ময়লা পরিস্কারের বিষয়ে ডিসির মন্তব্য ‘মানুষের বিবেকবোধ কাজ করছে না’
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের খালগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য অপসারণের পরও তা ফের দূষণের শিকার হচ্ছে। এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা প্রশ্ন তুলেছেন, শহরের নাগরিকদের বিবেকবোধ কি কাজ করছে না? তিনি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “আমরা চাই না এই শহর বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাক।”
সোমবার (৬ অক্টোবর) বিশ্ব বসতি দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে র্যালি শেষে আয়োজিত এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শীতলক্ষ্যা নদীর করুণ দশার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, একসময় এই শীতলক্ষ্যাকে ঘিরে ব্যবসা-বাণিজ্যে সমৃদ্ধি এসেছিল, কিন্তু আজ সেই নদী “মরে গিয়েছে”। সামান্য বৃষ্টিতেই শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে, কারণ মূল খালগুলো বর্জ্যে ভরে গেছে।
জাহিদুল ইসলাম মিঞা জানান, জেলা প্রশাসন খালগুলো থেকে ৩ হাজার ৫শ’ ৩৪ ট্রাক ময়লা অপসারণ করেছে। কিন্তু এত বিপুল পরিমাণ অপসারণের পরও ময়লা ফেলার প্রবণতা কমেনি। তিনি বলেন, “আমরা পরিষ্কার করছি, আবার ময়লা ফেলা হচ্ছে। এর কারণ হলো মানুষের বিবেকবোধ কাজ করছে না। একজন ভাবে, আমি ফেললে কিছু হবে না। কিন্তু যখন ১০ লাখ মানুষ ময়লা ফেলে তখন তা ভয়াবহ বোঝায় পরিণত হয়।”
খাল ও নদী দখল-দূষণের কারণে নানা সংকট তৈরির কথা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বলেন, পানি প্রবাহ নিশ্চিত করতে জেলার ৮০৫টি ব্রিজ-কালভার্ট ভেঙে ফেলতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, এসব ব্রিজ-কালভার্ট নিচু করে তৈরি করা হয়েছে। “খাল পরিষ্কার করতে গিয়ে দেখি ছোট ছোট কালভার্ট করা হয়েছে। কেউ হয়তো ব্যক্তিগত প্রয়োজনে করেছে, কিন্তু একবারও চিন্তা করেনি—এতে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাবে। শুধু নিজের স্বার্থ চিন্তা করেছে।”
জেলা প্রশাসক শেষে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানান, “শুধু নিজের ভালো চিন্তা করলেই হবে না, রাষ্ট্রের ভালোও চিন্তা করতে হবে।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলার সিভিল সার্জন এ এফ এম মুশিউর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর হুসাইন এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রসিকিউশন) মো. ইব্রাহিম হোসেন।
