পূজার আলোয় মুছে গেল বৈষম্য, দলিতদের পাশে খোরশেদ
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: দুর্গোৎসব মানেই আনন্দ, উল্লাস আর সকলের জন্য উৎসবের বার্তা। কিন্তু সমাজের পিছিয়ে পড়া দলিত সম্প্রদায়ের কাছে উৎসবের সেই আলো অনেক সময়ই পৌঁছায় না। সেই অন্ধকার ঘুচিয়ে টানা চতুর্থ বছরের মতো এবারও নারায়ণগঞ্জের দলিত সম্প্রদায়ের মাঝে পূজার আনন্দ পৌঁছে দিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নেতা মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। তাঁর ব্যক্তিগত তত্ত্বাবধানে শুধু উপহার বিতরণ নয়, গত চার বছর ধরে মিশনপাড়ার রবিদাস পাড়া লেনে এই দলিত সমাজের পূজা উদযাপিত হচ্ছে, যা স্থানীয়ভাবে সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দলিত সম্প্রদায়ের পূজা মণ্ডপে এসে তিনি তাদের হাতে উপহার সামগ্রী তুলে দেন। তাঁর এই মানবিক উদ্যোগে স্থানীয় দলিত সমাজের মুখে ফুটে ওঠে আনন্দের হাসি।
উপহার বিতরণকালে সদ্য সাবেকি এনসিসি কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপি নেতা খোরশেদ বলেন, “আপনারা জানেন গত চার বছর ধরে এখানে দলিত সম্প্রদায়ের লোকেরা পূজার আয়োজন করে। দলিত সমাজ হিসেবে তারা আনন্দ উৎসব থেকে বঞ্চিত হয়। আমি মনে করি মালিকের যেমন উৎসব করার অধিকার আছে তেমনি সবচেয়ে গরিব মানুষেরও আনন্দ উৎসব করার অধিকার রয়েছে।”
তিনি জানান, আশেপাশের বিত্তবান ও দানশীলদের সহায়তায় এখানে তারা দুর্গোৎসব উদযাপন করেন। তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা সাজসজ্জা থেকে শুরু করে সকল দিকেই একটু একটু করে ভাল করার চেষ্টা করছি। আগামী দিনে যেন আমরা আরও বৃহৎ পরিসরে এটা করতে পারি সেজন্য আপনারা দোয়া করবেন। আমরা আগামী বছর চেষ্টা করবো এটা যেন আরেকটু খোলামেলা জায়গায় করা যায়।”
এই মানবিক উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামী একনাথনন্দ মহারাজ। তিনি বলেন, “প্রতিমায় পূজো হয় আর জীবন্ত মানুষের কী পূজো হয় না? এই জীবন্ত মানুষদের পূজোর ব্যবস্থা করায় খোরশেদ ভাইকে আমার প্রাণঢালা অভিনন্দন।” তিনি উল্লেখ করেন, প্রতিটি মায়ের মাঝেই মা দুর্গা বিরাজমান এবং খোরশেদ ভাই সবসময় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন।
উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডা. আশীষ কুমার দে, বিশ্বজিত সাহা, বুরাণ মুখার্জি, মহানগর কৃষক দলের সহ সভাপতি রানা মুজিব, শওকত খন্দকার, মোঃ মিঠু, মাসুদ আহমেদ, ইমন, নাঈম মোল্লা, ওয়ার্কিং ফর বেটার নারায়ণগঞ্জের জাহিদ হাসান, মোঃ রনি প্রমুখ।
খোরশেদের এই উদ্যোগ প্রমাণ করে যে ধর্মীয় ভেদাভেদ পেরিয়ে মানবতাই সবচেয়ে বড় ধর্ম, যা নারায়ণগঞ্জের দলিত সমাজে পূজার মাধ্যমে প্রতি বছর নতুন করে সেতুবন্ধন তৈরি করছে।