যারা বানভাসির জন্য কোটি কোটি টাকা এনেছে, সেই টাকা কোথায় গেল: গিয়াসউদ্দিন
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, যারা আগে স্বৈরশাসক ছিলো তাদের কাছে মানুষ আবেদ নিবেদন করেছে। মানুষ বলেছে যে আমাদের দুঃখ দুর্দশা কথা ভেবে এই এলাকায় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেন। সেই স্বৈরশাসকরা বার বার আশ্বাস দিয়েছে, কিন্তু কোন কাজ হয়নাই। নারায়ণগঞ্জের গডফাদার বক্তব্য দিয়ে বলেছে, সরকারের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা এনেছে, ডিএনডির মানুষের জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য। কিন্তু কোন মানুষ এই কাজ দেখে নাই, কোন উপকার পায় নাই। সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এই জলাবদ্ধতার কারণে রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, শিল্প কলকারখানা, স্কুল কলেজ মাদ্রাসায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তলিয়ে যায়। মানুষ যাতায়াত করতে পারে না, বাজার সদাই করতে পারে না, একেবারে এখানের জনজীবন সম্পন্ন বিপন্ন। বারবার তারা দাবী করেছে জলাবদ্ধতা নিরসন করার জন্য।
রবিবার (৩ আগস্ট) ডিএনডি এলাকার জলাবদ্ধতার নিরসনে উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এ স্মারকলিপি প্রদান শেষে এক মানববন্ধনে এ কথা বলেন তিনি।
বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, আমি ইতিমধ্যে দুই দুইবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। এই জলাবদ্ধতা দূর করে জনগণের দুর্দশা লাগব করার জন্য অনুরোধ করেছি, যার অনুলিপি আমি জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরকে দিয়েছি। আমরা আশা করব নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসন আমাদের এই জনগণের দুঃখ দুর্দশার কথা বিবেচনা করে, এই স্মারকলিপি কতটুকু বাস্তবসম্মত এবং নেয়সম্মত বিবেচনা করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট পৌঁছে দেবেন। আমরা জানি আমাদের বানবাসি মানুষের দুঃখ দুর্দশা দূর করার জন্য জেলা প্রশাসক ইতিমধ্যে কিছু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কিছু প্রয়াস নিয়েছেন। এজন্য ধন্যবাদ, কিন্তু এই ক্ষুদ্র প্রয়াসে হবে না। এটার জন্য আমরা দুটি প্রস্তাব দিয়েছি। একটি হচ্ছে সর্বকালীন ট্রাস্ট প্রোগ্রাম করতে হবে। যে করেই হোক বিশেষ ব্যবস্থায় এখন যেই জলাবদ্ধতা তা নিরসনের জন্য পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। দ্বিতীয় হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদী।
সাবেক এমপি আরও বলেন, আপনারা জানেন বিগত কিছুদিন যাবত এত বৃষ্টি হচ্ছে যা কল্পনা করা যায় না। এর ফলে ডিএনডি তলিয়ে গেছে, ডিএনডির মানুষের জীবন এখন দুর্বিষহ। ছেলেমেয়েরা, শিশু বাচ্চারা স্কুল মাদ্রাসায় যেতে পারে না। আর মানুষ তাদের কর্মস্থলে যেতে পারে না। মরার উপর খাড়ার গায়ের মত আরেকটি বিষয়, শিল্প কলকারখানা গড়ে ওঠার কারণে শিল্প কলকারখানার বজ্র এখানে প্রতিনিয়ত পানির সাথে মিশে যায়। পানি দূষিত হয়ে এলাকার মানুষের জনসাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিশুরা ছোটবেলা থেকে কেউ কেউ এমন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে যে তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। এই সময় আমরা বারবার প্রশাসকের কাছে দাবি করে আসছি যে এই জলাবদ্ধতা নিরসন করে জনগণকে মুক্তি দেওয়া হোক। কিন্তু এখনো তা করা হচ্ছে না। এই সময় আমরা রাজনীতিবিদ নিশ্চুপ বসে থাকতে পারিনা। বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়ানো এখন আমাদের নৈতিক দায়িত্ব এবং কর্তব্য বলে মনে করি। তার কারনে ফতুল্লা এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমরা এখন রাজপথে আন্দোলনে নামবো। জনগণের দাবিদাওয়া যতক্ষণ পর্যন্ত না বাস্তবায়িত হয় ততক্ষণ পর্যন্ত এই আন্দোলনে আমরা অংশগ্রহণ করব। আমরা বানবাসি মানুষের পাশে আছি। তাদের দুঃখ দুর্দশার পাশে আমরা থাকতে চাই। আমরা সরকারি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে দাবি জানাতে চাই আপনারা আসুন দেখে যান ডিএনডির মানুষ কত নিদারুণ কষ্টের মধ্যে এখন জনাবদ্ধতার কারণে দিন যাপন করছেন। কি কি সমস্যার মধ্যে আছে।
সাবেক এমপি আরও বলেন, ডিএনডির ভিতরে অসংখ্য শিল্প কলকারখানা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এই ডিএনডির এলাকার মানুষ বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে আসছে। তাই ন্যায় সঙ্গত দাবি যে করেই হোক এই জলাবদ্ধতা নিরেশন করতে হবে। আর এর জন্য আমরা দাবি করি যারা এতদিন বলছে বানভাসি মানুষের জন্য সরকার থেকে যারা কোটি কোটি টাকা অর্থ এনেছে সেই অর্থ কোথায় গেল। প্রশাসনের কাছে দাবি এগুলা তদন্ত করে যারা এই অর্থ লুটপাট করে খেয়েছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। এখানে যারা ইউনিয়ন পরিষদে ছিল সরকার থেকে টাকা নিয়েছে, ট্যাক্সের পয়সা তুলেছে সেই টাকা দিয়ে কি করেছে সেগুলোও তদন্ত করে দেখা হোক। এই ১৬ বছর কিভাবে তারা লুটপাট করে খেয়েছে যারা এই লুটপাটের সাথে জড়িত তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমএ হালিম জুয়েল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ-সভাপতি জিএম সাদরিল, এসএম আসলাম, ডিএইচ বাবুল, রওশন আলী, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার মনিরুল ইসলাম, ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র সহ—সভাপতি সুলতান মাহমুদ মোল্লা, সহ— সভাপতি আলাউদ্দিন খন্দকার শিপন, যুগ্ম—সম্পাদক এড. খন্দকার আক্তার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান আলী, ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাসান মাহমুদ পলাশ, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, কাশীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাঈনুল হাসান রতন, মাহাবুবুর রহমান সুমন, এ্যাডঃ হাবিবুর রহমান মাসুম, আশিক মাহমুদ সুমন, নাছির প্রধানসহ আরো অনেকে।