শনিবার, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৫
Led04ধর্মরাজনীতি

না.গঞ্জে মাওলানা আতাউর ‘শুধু নির্বাচনের জন্য জুলাই-আগস্টের রক্ত ঝরেনি’

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: দেশের রাজনীতিতে এখন ইসলামপন্থীরাই প্রধান শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। যারা ফ্যাসিবাদ দূর করার জন্য আন্দোলন করছে, তাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়েই রাষ্ট্র গঠন করা হবে। এমনটাই মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। তিনি বলেন, অতীতের পদ্ধতিতেই অনেকে নির্বাচন চায়, কিন্তু রাষ্ট্র সংস্কার হোক এটা তারা চায় না।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় চাষাঢ়া শহীদ মিনারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের উদ্যোগে আয়োজিত এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, আমরা মনে করি, ‘৭২-এর সংবিধান আমাদের মুক্তি দিতে পারেনি। যদি রাষ্ট্রকে সত্যিকার অর্থে সংস্কার করতে হয়, তাহলে মূল সংস্কার হলো নির্বাচনী সংস্কার। শুধু একটি নির্বাচনের জন্য তো জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে রক্ত ঝরেনি। বরং একটি আদর্শিক পরিবর্তন হতে হবে।

তিনি বলেন, অনেকে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজির দায়ে তাদের ১০ হাজার নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে। এর মধ্য দিয়ে তারা স্বীকার করে নিয়েছে যে, তাদের দলে টপ টু বটম সকল জায়গায় চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী আছে। এই বহিষ্কারের পরও কি তাদের সংশোধন হয়েছে? না, হতে পারেনি। যারা নিজেদের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, তারা কিভাবে দেশ নিয়ন্ত্রণ করবে, তা আমাদের জানা নেই।

মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, “বিগত দিনে শেখ হাসিনা যেভাবে ইসলামপন্থীদের কটুক্তি করতেন, বর্তমানে তারাও আমাদের মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ বলে মিথ্যা আখ্যা দেয়। তারা নাকি আমাদের আফগানিস্তান ও পাকিস্তান পাঠিয়ে দিবে। আমরা বলি, কখনো আমরা আফগানিস্তান ও পাকিস্তান যাব না। আমরা দেশকে ভালোবাসি, দেশেই থাকব।”

তিনি আরও বলেন, “বরং যাদেরকে আমরা ভারতের দালাল বলতাম, তারাই ভারত পালিয়ে গিয়ে প্রমাণ করেছে তারা ভারতের দালাল। তাদেরও কিন্তু বিভিন্ন দেশে বাড়িঘর আছে। আমরা চাই সবাই দেশেই থাকুক। একসাথে আমরা দেশে থেকে সুন্দর রাষ্ট্র গঠন করি।”

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি মুহাম্মদ সুলতান মাহমুদের সঞ্চালনায় এই গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সভাপতির বক্তব্যে মুফতি মাসুম বিল্লাহ বলেন, “অনেকে বলে পিআর খায় না মাথায় দেয়? আমরা স্পষ্ট বলতে চাই, পিআর এখন জনগণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। পিআরের বিরুদ্ধে কথা বললে জনগণ আপনাদেরকে মেনে নিবে না।” তিনি বলেন, “যারা ১৬ বছর অন্যায়ভাবে মানুষকে হত্যা করেছে, গুম করেছে এবং ৫ আগস্টের পর দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, তাদের বিচার হওয়ার পূর্বে আমরা কোনো নির্বাচন দেখতে চাই না।”

গণসমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) মুফতি দেলাওয়ার হোসাইন সাকী। তিনি বলেন, “ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ক্ষমতার রাজনীতি করে না, জিঘাংসার রাজনীতির চর্চা করে না। আদর্শিক রাজনীতি করা হলো আমাদের কাজ।” তিনি আরও বলেন, “শুধু এমপি হওয়ার জন্যই যদি আন্দোলন করতাম, তাহলে এই অফার বহুবার আমাদেরকে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়ে কোনো রাজনীতি করতে চাই না।”

অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপকমিটি সম্পাদক আলহাজ্ব মুহা. হারুনুর রশিদ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর সহ-সভাপতি নুর হোসেন, জয়েন্ট সেক্রেটারি ডা. সাইফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাও. শামসুল আলম, প্রচার ও দাওয়াত সম্পাদক বিলাল খান এবং অর্থ সম্পাদক ইসমাইলসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

RSS
Follow by Email