‘টাকা যার শিক্ষা তার’ নীতিতেই চলছে শিক্ষা কার্যক্রম: সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতাকর্মীরা বলেন, আমরা যখন সংগঠনের চল্লিশ বছর পালন করছি তখন দেশের মানুষ এক চরম সংকটে। বর্তমান শিক্ষার প্রধান ধারা বেসরকারি ও বাণিজ্যিক ধারা। এক কথায় বলা যায় টাকা যার শিক্ষা তার এই নীতিতেই চলছে শিক্ষা কার্যক্রম।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল ১১ টায় চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের প্রাতষ্ঠার ৪ দশক পূর্তি উপলক্ষে ছাত্র সমাবেশে এ কথা বলেন তারা। সমাবেশে বছরব্যাপী আয়োজনের উদ্বোধনী করা হয়।
সমাবেশে জেলা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সংগ্রামী সভাপতি ছাত্র নেতা মুক্তা বাড়ৈ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক নাছিমা সরদার, সদস্য তানজিলা আক্তার, জিহাদ হোসাইন প্রমূখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, ২১ জানুয়ারি ছাত্র সমাজের অগ্রর্বতী চিন্তার পথিকৃৎ সংগঠন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট প্রতিষ্ঠার চার দশক পূর্তি হচ্ছে। ৪০ বছর পূর্বে সর্বজনীন, বিজ্ঞানভিত্তিক—সেক্যুলার, বৈষম্যহীন একই পদ্ধতির গণতান্ত্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রর্বতনের সংগ্রামের প্রত্যয় ঘোষনা করে যাত্রা শুরু করে। সংবিধানের ১৭ নং অনুচ্ছেদে একই পদ্ধতির শিক্ষার কথা থাকলেও দেশে চলছে সাধারণ শিক্ষা, ইংরেজি মাধ্যম, কারিগরি, ক্যাডেট ও মাদ্রাসা শিক্ষা নামক বিভিন্ন ধারা। ২০২৩ থেকে চালু করা হয়েছে শিক্ষাক্রম ২০২১। কোন প্রকার প্রস্তুতি ও আয়োজন ব্যতিরেকে শিক্ষার্থীদের উপর চাপানো হলো এই কারিকুলাম। ফলত, ছাত্র, শিক্ষক—অভিভাবকেরা পড়ছেন বিপাকে। শিক্ষায় বাণিজ্যিকীকরণ, বেসরকারিকরণ নীতির ফলে উচ্চ শিক্ষায় ব্যয় বৃদ্ধি ঘটছে তীব্র আকারে। উচ্চশিক্ষায় অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীকে অর্থের বিনিময়ে সার্টিফিকেট কিনতে হচ্ছে। জনগণকে জিম্মি করে চলছে শিক্ষার রমরমা ব্যবসা। ক্যাম্পাসগুলিতে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের দ্বারা গণরুম—গেস্টরুম র্নিযাতনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ ও শিক্ষার গণতান্ত্রিক পরিবেশ ধ্বংস করা হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ৪ দশকে ছাত্র ফ্রন্ট শিক্ষার বেসরকারিকরণ, বাণিজ্যিকীকরণ, ফি বৃদ্ধি, শিক্ষা সংকোচনের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে আসছে। ছাত্র ফ্রন্ট মনে করে শিক্ষার সংকট সমাজের অপরাপর সংকট থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। দেশের অধিকাংশ মানুষের জীবন চরম অভাব—দারিদ্র আর বৈষম্য—বঞ্চনার ভারে পিষ্ট। তাই শিক্ষা আন্দোলন চূড়ান্ত পরিণতিতে একটি শোষণ বৈষম্যহীন সমাজতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠারই সংগ্রাম। ৪০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সংগ্রামমুখর মুহুর্তে ছাত্র শিক্ষকসহ দেশবাসীর প্রতি আমাদের আহ্বান শিক্ষা-সংস্কৃতি, মনুষ্যত্ব রক্ষার সংগ্রাম শক্তিশালি করুন। দেশের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন রুখে দিতে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলুন।