রবিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৫
Led04রাজনীতি

বামজোটের প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিল

বিজ্ঞপ্তি:

লালদিয়ার চর ডেনমার্কের কোম্পানি ও পানগাঁও টার্মিনাল সুইজারল্যান্ডের কোম্পানির সাথে ইজারা চুক্তি এবং চট্টগ্রাম বন্দরের নিউ মুরিং, পতেঙ্গা ও মোংলা বন্দর ইজারা দেয়ার পরিকল্পনা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও শহরে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার বিকালে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্র্রীয় শহিদ মিনারে বাম গণতান্ত্রিক জোট নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে কর্মসূচী পালন করা হয়। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি শিবনাথ চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, সিপিবি নেতা দুলাল সাহা ও ইকবাল হোসেন, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ফোরামের সদস্য সেলিম মাহমুদ প্রমূখ।

রাতে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে জানান, জনমত উপেক্ষা করে ডেনমার্কের প্রতিষ্ঠান এপিএম টার্মিনালকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় লালদিয়া কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য ইজারা চুক্তি করেছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ৪৫ বছরের এই চুক্তিতে মাত্র ৬০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে এবং বছরে ৮ লাখ কন্টেইনার উঠানো-নামানো করবে। এছাড়া কেরানীগঞ্জে অবস্থিত চট্টগ্রাম বন্দরের পানগাঁও নৌ টার্মিনালটি ২২ বছরের জন্য পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে সুইজারল্যান্ডের মেডিটেরানিয়ান শিপিং কোম্পানি মেডলগ এস প্রতিষ্ঠানকে। অথচ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও আভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে ২০১৩ সালে ১৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এই টার্মিনাল নির্মাণ করে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই দুটি কন্টেইনার টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানিদের হাতে তুলে দেওয়ার চুক্তিটি সম্পন্ন করেছে ১৭ নভেম্বর ২০২৫। অতি গোপনীয়তার সাথে দেশবাসীকে অন্ধকারে রেখে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে মূল্যায়ন কমিটিকে পাশ কাটিয়ে প্রয়োজনীয় বোর্ড সদস্য ছাড়াই অনুমোদন নিয়ে সম্পূর্ণ অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ৭ ও ৮ নভেম্বর ২০২৫ সাপ্তাহিক ছুটির দিনে চুক্তির নেগোসিয়েশন ও চূড়ান্ত দলিল কাজ সম্পন্ন করে অন্তর্বর্তী সরকার। সরকার চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল, পতেঙ্গা ও মংলা বন্দরও ইজারা দেয়ার সমস্ত আয়োজন সম্পন্ন করেছে এবং ডিসেম্বরে চুক্তি হবে বলে জানা গেছে।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বিদেশিদের কাছে বন্দর ইজারা দেওয়ার এখতিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের নেই। তার উচিত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে চলে যাওয়া। দেশের স্বার্থ বিপন্ন করে বিগত আওয়ামী সরকার মেগা প্রকল্প প্রণয়ন করেছিল যার খেসারত দিতে হচ্ছে জনগণকে। অভ্যুত্থান পরবর্তী বর্তমান সরকার সেই ধারাবাহিতায় সাম্রাজ্যবাদীদের স্বার্থে দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি করে দেশকে একটি সর্বনাশের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার শর্ত গোপন রেখে আদানীর সঙ্গে যেভাবে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করেছিল, সেই রকমভাবে বন্দর ইজারা চুক্তির শর্তও গোপন রাখা হয়েছে। বিডা চেয়ারম্যান বলেছে, গোপনীতার জন্য শর্ত প্রকাশ করা যাচ্ছে না।

আমেরিকার সাথে নন ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট যেটা করেছে তারই ধারাবাহিকতায় এই চুক্তি গোপন করা হয়েছে। চট্টগ্রামের শ্রমিক-কর্মচারীসহ সর্বস্তরের জনগণ এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। বাম প্রগতিশীল দল ও দেশপ্রেমিক জনগণ এর বিরুদ্ধে রোডমার্চ, মন্ত্রণালয় ঘেরাওসহ নানামুখী কর্মসূচি পালন করেছে। তারপরও সরকারের টনক নড়েনি। নেতৃবৃন্দ সরকারের এই গণবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাজপথে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য সকল দেশপ্রেমিক জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।

RSS
Follow by Email