বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ২, ২০২৫
আড়াইহাজার

ডাকাত সন্দেহে আড়াইহাজারে পিটিয়ে হত্যা

লাইভ নারায়ণগঞ্জ:আড়াইহাজার উপজেলায় ডাকাত সন্দেহে নবী হোসেন (৩২) নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার বিশনন্দী ইউনিয়নের দড়ি বিশনন্দী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহত নবী হোসেন পাশের উচিৎপুরা ইউনিয়নের পশ্চিম আগুকান্দি গ্রামের বাসিন্দা।

এই ঘটনায় ডাকাতির শিকার হয়ে একটি পরিবারের অন্তত চারজন সদস্য আহত হয়েছেন।

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তারেক আল মেহেদী জানান, দড়ি বিশনন্দী গ্রামের একটি বাড়িতে ডাকাতির চেষ্টা চলাকালে ডাকাতদল বাড়ির অন্তত চারজনকে কুপিয়ে জখম করে। আহতরা হলেন: কুলসুম বেগম (৪০), তার ছেলে নাঈম মিয়া (১৮), আত্মীয় ফারুক মিয়া (৪৫) ও আবুল হোসেন (২৮)। এদের মধ্যে কুলসুম বেগম বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ডাকাতির ঘটনা ঘটলে স্থানীয় মসজিদের মাইকে ‘ডাকাত পড়েছে’ জানিয়ে ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ঘোষণার পর গ্রামবাসী ডাকাতদলকে ধাওয়া করে এবং একজনকে ধরে ফেলে। গ্রামবাসী সম্মিলিতভাবে পিটিয়ে নবী হোসেনকে হত্যা করে।

আড়াইহাজার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফুদ্দিন প্রাথমিক তদন্তের বরাতে জানান, ভোররাত আড়াইটার দিকে বৃষ্টি পড়ছিল। কুলসুম বেগম তখন রান্নাঘরে যান। সেখানে তিন-চারজন লোককে দেখে তিনি ‘ডাকাত-ডাকাত’ বলে চিৎকার শুরু করেন। পরিবারের অন্যরা বেরিয়ে এলে ডাকাতদল তাদের কুপিয়ে জখম করে।

পরিদর্শক সাইফুদ্দিন আরও জানান, রাত তিনটার দিকে মাইকে ঘোষণার পর গ্রামবাসী জড়ো হয়ে ডাকাতদের খুঁজতে থাকে। পরে একটি বিলের মধ্যে নবী হোসেনকে পেয়ে তাকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ওই বিল থেকেই নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ পরিদর্শক সাইফুদ্দিন জানিয়েছেন, নবী হোসেনকে ডাকাত সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হলেও তার বিরুদ্ধে পূর্বে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় আইনগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

তবে, গত একমাসে আড়াইহাজার উপজেলায় এটি তৃতীয় পিটিয়ে হত্যার ঘটনা। এর আগে, গত সোমবার সকালে চাঁদা দাবির অভিযোগে ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. সোহেলকে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। যদিও স্বজনরা এটিকে মাদক ব্যবসার বিরোধিতার কারণে পরিকল্পিত হত্যা দাবি করেন। অন্যদিকে, পুলিশের তথ্য মতে সোহেলের বিরুদ্ধে মাদক, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ অন্তত ১৫টি মামলা ছিল। এছাড়া, গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের প্রভারকরদী গ্রামের বাসিন্দা মো. আয়নাল হোসেনকেও তার বাড়ির ১০০ গজের মধ্যেই পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ৪২ বছর বয়সী আয়নালের বিরুদ্ধেও ডাকাতি, ধর্ষণসহ অন্তত আটটি মামলা ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছিল।

RSS
Follow by Email