শনিবার, মে ৪, ২০২৪
Led02জেলাজুড়েফতুল্লা

আলোর পথে ফিরতে চায় মাদকে জড়িত দম্পতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: সমাজের কাছে অবহেলার পাত্র, সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটিয়েছে স্বজনরাও। হয়েছে একাধিক মামলার আসামী, পুলিশের ভয়ে ফেরারি জীবন।

এমন নানা সমস্যার মাঝে জীবন অতিবাহিত করে অতিষ্ঠ এক মাদক ব্যবসায়ী দম্পতি। বুঝতে পেড়েছেন সমাজে বাঁচতে হলে প্রয়োজন সম্মান। তারা তাদের মাদক জীবনের কর্মকাণ্ডে এখন অনুতপ্ত। চাইছে স্বাভাবিক জীবনের নিশ্চয়তা। খুঁজছে আলোর পথ।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার বলছেন, ভালো হতে চাইলে অবশ্যই সুযোগ দেওয়া উচিৎ।

ফতুল্লার কুতুবপুরের পাগলা পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেনের ছেলে ৫২ বছর বয়সী মাছুম। স্ত্রী ফরজানা আক্তারকে সাথে নিয়ে মাদক ব্যবসা করতেন। এই দম্পতির বিরুদ্ধে ৩টি মাদক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। এ সকল মামলায় নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন তারা। ৩ সন্তানের অভিভাবক এই দম্পতি। এরই মাঝে বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে। আরও দুই সন্তান পড়ছে স্কুলে।

মাদক ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বরাবর ১৯ জুলাই একটি আবেদন করেন মাদক ব্যবসায়ী মো. মাছুম।

আবেদনপত্রে মো. মাছুম উল্লেখ করেন, তাঁদের মাদক ব্যবসার কারণে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের কটু কথা শুনছে বড় মেয়েকে। ছোট দুই ছেলে মেয়ে এলাকায় স্ব-সম্মানে চলাফেরা আর স্কুল কলেজে যেতে করতে পারছে না। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এবং মাদক ব্যবসা অতি জঘন্য কাজ উপলব্ধি করে মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিতে চাইছে। তাই পুলিশ সুপারের সহযোগীতা চেয়ে আবেদন করেছি।

মো. মাছুম জানান, আমার মাদক ব্যবসার কারণে সন্তানদের বিভিন্ন অপমান-অপদস্ত-লাঞ্চিত ও কটু কথা শুনতে হয়। আমি ও আমার স্ত্রী এতদিন যা করেছি, তা সম্পূর্ণ ভূল ছিল। আমরা আমাদের ভুল বুঝতে পেরে মাদক ব্যবসা ছেড়ে সন্তান নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চাইছি।

মো. মাছুমের স্ত্রী ফরজানা আক্তার লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, ‘২০১৬ সাল থেকে আমার স্বামী মাদক ব্যবসা করতেন। এক সময় আমিও জড়িয়ে পড়েছি মাদকের সাথে। এরই মধ্যে ৩টি মাদক মামলার আসামী হয়েছি। বছর দু’এক আগেও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) এর কাছে মাদক থেকে বিরত থাকার অঙ্গীকার করে ছিলাম, তখন কিছু দিন ভালো ভাবেই ছিলাম। পুনরায় আমার স্বামী মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে, তবে ৭ মাস আগে মাদক ব্যবসা ছাড়ে দিয়েছে। কিন্তু এখন আবার কয়েক দিন পরপর পুলিশ বাসায় আসে, মেয়ের শ্বশুর বাড়ি থেকেও নানা কটু কথা শুনতে হয়। ফলে মাদক ব্যবসা একেবারে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি পুলিশ সুপারের সহযোগীতা চাইছি।’

এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিবে, এমন কেউ আমার কাছে আসেনি। যদি আসে ও সহযোগীতা চায়, তাহলে আমরা অবশ্যই তাদের সহযোগীতা করবো এবং ভালো হওয়ার সুযোগ দিবো। পাশাপাশি তারা আবারও মাদক বিক্রির সাথে জড়িয়ে পড়ছে কি না; জানতে নজরদারীতে রাখবো।

RSS
Follow by Email