হাজার ছাড়ালো ডেঙ্গু, চব্বিশ ঘন্টায় অর্ধশত শনাক্ত
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ডেঙ্গু পরিস্থিতি নারায়ণগঞ্জে এখন এক ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বর্ষা শেষ হলেও মশার উপদ্রব ও রোগের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। প্রকাশিত সর্বশেষ দৈনিক প্রতিবেদনে যে বিস্ফোরক তথ্য উঠে এসেছে, তা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে: গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৫১ জন রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এই সংখ্যাটি চলতি বছরে একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড।
এর ফলে, চলতি বছরে নারায়ণগঞ্জে মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে ১০৩১ জনে উন্নীত হয়েছে। ডেঙ্গুর এই ‘হাজার ক্রোস’ পরিস্থিতি স্থানীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে এক চরম চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে।
সোমবার (৬ অক্টোবর) প্রকাশিত এই তথ্য অনুযায়ী, নতুন শনাক্ত হওয়াসহ মোট ৫১ জন ডেঙ্গু রোগী বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতাল, সদর জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতাল এবং বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বিশেষ করে, চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম ছয় দিনেই মোট ১১০ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন, যা ইঙ্গিত দিচ্ছে—শীত আসার আগে এই রোগের প্রকোপ আরও বাড়তে পারে। স্থানীয়দের দাবি, নারায়ণগঞ্জে প্রায় প্রতি ঘরে ঘরেই এখন ডেঙ্গু রোগী।
যদিও গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন এবং চলতি বছরে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৬২ জনে, তবুও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা এখনও উদ্বেগজনক পর্যায়ে রয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কারো মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেনি।
উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মোকাবিলায় মশা নিধন ও জনসচেতনতা বাড়াতে জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জনগণকে জরুরিভাবে বেশ কিছু পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে: মশা তাড়ানোর ব্যবস্থা নিন ও নিয়মিত মশারি ব্যবহার করুন; চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন; কোথাও যেন পানি না জমে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন ও জমে থাকা পানি দ্রুত অপসারণ করুন; এবং মশার লার্ভা ধ্বংস করার ব্যবস্থা নিন।
স্বাস্থ্য বিভাগ হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ডেঙ্গুর এই ভয়াল প্রকোপ রুখতে সাধারণ মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ অপরিহার্য।