বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ১৬, ২০২৫
Led05রাজনীতি

বন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজন অনুসারে বাড়েনি জনবল-চিকিৎসক: তরিকুল

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবেশ এবং ডেঙ্গু আক্রান্তদের চিকিৎসা কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা। সংগঠনটির দাবি, অপরিচ্ছন্নতা, জরাজীর্ণতা এবং অব্যবস্থাপনার কারণে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি বর্তমানে ‘ময়লার ভাগাড়, ডেঙ্গু মশার প্রজননক্ষেত্র এবং মাদকাসক্তদের আস্তানায়’ পরিণত হয়েছে। বুধবার (১৫ অক্টোবর) গণসংহতি আন্দোলনের একটি প্রতিনিধি দল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি পরিদর্শন করে।

গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন বলেন, পরিদর্শনের সময় তারা দেখতে পান, “বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জরুরি বিভাগের সংলগ্ন ড্রেনটিতে পুরাতন ময়লা পানি জমাট বেঁধে হয়ে উঠেছে ডেঙ্গু মশার প্রজননক্ষেত্র। একই সাথে জরুরি বিভাগের পেছনের অংশে সাধারণ বর্জ্য এবং মেডিকেল বর্জ্য একসাথে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।”

তরিকুল সুজন অভিযোগ করেন, কমপ্লেক্সের ভেতরের আবাসিক এলাকার পরিত্যক্ত ভবনগুলো স্থানীয় মাদকাসক্তদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, “মাদকাসক্ত এবং স্থানীয় অপরাধীচক্র ভবনের দরজা-জানালা থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিক সুইচ তার সবই চুরি করে নিয়ে গিয়েছে। বাকি রয়েছে কেবল ভবনের ইটগুলো।”

চিকিৎসা কার্যক্রম দেখতে গিয়ে প্রতিনিধি দল ওয়াশরুমগুলোর অত্যন্ত নোংরা অবস্থা দেখতে পায়। কোথাও বেসিন ব্যবহার উপযোগী নয়, আবার কোনো কোনো বেসিনের পানির কল ভাঙ্গা। সাধারণ রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কমপ্লেক্সের ভেতরের পানি ব্যবহার উপযোগী নয়, ফলে সেবা নিতে আসা নাগরিকরা প্রত্যেকেই বাইরে থেকে পানির বোতল কিনে ব্যবহার করছেন।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, প্রতিদিনই বহু মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে কমপ্লেক্সে ভর্তি হচ্ছেন। পর্যাপ্ত বেড না থাকায় একই বেডে একাধিক রোগীকে ভর্তি নিতে হচ্ছে। ডেঙ্গু আক্রান্তদের জন্য কোনো আলাদা ওয়ার্ড নেই, ফলে সাধারণ রোগী এবং ডেঙ্গু আক্রান্তরা একই সাথে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।

তরিকুল সুজন আরও বলেন, “বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ বেড থেকে ৫০ বেডে উন্নীত হলেও জনবল এবং চিকিৎসক ৩১ বেডের রয়ে গেছে। প্রয়োজন অনুসারে বাড়েনি জনবল এবং চিকিৎসক।” তিনি পুরো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জুড়ে নিরাপত্তাহীনতা এবং মেডিকেল ও সাধারণ বর্জ্য আলাদা করে অপসারণের ব্যবস্থা না থাকায় সিভিল সার্জনের তদারকি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর ব্যবসাকে একচেটিয়া এবং লাভজনক করার জন্য সরকারী হাসপাতালগুলোকে নোংরা এবং চিকিৎসা সেবাকে নামমাত্র করে রাখা হয়েছে। যেন সাধারণ নাগরিকরা সরকারী হাসপাতালে নয়, বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হন।”

পরিদর্শন দলে তরিকুল সুজনের নেতৃত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটির সমন্বয়কারী মো. বিপ্লব খান, জেলা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী আলমগীর হোসেন আলম, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সাবেক সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা, গণসংহতি আন্দোলন বন্দর কমিটির সংগঠক ইমদাদ হোসেন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন মৃধা প্রমুখ।

RSS
Follow by Email