সোমবার, মে ৬, ২০২৪
Led04বন্দর

নবীগঞ্জ গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত সুনামের সহিত শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চলমান রাখায় ইতিমধ্যে জেলার অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে নবীগঞ্জ গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ। বিদ্যালয়টির নিজস্ব জায়গা না থাকায় সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান তার নিজস্ব অর্থায়নে প্রতিষ্ঠানটির জন্য জমি ক্রয় করেন। পরে তার নিজস্ব অর্থায়নেই ওই জমিতে একটি বিশালাকার ৩ তলা নতুন ভবন নির্মাণ করে দেন। এরপর সরকারিভাবে আরও একটি ৬ তলা ভবনেরও ব্যবস্থা করে দেন এই সংসদ সদস্য। যা সম্প্রতি, তিনি উদ্বোধনও করেন।

বিদ্যালয়টির উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি কুচক্রী মহল প্রতিষ্ঠানটির সুনাম নষ্ট করার অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিলো। তারই ধারাবাহিকতায় এবার প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক সায়মা খানমের বিরুদ্ধে দশম শ্রেনীর অর্ধশত শিক্ষার্থীকে প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেয়ার মিথ্যা অভিযোগ ছড়িয়ে দেয় ঐ কুচক্রী মহল। তবে, এ অভিযোগকে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারী, অভিভাবক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও স্থানীয় এলাকাবাসী।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, আগামী বছর নবীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ থেকে ১৯৮ জন শিক্ষার্থী এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশ নিবে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিষ্ঠানটিতে চলছে দশম শ্রেনীর প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষা। দেশের প্রচলিত নিয়ম অনুয়ায়ী প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষা শুরুর পূর্বে শিক্ষার্থীদেরকে তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে বলা হয়েছিলো প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে। তবে, নির্ধারিত সময় পার হয়ে ৯ নম্বর পরীক্ষা চলাকালীন সময়েও শিক্ষার্থীদের অনেকেই তাদের বেতন ও পরীক্ষার ফি জমা দেয়নি। এতে করে, দায়িত্বরত শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদেরকে বেতন ও ফি পরিশোধ কেন করেনি তা জানতে চায় এবং বলে প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিয়ে পরীক্ষা দাও।

এসময় বেতন পরিশোধ না করা শিক্ষার্থীদের অনেকে প্রধান শিক্ষকের রুমে তার সাথে দেখা করতে যায়। তবে, প্রধান শিক্ষক জরুরী কাজে ব্যস্ত থাকায় শিক্ষার্থীদেরকে প্রবেশে বাধা দিয়ে দায়িত্বরত পিয়ন বলে, ম্যাডাম এখন ব্যস্ত আছে তোমরা একটু পরে আসো। কয়েকজন শিক্ষার্থী এসময় পরীক্ষা না দিয়েই চলে যায়। স্কুলের নিয়ম অনুযায়ী, ছুটি না হলে বা পরীক্ষার সময় শেষ না হলে বিদ্যালয়ের মূল ফটক তথা গেইট খোলার কথা না। কিন্তু রহস্যজনক কারণে গেইট খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের কয়েকজনকে বিদ্যালয়ের বাইরে চলে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়।

এদিকে, বিদ্যালয় সুত্রে জানা যায়, গত ২মাস যাবৎ প্রতিষ্ঠানটিতে ফান্ড সংকট থাকায় শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোনো বেতন-ভাতা পাচ্ছে না। এতে করে অনেকটা মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। মূলত এ কারণেই শিক্ষার্থীদেরকে তাদের বকেয়া বেতন ও পাওনা জমা দেয়ার তাগিদ দেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এর কিছুক্ষণ পরই হৈ-চৈ শুনতে পেয়ে বাইরে বের হয়ে আসেন প্রধান শিক্ষক। এসময় অভিভাবকদের তিনি তার রুমে ডেকে নিয়ে আসেন এবং জানতে পারেন যে, কয়েকজন শিক্ষার্থী পরীক্ষা না দিয়েই বাড়ি চলে গেছে। দায়িত্বরত শিক্ষকদের ডেকে প্রধান শিক্ষক জানতে চান, কেন পরীক্ষা না দিয়ে শিক্ষার্থীরা বের হলো এবং কিভাবেই বা তারা প্রতিষ্ঠানের বাইরে গেলো। একইসাথে শিক্ষার্থীদেরকে দ্রুত সময়ের মধ্যে পুনরায় পরীক্ষার হলে এসে পরীক্ষায় অংশ নিতে বললে অভিভাবকরা খুশী হয়ে চলে যান।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক সায়মা খানম জানান, স্কুল থেকে অপমান করে কোনো শিক্ষার্থীকে বের করে দেয়া হয়নি। সকল শিক্ষার্থীই পরীক্ষা দিয়েছে। শিক্ষকরা বেতনের কথা জানতে চেয়েছে ঠিক, তবে কোচিং ফি’র কোনো কথা বলেনি তারা।

তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট করতে ও প্রধান শিক্ষকের বদনাম করার জন্য একটি মহল পরিকল্পিতভাবে এই কাজটি করেছে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী (টেস্ট) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত এস.এস.সি পরীক্ষার ফি স্কুল এন্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ আগেই শিক্ষাবোর্ড বরারর পরিশোধ করে দেয়। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তা নেয়া হয়।

অপর, একটি সুত্র জানায়, বিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট করতে এবং প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের লক্ষ্যে একটি মহল দীর্ঘ সময় ধরে নানামুখী ষড়যন্ত্র করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে, সেখানে দেখা গেছে বিদ্যালয়েরই ম্যানেজিং কমিটির একজন সদস্য নিজেই ভিডিও ধারণ করছেন এবং অভিভাবকদের নানা প্রশ্ন করছেন। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ঘটনার সময়ে ম্যানেজিং কমিটির একজন নারী সদস্যও অভিভাবকদের সাথে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, উপস্থিত অভিভাবকদের অনেকে জানান, মূলত ম্যানেজিং কমিটির ঐ সদস্যই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে অভিভাবকদের প্রথমে উস্কানী দেন এবং পরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে তিনি সেই ভিডিও ধারণ করেন।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির একজন সদস্য জানান, বিদ্যালয়ে কোনো সমস্যা হলে তা সমাধানের চেষ্টা করার দায়িত্ব ম্যানেজিং কমিটির উপরই বর্তায়। কিন্তু ভিডিও ধারণ করা ম্যানেজিং কমিটির ঐ সদস্য সমস্যা সমাধানের চেষ্টা না করে উল্টো পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করে। স্কুলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বন্ধে এবং এর সুনাম রক্ষার্থে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাকালীণ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান এমপির দ্রæত হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

RSS
Follow by Email