শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪
জেলাজুড়েরাজনীতিসদর

না.গঞ্জে বাম জোটের কালো পতাকার মানববন্ধন

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ভোট ডাকাতির ৫ বছরে কালো দিবস উপলক্ষে কালো পতাকা হাতে মানববন্ধন ও শহরে মিছিল করে বাম গণতান্ত্রিক জোট। শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকাল ৪ টায় প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় জেলার বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক হাফিজুল ইসলামের সভাপতিত্তে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবত্তী, জেলা বাসদের সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, বাসদ নেতা সেলিম মাহমুদ, এস এম কাদির, সিপিবি নেতা আব্দুল হাই শরীফ, দুলাল সাহা।

বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৪ সালে বিনাভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, ২০১৮ সালে নিশি ভোটে এবং আগামী ৭ জানুয়ারি’২৪ একতরফা ‘ডামি’ নির্বাচন করে ক্ষমতা দখলে রাখতে তৎপর রয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ অতীত অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় না। ফলে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল। গণদাবি উপেক্ষা করে সরকার তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন দিয়ে একতরফা নির্বাচনী তামাশা আয়োজন করতে গিয়ে লেজেগোবরে অবস্থা করে ফেলেছে। এই নির্বাচন যে নির্লজ্জ প্রহসন তা ভোটের প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়া দেখলেই দিনের আলোর মত পরিষ্কার হয়ে যায়। একদিকে আওয়ামী নৌকার প্রার্থী, স্বতন্ত্র প্রার্থী, ডামি প্রার্থী, ১৪ দলের উচ্ছিষ্ট ভোগী শরীকদের প্রার্থী, সুবিধাভোগী জাতীয় পার্টির লাঙ্গলের প্রার্থী সবাইকেই গণভবন থেকে শেখ হাসিনা মনেনয়ন দিয়েছে। আওয়ামী সরকার কর্তৃক প্রশাসন ও আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনীর দলীয়করণ যে সকল সীমা লংঘন করেছে তা এখন কাজী জাফর উল্লার মত সরকারদলীয় নেতাদেরও অনেকেই বলতে বাধ্য হচ্ছেন। আওয়ামীলীগ যে বর্তমানে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী, ব্যাংক ডাকাত, ঋণখেলাপী, অর্থ পাচারকারীদের পাহাড়াদার দল এবং পার্লামেন্ট কোটিপতিদের ক্লাবে পরিণত করেছ তা মন্ত্রী এমপিদের এবং সরকার দলীয় প্রার্থীদের হলফনামায় দেয়া সম্পদ বৃদ্ধির বিবরণী দেখলেই পরিস্কার বুঝা যায়। তাছাড়াও এবারে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে ৮৭% কোটিপতি রয়েছে। পাতানো নির্বাচনের সংসদে এই কোটিপতি প্রার্থীরা যে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট, লুটপাটকারী, পাচারকারীদের স্বার্থ রক্ষা করবে তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি যে ইলেকশন না হয়ে সিলেকশন হচ্ছে তা দেশবাসী ইতিমধ্যে বুঝে গিয়েছে। তারপরও আওয়ামীলীগ যে কথিত নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে সেখানে যে ১১টি বিষয়ে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলা হয়েছে তা খুবই হাস্যকর। ১ নং এ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে যা এতটাই অবিশ্বাস্য যে বর্তমান খাদ্যমন্ত্রীর হলফনামায় দেখা গেছে তার সম্পদ বেড়েছে আড়াই হাজার গুন। তাহলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করবেটা কে। এ যেন বেড়ায় ক্ষেত খাওয়ার মত অবস্থা। আওয়ামী লীগের প্রহসনের নির্বাচনে প্রতারনার ইশতেহারে ১১ নং এ বলা হয়েছে দুর্নীতি বন্ধ করবে, তার নমুনা দেখা যায় টিআইবি প্রকাশিত ও সমকাল পত্রিকার সংবাদে সরকারের একজন মন্ত্রী তার হলফনামায় আড়াই হাজার কোটি টাকা যুক্তরাজ্যে বিনিয়োগের বিষয়টি গোপন করেছে। এর পরও ঐ মন্ত্রীর মন্ত্রিত্ব কিংবা প্রার্থীতা বাতিল হয়নি। এ থেকে আওয়ামীলীগের দুর্নীতি ও পাচার রোধের অঙ্গীকারের অসারতা দেশবাসীর কাছে পরিষ্কার। বিরোধী দলহীন এই একতরফা নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক দেখানোর অপচেষ্টা হিসেবেই যে এই ‘আমি আর ডামি‘ নির্বাচনী তামাসা তা দেশবাসী ধরে ফেলেছে। ফলে ভোটের মাঠে জনগণের কোন অংশগ্রহণ নাই। সরকার চালাকি করে জনগণকে ধোকা দিতে গিয়ে এখন নিজেরাই নিজেদের ফাঁদে পড়েছে। যার প্রকাশ ঘটছে সারাদেশে নৌকা আর স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে মারা মারি খুনাখুনি। একতরফা নির্বাচন করতে গিয়ে সরকার দেশকে এক ভয়ংকর সংকটে ঠেলে দিচ্ছে। এই নির্বাচন বন্ধ করে সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন অন্যথায় দেশ এক ভয়ানক রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকটে নিপতিত হবে।

বক্তারা আগামী ৭ জানুয়ারির একতরফা প্রহসনের নির্বাচন বর্জন ও রুখে দাঁড়ানোর জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

RSS
Follow by Email