রবিবার, মে ৫, ২০২৪
Led03জেলাজুড়েফতুল্লারাজনীতি

নির্বাচন পরবর্তী সেলিম ওসমানের সাথে জনপ্রতিনিধিদের মিলন-মেলা

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় জনপ্রতিনিধি ও নেতাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সেলিম ওসমান। শনিবার (২০ জানুয়ারি) ফতুল্লায় উইজডম অ্যাটায়ারস লিমিটেড ফ্যাক্টরীতে ওই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও নিহত পরিবারের সদস্যদের মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়। এছাড়া প্রাধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনায় বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়।

শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে সেলিম ওসমান বলেন,নির্বাচনের দিন ফুটপাতে দোকানগুলো খোলা থাকে। মানুষ বেচাকেনা নিয়ে আনন্দ করে। কিন্তু এবার ফুটপাতের দোকানগুলো খোলা ছিল না সবগুলো বন্ধ ছিল। তা এই কারণেই হয়তো ভোট পার্সেন্টেজ কম হয়েছে। কিন্তু একটা দল মনে করে তাদের ডাকেই জনগণ ভোট দিতে আসেনি। পৃথিবীর এমন কোন দেশ নেই যেখানে ৩০ পার্সেন্ট এর ওপরে ভোট হয়। আলহামদুলিল্লাহ আমাদের এখানে ৪০ শতাংশ ভোট হয়েছে । ঢাকার দিকে ২৭ পার্সেন্ট উপরে ভোট কাস্ট হয়নি। ঢাকার অনেক মানুষ নির্বাচনের ছুটি পেয়েছে চলে গিয়েছে। যাইহোক আমরা যারা জয়ী হয়েছি বা জনপ্রতিনিধি আছেন বা যারা সমাজের উন্নয়ন চান তারা সবাই শান্তিপূর্ন ভাবে কাজ করেন।

তিনি বলেন, প্রতি নির্বাচনে আমাদের মাঝখানে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়, সেটা হোক প্রতি পাঁচ বছর পর সংসদ নির্বাচন বা উপজেলা নির্বাচনে। সে ক্ষেত্রে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। আমরা কোন প্রতিযোগিতায় যাবো না। নির্বাচনের আগে এবং পরে আমি মেয়রের সাথে কথা বলেছি আমরা ইউনিয়নকে একটা পর্যায়ে নিয়ে আসতে পেরেছি। নারায়ণগঞ্জের মানুষের একটি আক্ষেপ হলো গ্যাস নেই। আমরা গ্যাস আনবো কোথা থেকে আমরা তো ব্যবসায়ী। এখন বর্তমানে যে পরিমাণ গ্যাস আছে তাতে কোনো ভাবে হয়তো ভাত রান্না করা যাবে কিন্তু আমাদের কারখানা তো চলবে না। বিকেএমইএ এর সভাপতি হওয়ায় এই নিয়ে অনেক প্রেশারে আছি । চিন্তা করছে একটি বাইপাস গ্যাসলাইন নিয়ে মানুষের আপাতত সংকট দূর করার। গ্যাস থাকলে নারায়ণগঞ্জ এর ব্যবসা বাণিজ্য ঠিক থাকবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা পূর্বের নির্বাচনের কথা মনে না রাখি। আসুন সবাই সবাই শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করি। আমাদের নিজেদের মাঝখানে কোন প্রতিযোগিতা না আসুক। আমি চেয়ারম্যানের অনুরোধ করছি, আপনাদের হাতে তিনটা বছর সময় আছে। এই তিনটা বছর কাজ করেন। আমিও পূর্বে যা করেছি সেগুলোর জন্য আরও কিছু কাজ বাকি আছে। সেগুলো আমাকে করতে হবে যদি না করতে পারি তাহলে সব কাজগুলো শূন্য হয়ে যাবে। আমরা মাছে ভাতে বাঙালি। বাঙালির কাছে চালের দাম এবং মাছের দাম ঠিক থাকলে আমরা ভালো আছি এবং আমাদের সরকার ভালো। চালের দাম মাছের দাম ঠিক না থাকলেই সরকার ভালো না। আমি চাই নারায়ণগঞ্জের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে থাকবে। যাই করি না কেন আলোচনা সাপেক্ষে করবো। সড়কের ফুটপাতে দোকান থাকবে কিন্তু ফুটপাথ থেকে দোকানগুলো রাস্তায় কখনো যাবে না।

এমপি সেলিম ওসমান বলেন, আগামীতে রমজান মাস, রমজান উপলক্ষে আমাদের মাঝখানে যেন কোন ঝামেলা বা ভুল বোঝাবুঝি না হয়। কারণ শত্রু শত্রুকে ধ্বংস করার জন্য দুইটা কাজ করে। প্রথম হয় আরেকটা বিয়ে করিয়ে দেয়, নয়তো নির্বাচনে দাড় করিয়ে দেয়। এটা একটা নেশা। আমার জন্য দোয়া করবেন আগামীকাল আমি ওমরা হজ্জ্ব করতে যাচ্ছি। নির্বাচনের আগে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু যেতে পারিনি। যেহেতু আমি যেতে পারি না আমি ১০ জন মাওলানা কে পাঠিয়েছে। মনে রাখবেন নির্বাচনে আপনি বা আমি জয়ী হয়নি, নির্বাচনে আমরা জয় হয়েছি।

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন জায়গায় বিরোধী দলে অনেক ধরনের ডিস্টার্ব করে কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ আমার এলাকায় বিএনপি কোন ধরনের ডিস্টার্ব করেনি তারা উল্টো আমাকে সহযোগিতা করেছে। কাউন্সিলর, মেম্বার ও চেয়ারম্যান যারা আছেন তাদের সবাইকে বলতে চাই প্রতিযোগিতায় যাবেন না খবরদার। ওমরা করতে যে ১০ জনকে পাঠিয়েছে তাদের বলেছি আমাদের দুই ভাইয়ের জন্য দোয়া করতে। কিন্তু আমি আর একটা দোয়া পড়তে বলেছি যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার যেন আবার আসে। আমি চাইলে পারতাম আমাদের দলীয় জয়ের জন্য দোয়া করতে। কিন্তু আমি তার কথা না বলে শেখ হাসিনার জয়ের কথা দোয়া করতে বলেছি। কারণ উনি সরকারের হিসেবে থেকে দেশকে যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, তা অন্য কেউ পারবেনা। প্রধানমন্ত্রী যেন সুস্থ থাকেন সেই দোয়াই করেছি।

তিনি বলেন, পাগলা সড়ক একটা বড় প্রশস্ত রাস্তা। কিন্তু সিএনজি স্ট্যান্ড ও বিভিন্ন দোকানগুলোর কারনে প্রশস্ত রাস্তাটা সরু হযে যাচ্ছে। আমরা এ বিষযে আলোচনায় বসবো যাতে ২০০ বা ৪০০ লোকের জন্য সারা নারায়ণগঞ্জের মানুষকে ভোগান্তীতে পরতে না হয় সে ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবো। কারণ চলাচলের রাস্তা ঠিক থাকলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও স্বাস্থ্য ঠিক থাকবে । নির্বাচন আসলে আমাদের মধ্যে শত্রুতা হয়। এবার আল্লাহর রহমতে আশাকরি কোন ঝামেলা হবে না। আমরা যেন সবাই শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করতে পারি। দরকার পরলে নির্বাচনই হবে না। আমাদের নতুন নেতৃত্বকে সুযোগ দিতে হবে। হয়তো খুব তাড়াতাড়ি ঘোষনা করে দেবো যে আমার জায়গায় যদি কেউ নির্বাচন করতে চাও তাহলে আজকে থেকে আমার সাথে কাজ করা শুরু করো। হয়তো তিন চারজন আসবেন তবে তাদের মধ্যে যে ভালো কাজ করবেন তিনিই নির্বাচিত হবেন। আপনাদের নেতাদের পিছনে অনেক নেতাকর্মীরা ছিল যারা এই নির্বাচনকে স্বার্থক করেছে আমার তাদের লিস্ট দরকার। যারা যারা কাজ করছে তাদের নিয়ে আমরা বসবো। প্রয়োজনে আমরা প্রবেশ কার্ড বানিয়ে তাদেরকে আমন্ত্রণ করব। সে নেতা কর্মীরা হতে পারে জাতীয় পার্টি বিএনপি বা আওয়ামী লীগের লোক। আমরা তাদেরকে সম্মানিত করবো।

শুভেচ্ছা বিনিময়কালে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল বলেন, আজকের এই আয়োজনে সেলিম ভাইকে ধন্যবাদ জানাই। এছাড়া ৩য় বারের মতো সংসদ সদস্য হয়ে হ্যাট্রিক করায় সেলিম ভাইকে অভিনন্দন জানাই। তিনি আমাদের অভিভাবক, সেলিম ভাই চায় সবাইকে নিয়ে কাজ করতে তাহলে আমরা মিলে মিশে কাজ সম্পন্ন করতে পারবো। আমরা সেলিম ভাইয়ের নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আমার অভিভাবক সেলিম ভাই আছেন শামীম ওসমান ভাই আছে। যখন যেখানে কাজ করতে বলবে আমরা কাজ করবো। আগেও বলেছি এখনো বলছি, আমাদের জেলা পরিষদ থেকে যা যা করনীয় তাই করবো। এখানে কাজের নামে কোন অকাজ হবে না। আপনারা জানেন আমাদের অবস্থাটা, প্রকল্পের নামে কাজ করার নামে কোন কুচক্রিভাবে টাকা চুড়ি হবে না। জনগণের কাজ জনগণের দৌড় গোড়ায় পৌছে দিবো আপনাদের পরামর্শ নিয়ে।

বন্দন উপজেলার চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ রশীদ বলেন, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমানকে অভিনন্দন জানাই। অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মানুষ যেভাবে ভোট দিয়েছিন তাতে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। চেয়ারম্যান মেম্বারদের যে তৃণমূল থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে এটা আসলেই প্রশংসনীয়। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের উন্নয়ন সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। দলমত নির্বিশেষে আমাদের বন্দরে উন্নয়ন হয়েছে।

সেলিম ওসমানের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, বন্দন উপজেলার চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ রশীদ, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সানাউল্লাহ সানু, বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহম্মেদ, মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাকসুদ হোসেন, ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন, মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী এম এ সালাম, আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন, গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজর আলী ও বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড মেম্বারবৃন্দ।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না, ১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল করিম বাবু, ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা, ২৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফজাল হোসেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিএম আরমান, সহ সভাপতি রবিউল হোসেন, যুব ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির মৃধা, বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিমউদ্দিন প্রধান, ১২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নিয়াজুল ইসলাম খান, ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, ১১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দিন, আওআমী লীগ নেতা নাসির উদ্দিন প্রমুখ।

RSS
Follow by Email