মন্ডপে মন্ডপে চলছে দূর্গা পূজার প্রস্তুতি, থাকবে পুলিশের বিশেষ নজর
# মা এবার ঘোটকে আসবে ঘোটকে যাবে: পুরোহিত
#গুজব-প্রপাগান্ডা না ছড়াতে পারে তার জন্য সাইবার মনিটরিং থাকবে: এসপি
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: সনাতন হিন্দুধর্মালম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয়া দূর্গা পূজার আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। প্রতিমা তৈরিতে কারিগরদের ব্যস্ততায় জানান দিচ্ছে দেবী দূর্গার আগমনী বার্তা। মা দুর্গাকে সাজাতে রাত দিন কাজ করছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা। এছাড়া নির্বিঘ্নে উৎসব সম্পন্ন করতে মন্দির ভিত্তিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। উৎসবকে আকর্ষণীয় করতে মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। কয়েকদিনের মধ্যেই রঙের প্রলেপ ও অঙ্গসজ্জার কাজ শুরু হবে। দেবীর মর্তে আগমনের আগেই শেষ করতে হবে এ কাজ। তাই কাজের চাপে দম ফেলার ফুসরত নেই নারায়ণগঞ্জে মৃৎশিল্পীদের। দূর্গোৎসব উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবম্বীদের মধ্যে বিরাজ করছে সাজ সাজ রব।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, নগরীর বিভিন্ন স্থানে স্থায়ী ও অস্থায়ী সার্বজনীন পূজা মন্ডপ তৈরি করে পূজার প্রস্তুতি চলছে। প্রতিমা তৈরিতে ভাস্কারদের কল্পনায় দেবী দুর্গার অনিন্দ্য সুন্দর রূপ দিতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে মাটির কাজ। কয়েকটি মন্ডপে আবার ভাস্কাররা শুরু করেছেন রং, তুলি দিয়ে প্রতিমা সাজ সজ্জার কাজ। শিল্পীদের নিখুঁত হাতের ছোয়ায় কৃত্রিম জীবন পাবেন দেবী দূর্গা, শিব, লক্ষী, সরস্বতি, কার্তিক, গনেশ, অসুরসহ অন্যান্য প্রতিমা। মৃৎশিল্পী বলছেন, কিছুদিনের মধ্যে প্রতিমায় পরানো হবে শাড়ি, হাতের বালাসহ অন্যান্য গয়না। এরপর ঢাকের বাজনা, উলুধ্বনি, আর আরতিতে মুখরিত হয়ে উঠবে পূজা মন্ডপগুলো। পাশাপাশি আলোক সজ্জা, প্যান্ডেল তৈরি, মন্ডপ ও তার আশে পাশে সাজ সজ্জার কাজসহ নানা কাজেও ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন পূজার সাথে সংশ্লিষ্টরা। সাথে সাথে অন্যরাও পূজার কেনাকাটা করতে শুরু করেছেন।
লক্ষী নারায়ণ বারোয়ারী পূজা কমিটির সহ সভাপতি গোপি নাথ সাহা লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, বৃষ্টির কারণে কাজ কিছুটা থমকে গেছে। তবে পূজোর আগেই সব প্রস্তুত হয়ে যাবে। করোনার পর থেকে সাউন্ড সিস্টেম বন্ধ রাখি। তবে এবার চেষ্টা করবো সেইভাবেই কাজ করার জন্য। যাতে করে মানুষ শান্তি শৃঙ্খলার মধ্যে মা দূর্গাকে দেখতে পারে। আমাদের ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে, আরও ৫০ ভাগ পূজার আগেই শেষ হয়ে যাবে।
তারক ঘোষ নামে দেওভোগ এলাকার এক বাসিন্দা লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, আমাদের দূর্গা পূজাটা আসলে শুধু আমাদের মধ্যেই হয় না। সকল ধর্মের মানুষের সমন্বয়ে এটা করা হয়। সমস্ত বেদাভেদ ভুলে আমরা শারদ উৎসবে মেতে উঠি। যার ফলে আমরা নারায়ণগঞ্জে কখনো দূর্গা পূজায় শংকিত হই না। কারণ নারায়ণগঞ্জে অন্য ধর্মের মানুষ আমাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আমরাও তাদের প্রতি অনেক শ্রদ্ধাশীল। তাছাড়া এবার সরকার ও প্রশাসন যেভাবে প্রস্তুতী নিয়েছে, আমার মনে হয়না তেমন কোন সমস্যা হবে।
শ্রী শ্রী রাধা লক্ষী নারায়ণ বিদ্রোহ মন্দিরের পুরোহিত দীপংকর চৌধুরী লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, আসছে আমাদের মায়ের পদচারণা। শুভ মহালয়া থেকে দেবীর আগমন ঘটবে। সেদিন দেবীর আগমনের কিভাবে রূপ ধারণ করেছে, আমরা মানুষকে দেখাবো। এবার মা দূর্গা ঘোটক মাধ্যমে ভ্রমণ করে আসবে। ষষ্ঠী থেকে আমরা মাকে অকাল বোধন করবো। তারপর সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী আমরা মায়ের পূজা আরচোনা করবো। এরপর দশমীতে ঘোটক মাধ্যমে আবার বিদায় নিবে। এবার আমাদের প্রার্থণার প্রধান থাকবে ডেঙ্গু থেকে মুক্তি পেতে মায়ের আশির্বাদ।
দূর্গা পূজায় এবার তিন ধাপে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহন করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ। জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, আমরা নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ এবার শারদীয় দূর্গাপূজা উপলক্ষে ৩ ধাপে নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহন করেছি। এছাড়া এবার যাতে কোন গুজব অথবা প্রপাগান্ডা না ছড়াতে পারে তার জন্য সাইবার মনিটরিং থাকবে।