শুক্রবার, জুলাই ৪, ২০২৫
Led01রাজনীতি

না.গঞ্জে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ‘একটি গোষ্ঠী জুলাইকে পকেটস্থ করতে চায়’

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব এড. আব্দুস সালাম বলেছেন, ‘এককভাবে একটি কায়েমী শাসক গোষ্ঠী জুলাইকে নিজেদের পকেটস্থ করতে চায়, তারা জাতিকে নিয়ে একটি বিভ্রান্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়। ন্যায় সঙ্গত কারণে জনগণের কল্যাণে কোনভাবে আপস না করে যদি কোন দল আন্দোলন করে তাহলে সেটা চূড়ান্ত আন্দোলনের রূপ নিবেই। যেটা হয়েছিল স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে। সে আন্দোলনে ডঃ মিলনের গায়ে লাগা একটি বুলেটের কারণেই এরশাদের পতন হয়েছে। যেমন ভাবে জন্মের পূর্ব শর্ত মৃত্যু তেমনই একটি বৈধ আন্দোলনের তার চূড়ান্ত রূপে যাবে এতে কোন সন্দেহ নাই।’

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকালে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে জুলাইয়ের আন্দোলনের স্মরণে বিএনপির রক্তদান কর্মসূচি পালন করা হয়। ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের আয়োজেন এ কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, শুধু জুলাই আগস্টের মধ্যে দিয়ে হাসিনা পালায় নি, চৌধুরী আলমের মতো ৪০০ থেকে ৫০০ নেতাকর্মীরা গুম-খুন হয়নি। বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে শেখ হাসিনা প্রায় ১৫০০ নেতাকর্মীকে খুন করেছে। কোটা আন্দোলনের শুধু ছাত্ররা ৫ আগস্ট এর পরিসমাপ্তি ঘটায় নি, এ পরিসমাপ্তি ঘটনার পিছনে ইতিহাস আছে। এ আন্দোলন শুরু হয়েছিল গণতান্ত্রিক আন্দোলন থেকে। সে আন্দোলনে অনেক নেতাকর্মী গুম খুন হত্যা হয়েছে। এখানে যে কয়জন নেতাকর্মীরা বসে আছেন সবার নামে মামলা আছে শুধু জুলাইকে কেন্দ্র করে নয়। সেই প্রথম থেকে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার নির্দেশনা ও তারেক রহমানের নেতৃত্ব থেকেই চূড়ান্ত ফল অনুযায়ী ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়েছে। কোটা আন্দোলনের মধ্যে গণতান্ত্রিক শর্ত ছিল না, কোটা আন্দোলনে স্বৈরাচারী হাসিনার প্রথম হটাতে হবে এমন শর্ত ছিল না। কোটা আন্দোলন ছিল শুধুমাত্র একটি যুক্তিসঙ্গত দাবি নিয়ে। সেটা ছিলো একটি বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং এই দাবির প্রতি আমরাও সমর্থন জানিয়েছি। কোটা আন্দোলনের ভাইদের আটক করা হলো, তারা ডিবির অফিসে গেলেন, সেখান থেকে বলা হলো আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়েছে। কিন্তু তারা তো গণতান্ত্রিক আন্দোলন প্রত্যাহার করেনি। খালেদা জিয়া যদি স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সাথে আপোষ করতো তাহলে ১০ বছর সাজাও হয় না। খালেদা জিয়া আপোষ বিশ্বাস করেনি বলেই তাকে কারাগারে যেতে হয়েছে, মৃত্যুর মুখোমুখি করা হয়েছে। তারপরও সে আপোষ করে নি।

কেন্দ্রীয় বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, শেখ মুজিবুর পালিয়ে গিয়েছিল বলেই জিয়াউর রহমানের আবির্ভাব হয়েছে। জিয়াউর রহমান সেদিন বুঝেছেন যে কোন দলের দিকে না তাকিয়ে স্বাধীনতার দিকে ঘোষণা দিতে হবে। তাই একাত্তরে সে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দেন। এখানেই শেখ মুজিবুর জিয়াউর রহমানের মধ্যে আদর্শিক মতপার্থক্য রয়েছে। একজন পালিয়ে গেলেন আরেকজন জনগণের সাথে থেকে যুদ্ধ ঘোষণা করলেন। এই বিগত ১৬ বছরে আমরা একটি মাসও ঘরে থাকতে পারিনি। আড়ালে থেকেও আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম, অংশে ছিলাম। কারণ জানি আমরা ঘরে থাকলে প্রতিনিয়ত আটক হব। শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পক্ষে ছিলেন না। স্বাধীনতার পক্ষে থাকলে ১৯৭০ এর নির্বাচন অংশগ্রহণ করতেন না। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে শেখ মুজিব ভুট্টু ও ইয়াহিয়ার সাথে বসে কথা বলেছিলেন । তারা পার্লামেন্ট গঠন করার কথাবার্তা দেনদরবার করেছিলা। শেখ মুজিব কখনো অখন্ড পাকিস্তান চাননি। সে স্বাধীনতা চাইনি বলে আতাত করে চলে গেছে এবং জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেছিলেন। জিয়াউর রহমান একজন আর্মি ছিলেন। সে জানতেন যদি তার স্বাধীনতার ডাকে পূর্ব পাকিস্তান সাড়া না দেয়, তাহলে কোর্ট মার্শাল হওয়ার মাধ্যমে তার ফাঁসিও হতে পারে। তারপরও সে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে হলেও স্বাধীনতার ডাক দিয়েছেন। তদ্রুপ একই ঘটনা ঘটলো, খালেদা জিয়ার জনগণের সাথে রয়ে গেল শেখ হাসিনা পালিয়ে গেল। একদিকে একটি পরিবার জনগণের সাথে বেইমানি করে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, অন্যদিকে আরেকটি পরিবার জনগণের পক্ষে থেকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বারবার কাজ করেছে। যখন কোটা আন্দোলনে ডিবির অফিসে বসে প্রত্যাহার করে নেওয়া হলে। তখন তারেক রহমান ঘোষণা দিলেন আমরা কোটা আন্দোলন দিয়ে নয়, সরাসরি সরকারের পতন দিয়ে দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব। একই ঘোষণা নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দিয়েছেন। তাদের এই ঘোষণার পর পরবর্তীতে ৫ই আগস্ট স্বৈরাচারী সরকার শেখ হাসিনা পালিয়েছে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, যুগ্ম আহবায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু প্রমুখ।

RSS
Follow by Email