শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪
Led05বিশেষ প্রতিবেদনরাজনীতি

নানা শঙ্কায় নিচ্ছে প্রস্তুতি, চমক দেখাবে না.গঞ্জ বিএনপি

#সরকারের ব্যর্থতা ও দেশের পরিস্থিতির তুলে ধরবো: গিয়াস উদ্দিন
# যদি বাধা আসে মোকাবেলা করবো: মামুন মাহমুদ
# লোক ভাড়া করে সমাবেশ করি না: গোলাম ফারুক খোকন
#বিএনপি হুমকি-ধমকি পাত্তা দেয় না: এড. সাখাওয়াত
#আওয়ামী লীগের তো স্বভাব খারাপ: এড. টিপু

নিরাক হাসান, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: এবার সরকার হটানোর ‘এক দফা’ দাবিতে ১৫ দিনের গুচ্ছ কর্মসূচি নিয়েছে বিএনপি। কেন্দ্রীয় ওই গুচ্ছ কর্মসূচিতে যেমন নানামাত্রিক সমাবেশ থাকবে, তেমনি একাধিক রোডমার্চের কর্মসূচিও থাকবে বলে জানা গেছে। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে সেই কর্মসূচি শুরু হয়ে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। তারাই ধারবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জে নেতাকর্মীদের কাছে সমাবেশ করার নির্দেশনা আসছে।


নারায়ণগঞ্জ বিএনপিও সেই সমাবেশ ব্যাপক আকারে করতে চায়। বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) নারায়ণগঞ্জ জেলা পাসপোর্ট অফিসের সামনে ওই সমাবেশ করতে চাচ্ছে জেলা বিএনপি। তথ্যটি লাইভ নারায়ণগঞ্জকে নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন।

নারায়ণগঞ্জ বিএনপির শীর্ষনেতারা জানান, আগামী ১৫ দিনের জন্য নেওয়া এই ধাপের কর্মসূচিগুলো শান্তিপূর্ণভাবে করতে চায় বিএনপি। কর্মসূচিগুলোতে ব্যাপক জনসমাবেশ ঘটিয়ে সরকারকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার চূড়ান্ত ‘বার্তা’ দেওয়া হবে। এর পরেও সরকার শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে না গেলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। তেমন কোন আশঙ্কা করছি না, তবে একটা রাজনৈতিক দল যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকে।

জান যায়, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঘোষণা করা হতে পারে এমনই পূর্বাভাস দিয়ে আসছে নির্বাচন কমিশন। ভোটের তফসিলের আগে অক্টোবর মাসে আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিতে চায় বিএনপি। এমন চিন্তা থেকে দলটি ১৫ দিনের কর্মসূচি শুরু করবে এ সপ্তাহে। এই কর্মসূচি শেষ হলে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই আবার টানা নতুন কর্মসূচি দিতে পারে দলটি। আগামী মঙ্গলবার ঢাকার কেরানীগঞ্জে বড় সমাবেশের মধ্য দিয়ে এই ধাপের কর্মসূচির সূচনা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে নারায়ণগঞ্জে বুধবার সমাবেশ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর ফাঁকে ফাঁকে দেশের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে চারটি রোডমার্চ কর্মসূচি করা হতে পারে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি সভাপতি ও সাবেক সংসদ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, এবার বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা নারায়ণগঞ্জসহ রাজধানীতে বড় সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে জেলা বিএনপি পক্ষ থেকে সমাবেশ করতে হবে। আমরা খুব শীঘ্রই সকল নেতাকর্মীদের আলোচনা করে এর প্রস্তুতি নিবো। আমরা নারায়ণগঞ্জ বিএনপি যেভাবে কর্মসূচি গুলো করছি, একেবারেই শান্তিপূর্ণভাবে। সামনেও শান্তিপূর্ণবাবে সমাবেশ করবো। আমাদের সমাবেশে সরকারের ব্যর্থতা ও বর্তমান দেশের পরিস্থিতির কথা তুলে ধরবো। জনগনের সাথে আমাদের আন্দোলনে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করবো। আমরা আশা করি রাজনৈতিক ভাবে আমাদের কর্মসূচি গুলোতে কেউ কোন আঘাত করবে না। প্রশাসনও আমাদের সহযোগীতা করবে, যেহেতু আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করবো।

তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জে কেউ কেউ হুমকি ধমকি দিয়ে কথা বলছে। ‘২৪ ঘন্টায় নারায়ণগঞ্জ থেকে বিদায় করে দিবে, কাশি দিয়ে সব খালি করে দিবে’। এসব কথা বলছে যেহেতু, তাই সমাবেশকে গিরে একটা আশংকা তো থাকবেই। আমরা আমাদের কর্মসূচি পালন করবো, এটা তো আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। আমরা প্রশাসনের সহযোগীতা চাই, হুমকি ধমকি দিচ্ছে যারা, তারা যাতে কোন ভাবেই এমন কিছু না ঘটিয়ে শান্তির্পূণ রাজনীতিটা করে।

গিয়াসউদ্দিন বলেন, আমরা বরাবরই রাজনীতি করে আসছি নির্যাতন-নিপিড়ন সহ্য করে, মামলা-হামলা ও গুম-হত্যা মোকাবেলা করেই রাজনীতি করছি। কারো হুমকি ধমকিতে বিএনপি নেতাকর্মীরা ভীত না। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে এমন ভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে যে, তারা একটা অস্বাভাবিক অবস্থা সৃষ্টি করার জন্য, তারা এলাকায় থাকতে দিবে না, রাস্তায় নামতে দিবে না। এমন কথাতে কিছুটা আশঙ্কা করি।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচী নারায়ণগঞ্জে যথাযথ সফল হবে বলে মন্তব্য করে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে যে কর্মসূচি হবে সেটা শতভাগ সফল করবো আমরা। কারণ নারায়ণগঞ্জ বিএনপি খুবই শক্তিশালী। যেহেতু এই দেশে গণতান্ত্রিত চর্চা করার সুযোগ রয়েছে, সেক্ষেত্রে আমাদের কর্মসূচিকে কোন বাধা আসবে না। আর যদি পরিস্থিতি ভিত্তি করে বাধা আসে তাহলে সেটাকে বিবেচনা করেই মোকাবেলা করবো।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, আমরা সমাবেশ করলে টাকা দিয়ে লোক ভাড়া করে বা গার্মেন্টস বন্ধ করে শ্রমিক দিয়ে সমাবেশ করি না। আমাদের নেতাকর্মীরা দলকে ভালোবেসেই তারা সমাবেশে আসে। তবুও আমরা জায়গা দিতে পারি না মানুষের।

নারায়নগঞ্জ মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, নারায়ণগঞ্জ হলো সকল আন্দোলন কর্মসূচির সূতিকাগার। রাজনীতির ইতিহাসে নারায়ণগঞ্জ সব সময় অন্যতম ভূমিকা পালন করেছে। আমরা জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করছি। এই সরকারের অধিনে বাংলাদেশে কোন নির্বাচন সুষ্ঠ হবে না, এটা সবাই বুঝে গেছে। তাই মানুষের ভোটের অধিকার আদায় করতে সবাই এখন প্রস্তুত। আমরা সব সময় শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের কর্মসূচি পালন করতে চাই। আমাদের কর্মসূচি গুলোতে সরকার দলের ও প্রশাসনের দ্বারা বাধাগ্রস্থ হই। নারায়ণগঞ্জে অবৈধ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন বিরোধী দল নিয়ে। হুমকি ধমকি দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের মানুষ এগুলো শুনে অভ্যস্ত। বিএনপি এসব হুমকি ধমকি পাত্তা দেয় না। হুমকি ধমকি উপেক্ষা করেই আমরা আমাদের কর্মসূচি পালন করবো।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব এড. মো. আবু আল ইউসুফ খান টিপু লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, কেন্দ্রের যে কোন কর্মসূচি পালন করতে আমরা সব সময় প্রস্তুত। নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি সব সময় শক্তিশালী। আমাদের নেতা তারেক রহমান যে কোন কর্মসূচি ঘোষণা দিবে আমরা সদা প্রস্তুত আছি। সরকারে পায়ের নিচে যেহেতু মাটি নাই, তারা আমাদের কর্মসূচিতে যেকোন ধরণের ঘটনা ঘটাতে পারে। আমরাও সেটা প্রতিরোধ করার জন্য প্রস্তুত আছি। আওয়ামী লীগের তো স্বভাব খারাপ, তারা আমাদের প্রোগ্রাম সফল না করার জন্য পুলিশ দিয়ে, তাদের নেতাকর্মী দিয়ে হামলা-মামলা দেয়। রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়ে মোকাবেলা করা উচিৎ, কিন্তু আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী দিয়ে মোকাবেলা করতে চায়।

RSS
Follow by Email