উন্নয়নের নামে ব্যাপক লুটপাট-দুনীতি হচ্ছে: বাম গণতান্ত্রিক জোট
প্রেস বিজ্ঞপ্তি: ‘ফ্যাসিবাদী’ উল্লেখ করে আওয়ামী সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙ্গে নির্দলীয় নিরপক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালু, নিত্যপণ্যেও দাম কমানো, সিন্ডিকেট ভাঙ্গা, দুর্নীতি লুটপাট বন্ধ, অর্থপাচারকারী-ঋণখেলাপি-দুর্নীতিবাজদের শাস্তি এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে সমাবেশ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪ টায় বাম গণতান্ত্রিক জোট রূপগঞ্জ উপজেলা শাখার উদ্যোগে গাউছিয়ায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
কমিউনিস্ট পার্টির রূপগঞ্জ উপজেলার সভাপতি মনিরুজ্জামান চঞ্চলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কমিউনিস্ট পার্টির নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবর্ত্তী, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সদস্য সেলিম মাহমুদ, বেলায়েত হোসেন, এস এম কাদির, কমিউনিস্ট পার্টি জেলার কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন, রূপগঞ্জ উপজেলা কমিটির সদস্য আনিসুর রহমান, লোকনাথ বর্মন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান আওয়ামী সরকারের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনে জনগণের জীবনে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। মানুষ এই ফ্যাসিবাদী সরকারের শাসন থেকে মুক্তি চায়। ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে এবং ২০১৮ সালে গভীর রাতে ভোট ডাকাতি করে সরকার ক্ষমতায় এসে জনগণের বিরুদ্ধে অপশাসন চালিয়ে যাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের জীবন বিপর্যস্ত। সরকার যে সকল নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দিচ্ছে তা ব্যবসায়ীরা তা মানছে না। তারা ইচ্ছামতো দাম ক্রেতাদের কাছ থেকে আদায় করছে। উন্নয়নের নামে ব্যাপক লুটপাট-দুনীতি হচ্ছে। ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা খেলাপি হচ্ছে। বিদেশে ব্যাপক টাকা পাচার হচ্ছে। লুটপাটকারী-দুর্নীতিবাজ-পাচারকারী কারো বিরুদ্ধেই কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। গুম, খুন, হামলা, মামলা নির্যাতন অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। আবারও ক্ষমতায় আসার ইতিমধ্যে আরপিও সংশোধন করে ইসির ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনসহ সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় তা ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। ফলে বর্তমান আওয়ামী সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে এবং নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচনে কালো টাকা, ধর্মের ব্যবহার বন্ধ করে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, জনগণের আন্দোলন ও দেশি-বিদেশী নানামুখী চাপে পড়ে সরকার দমনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি বাতিল না করে পরিবর্তনের মাধ্যমে কৌশলে একই ধরনের নিবর্তনমূলক সাইবার নিরাপত্তা আইন করেছে। কয়েকটি ক্ষেত্রেমাত্র আইনটির ধারা জামিনযোগ্য করে, শাস্তির মাত্রা কিছুটা কমিয়ে জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা আইনে ৪২ ধারায় বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও গ্রেফতারের ক্ষমতা পুলিশকে দেয়া হয়েছে। ডিজিটাল মাধ্যম থেকে তথ্য উপাত্ত অপসারণ ও বøক করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। পুলিশের হাতে এত ক্ষমতা আর কোন আইনে দেয়া হয়নি। যা বাংলাদেশের সংবিধান ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের পরিপন্থি। সরকার সংসদে অত্যাবশ্যক পরিষেবা বিল-২০২৩ উত্থাপন করেছে। পাশ হলে শ্রমজীবী মানুষের সাংবিধানিক অধিকার ধর্মঘট করার অধিকারও কেড়ে নেয়া হবে।
নেতৃবৃন্দ বর্তমান ‘কর্তৃত্ববাদী’ আওয়ামী সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সকল প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের প্রতি আহবান জানান।