বুধবার, অক্টোবর ৩০, ২০২৪
Led03ধর্ম

জুমআ‘র দিন যে ৪ আমল করবেন

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: মুসলিম জাহানের কাছে সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমআ‘র দিন বা শুক্রবার । এই দিনের মর্যাদা ও তাৎপর্য অনেক বেশি। সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ দিন বলেই সাপ্তাহিক ঈদের দিনও বলা হয় এই দিনকে। জুমআ‘র দিনের ফজিলত সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে।

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমআ‘র দিন সপ্তাহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং তা আল্লাহ‘র নিকট অধিক সম্মানিত। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৮৪)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সূর্য উদিত হওয়ার দিনগুলোর মধ্যে জুমআ‘র দিন সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এই দিনে তাকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৮৫৪)

পবিত্র এই দিনে বেশ কিছু আমল ও সুন্নত রয়েছে। বিভিন্ন হাদিসে সেগুলো বর্ণিত হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ধারাবাহিক কয়েকটি হলো- গোসল করা, উত্তম পোশাক গায়ে দেওয়া, সুগন্ধি ব্যবহার করা ও মনোযোগের সঙ্গে খুতবা শোনা।

আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমআ‘র দিন গোসল করে উত্তম পোশাক পরিধান করবে এবং সুগন্ধি ব্যবহার করবে, যদি তার নিকট থাকে। তারপর জুমআ‘র নামাজে আসে এবং অন্য মুসল্লিদের গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনের দিকে না যায়। নির্ধারিত নামাজ আদায় করে। তারপর ইমাম খুতবার জন্য বের হওয়ার পর থেকে সালাম পর্যন্ত চুপ করে থাকে। তাহলে তার এই আমল পূর্ববর্তী জুমআ‘র দিন থেকে পরের জুমআ পর্যন্ত সমস্ত সগিরা গুনাহর জন্য কাফ্ফারা হবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৩)

জুমআ‘র দিন যে যে আমলগুলোতে মুসল্লিরা বেশি নজর রাখবেন:

আগেভাগে জুমআ‘য় যাওয়ার ফজিলত

জুমআ‘র দিন আগেভাগে মসজিদে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ আমল। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘হে মুমিনগণ! জুমআ‘র দিনে যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে দ্রুত ছুটে যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা বোঝো। ’ (সুরা জুমআ, আয়াত : ০৯)

এক হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘জুমআ‘র দিন মসজিদের দরজায় ফেরেশতারা অবস্থান করেন। এবং ক্রমানুসারে আগে আগমনকারীদের নাম লিখতে থাকেন। যে সবার আগে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো— যে একটি মোটাতাজা উট কোরবানি করে। এরপর যে আসে সে ওই ব্যক্তি— যে একটি গাভী কোরবানি করে। এরপর আগমনকারী ব্যক্তি— মুরগি দানকারীর ন্যায়। তারপর ইমাম যখন বের হন, তখন ফেরেশতাগণ তাদের লেখা বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ সহকারে খুতবা শুনতে থাকেন। (বুখারি, হাদিস : ৯২৯)

সুরা কাহাফ তিলওয়াত যেন ছুটে না যায়

সুরা কাহফ তিলওয়াত করা জুমআ‘র দিনের বিশেষ একটি আমল। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমআ‘র দিন সুরা কাহফ পাঠ করবে, তার জন্য দুই জুমআ পর্যন্ত নূর উজ্জ্বল করা হবে। ’ (আমালুল ইয়াওমী ওয়াল লাইল, হাদিস : ৯৫২)

বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা জুমআ‘র দিনের ফজিলতপূর্ণ আরেক আমল। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘দিনসমূহের মধ্যে জুমআ‘র দিনই সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। এই দিনে শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়া হবে। এই দিনে সমস্ত সৃষ্টিকে বেহুঁশ করা হবে। অতএব তোমরা এই দিনে আমার ওপর অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করো। কেননা, তোমাদের দরুদ আমার সম্মুখে পেশ করা হয়ে থাকে। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৭)

জুমআ‘র দিন দোয়া করতে অবহেলা নয়

জুমআ‘র দিনের বিশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল হচ্ছে দোয়া করা। জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে প্রিয় নবী (সা.) বলেন, জুমআ‘র দিনের বারো ঘণ্টার মধ্যে একটি বিশেষ মুহূর্ত এমন আছে যে, তখন কোনো মুসলমান আল্লাহর নিকট যে দোয়া করবে আল্লাহ তা কবুল করেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সুন্দর ও স্বার্থকভাবে জুমআ‘র দিন কাটানোর তাওফিক দান করুন। পবিত্র এই দিনের কল্যাণ, সওয়াব ও ফজিলত দিয়ে আমাদের ভূষিত করুন।

RSS
Follow by Email