেন টাকে লাইনচুত্য করা হয়েছিল, ১৯৭৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা এসে তা লাইনে এনে ছিলেন। আবার ২০০১ সালে ষড়যন্ত্রের কারণে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতা চূত্য করা হয়। যদি এমনটি না হত, তাহলে আমরা বেশ কিছু বছর এগিয়ে থাকতাম। তার প্রমাণ বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার। নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি জেলায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার কারণে আজকে নারায়ণগঞ্জে শিল্পিরা একত্র হতে পারছেন। এতে করে শিল্পিরা সাংস্কৃতিক চর্চা করতে পারছেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. সাকিব আল রাব্বি বলেন, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সাথে জড়িত রয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীণতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম। তার হাত ধরেই শিল্পকলা একাডেমির যাত্রা শুরু। আমাদের সংস্কৃতি হারিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে বাঙালি সংস্কৃতি সম্পর্কে আরও জানতে হবে এবং তা চর্চা করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, বাঙালি জাতির সংস্কৃতি চর্চায় শিল্পকলা একাডেমি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।