না.গঞ্জে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস বর্জন, শিক্ষকদের লাগাতার কর্মবিরতি
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া ৫০০ টাকার প্রহসনে নয়, শিক্ষকরা চান ন্যায্য হিস্যা। মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধির সুনির্দিষ্ট দাবি এবং শিক্ষকদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে পুলিশের বলপ্রয়োগের কঠোর প্রতিবাদে জেলার সকল এমপিওভুক্ত স্কুল ও কলেজের শিক্ষকরা আজ রণমূর্তি ধারণ করেছেন। সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস বর্জন করে অনির্দিষ্টকালের জন্য শুরু হয়েছে লাগাতার কর্মবিরতি। শিক্ষকদের এই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে কার্যত জেলার শিক্ষা কার্যক্রম সম্পূর্ণ স্তব্ধ হয়ে গেছে।
আন্দোলনে অংশ নিয়ে মিজমিজি পশ্চিমপাড়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. সাইদুর রহমান বলেন, “সারা দেশের শিক্ষকদের ন্যায় আমরাও শিক্ষকদের স্বার্থে এই কর্মবিরতিতে অংশ নিচ্ছি। আমাদের যৌক্তিক দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই ক্লাস বর্জন এবং কর্মবিরতি চলবে।”
একই সুর শোনা গেল মিজমিজি পাইনাদের উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিনের কণ্ঠে। তিনি জানান, “জাতীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমাদের বিদ্যালয়েও পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। সকল শিক্ষক একযোগে এই আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন, কারণ আমাদের দাবি ন্যায্য।”
শিক্ষকদের এই লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা আসে রবিবার বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে। এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী সেখান থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।
এর আগে দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি এবং সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের মতো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সংগঠনের নেতারা শিক্ষক সমাজকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান এবং শহীদ মিনারে অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দেন। সেখান থেকেই শিক্ষকরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন।
শিক্ষক সমাজের এই তীব্র ক্ষোভের নেপথ্যে রয়েছে সরকারের আশ্বাস ভঙ্গ। গত ১৩ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত শিক্ষক সমাবেশে শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের বাড়িভাড়া, চিকিৎসাভাতা ও কর্মচারীদের উৎসবভাতা বৃদ্ধির আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু গত ৫ অক্টোবর শিক্ষক দিবসে অর্থ মন্ত্রণালয় বাড়িভাড়া মাত্র ৫০০ টাকা বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারি করলে তা শিক্ষক সমাজের মধ্যে গভীর হতাশা এবং তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়, যা বর্তমান লাগাতার আন্দোলনের জন্ম দিয়েছে।
