নগরীতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের বিক্ষোভ
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বিদ্যুৎ,গ্যাসসহ জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল ও বিদ্যুৎ, জ্বালানি খাতে দুনীর্তির সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করে জেলা বাম গণতান্ত্রিক জোট। শনিবার (২ মার্চ) বিকাল ৪ টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় জেলা বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক হাফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবত্তীর্. বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, সিপিবি নেতা বিমল কান্তি দাস, আব্দুল হাই শরীফ, বাসদ নেতা সেলিম মাহমুদ, সুলতানা আক্তার।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম গড়ে ৭০ পয়সা বৃদ্ধি করেছে। ২৯ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করলেও দাম ১ ফেব্রুয়ারি থেকে গ্রাহকদের বাড়তি দাম দিতে হবে। দাম সমন্বয়ের নামে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি জনজীবনে চরম ভোগান্তি নিয়ে আসবে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সাল থেকে সমন্বয়ের নামে গ্রাহক পর্যায়ে পর্যায়ক্রমে ১৪ বার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। সর্বশেষ গত ২০২৩ এর জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মার্চ তিন মাস পর্যায়ক্রমে ৫% করে নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছিল। ডলারের সাথে টাকার মূল্যমানের হ্রাসের যে অজুহাত দেয়া হয়েছে তার প্রতিবাদ করে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, আমদানি রপ্তানির নামে ডলার পাচার, ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ এর সঙ্গে সাধারণ মানুষ জড়িত নয় অথচ এর দায় বহন করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকেই। স্লাবভিত্তিক নিম্ন থেকে উপর পর্যন্ত বিভিন্ন মাত্রায় বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি নিম্নআয়ের মানুষ ও মধ্যবিত্তের দুর্ভোগ যেমন বাড়াবে তেমনি সরকার ও লুটপাটকারীদের দায় এড়ানোর পথ তৈরি করবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, জ¦ালানি বিশেষজ্ঞরা এবং বাম জোট বহু দিন থেকে বলে আসছে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতসহ অন্যান্যক্ষেত্রে চলমান দুর্নীতি ও অপচয় রোধ করলে এবং তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে গ্যাস ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করলে বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে কম দামে বিদ্যুৎ দেয়া সম্ভব। তাছাড়া সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন না করে ফার্নেস অয়েলভিত্তিক বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় ও অলস বসিয়ে রেখে হাজার হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ ভর্তুকি দেয়ার ভুলনীতি অনুসরণ দুর্নীতিবাজদেরই প্রশ্রয় দেয়া হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার ভতুর্কি সমন্বয়ের নামে আগামী তিন বছর মূল্য বৃদ্ধি পর্যায়ক্রমে করে যাবে। ফেব্রুয়ারি থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। সামনে গ্রাহক পর্যায়েও গ্যাসের দাম বাড়বে। জ্বালানি তেলের মূল্য মার্চ মাস থেকে প্রতি মাসে সমন্বয় করা হবে। সমন্বয়ের কথা বললেও বাস্তবে গড়পড়তায় দাম বাড়েই। এলপি গ্যাসের মূল্য এর প্রকৃষ্ট দৃষ্টান্ত। নেতৃবৃন্দ বিদ্যুৎসহ জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে নাগরিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল করে সকল ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অপচয় রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান। একই সাথে সকল প্রকার অনিয়ম, দুনীর্তি, লুটপাট ও সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।