মাফিয়াতন্ত্র ও পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে আরেকটি গণ-অভ্যুত্থান প্রয়োজন: এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম দৃঢ় কণ্ঠে ঘোষণা করেছেন যে, দেশের বিদ্যমান মাফিয়াতন্ত্র ও পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে আরেকটি গণ-অভ্যুত্থান প্রয়োজন এবং এর সূত্রপাত নারায়ণগঞ্জ থেকেই হবে।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকেলে শহরের নিতাইগঞ্জ এলাকা থেকে এনসিপির এই পদযাত্রা শুরু হয়। পদযাত্রার আগে নিতাইগঞ্জে সমবেত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে মো. নাহিদ ইসলাম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মৌলিক পরিবর্তনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের পর বলেছিলাম বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে পরিবর্তন করতে হবে। এই দেশ যে সিস্টেমে চলে এর পরিবর্তন ঘটাতে হবে।”
তিনি নারায়ণগঞ্জকে এই ব্যবস্থার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন। তাঁর কথায়, “এই সিস্টেমের সবচেয়ে ভালো উদাহরণ হচ্ছে এই নারায়ণগঞ্জ। যেখানে পরিবারতন্ত্র, মাফিয়াতন্ত্র, গডফাদারতন্ত্র সব মিলেমিশে একাকার ছিল। নারায়ণগঞ্জের যে সিস্টেম এই একই সিস্টেমে পুরো দেশ এতদিন পরিচালিত হয়েছিল।” নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন যে নারায়ণগঞ্জে কয়েকটি পরিবার বছরের পর বছর ধরে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে দখলদারি, চাঁদাবাজি, গুম এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, “এই মাফিয়া সিস্টেমের সঙ্গে আমরা আর খেলব না। এই মাফিয়াতন্ত্রের বিরুদ্ধে আমরা গণ-অভ্যুত্থান করেছিলাম। তাই খেলার নিয়ম বদলাতে হবে।”
তবে তিনি স্বীকার করেন যে খেলার নিয়ম এখনও পুরোপুরি বদলায়নি। নাহিদ ইসলাম হুঙ্কার দিয়ে বলেন, “নারায়ণগঞ্জে এখনো খেলা বন্ধ হয়নি। এই খেলা বন্ধ করার জন্য আরেকটি গণ-অভ্যুত্থানের জন্য প্রস্তুতি নেন।”
গতকাল রাতে (বৃহস্পতিবার) নারায়ণগঞ্জে ‘জুলাই পদযাত্রা’র তোরণ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান নাহিদ ইসলাম। তিনি এটিকে সন্ত্রাসীদের গণজোয়ার বন্ধ করার অপচেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করেন। নারায়ণগঞ্জের মানুষের প্রতিরোধের ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “জুলাই আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জবাসী বুকের রক্ত দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। এই নারায়ণগঞ্জকে রক্ষা করেছিল। এদিকে নারায়ণগঞ্জ, ওইদিকে সাভার আশুলিয়ায় প্রতিরোধ তৈরি হয়েছিল বলেই ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতে পেরেছিল।” এই কারণেই তিনি নারায়ণগঞ্জের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাসে এই নারায়ণগঞ্জের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।”
