সচল হলেও ভোগান্তি কমেনি নগরীর নবাব সিরাজউদ্দৌলা সড়কে
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: সেই আগের মতো সড়কের পাশে জমেছে ময়লার ভাগাড়, রয়েছে গর্ত ও সামান্য বৃষ্টিতেই কাদা মাটির স্যাঁতসেঁতে অবস্থা। সাথে থাকছে তীব্র দুর্গন্ধ ও রোগ জীবানু। রাত হলে সড়কের একটি বড় অংশে থাকেনা ল্যাম্পপোস্টের আলো। অন্ধকারে কোন দূর্ঘটনা বা ছিনতাই হওয়ার আশংঙ্কায় রাতে অনেকে এই সড়ক এড়িয়ে চলেন। মাত্র কয়েক মাস আগে পবিত্র রমজানের মধ্যে সংস্কারের কাজ ধরলে সম্পূর্ন বন্ধ করে দেওয়া হয় এই সড়কটি। এরপর কোরবানীর ঈদের আগে জণগনের স্বার্থে সচল করা হলেও এখনো কমেনি ভোগান্তি।
শনিবার (২৮ জুন) এমন দৃশ্য দেখা মেলে নগরীর নবাব সিরাজউদ্দৌলা সড়কের। বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, কাদামাটি, ময়লা ও বড় বড় গর্ত যেন এ সড়কের নিত্যদিনের চেহারা ছিলো। এ ভোগান্তি কমাতে সড়কের কালিরবাজার ফ্রেন্ডস মার্কেটের সামনে এবং কুমুদিনি আমলাপাড়া মোড়ের সামনে বিশাল গর্ত করে পানি নিষ্কার্শনের জন্য সংস্কার করা হয়। তবে কাজ শেষে গর্তগুলো শুধু ইট-বালু-মাটি ফেলে ভরাট করা হয়েছে। এতে সামান্য বৃষ্টিতে জমছে পানি, হচ্ছে কাদা-মাটি। দিনের বেলা এতো ভোগান্তির সাথে রাতে এই সড়কে যুক্ত হয় অন্ধাকার। সড়কে ল্যাম্পপোস্টগুলো বন্ধ থাকায় চাড়ারগোপ থেকে বিআইডাব্লিউটিসির গেট পর্যন্ত সড়কে দেখা যায়না প্রায় কিছুই।
এসময় আমলাপাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা পারভেজ মজুমদার অভিযোগ করে বলেন, মেট্রোহল থেকে রাস্তাটা যেমন সুন্দর, সেটার সাথে সড়কের এই অংশের কোন মিল নেই। নগরী বঙ্গবন্ধু সড়কের পর সবথেকে ব্যস্ততম সড়ক এটা। এই সড়কের শেষ মাথায় রয়েছে টানবাজার, বন্দর ঘাট, লঞ্চ টার্মিনাল ও বাস টার্মিনাল। যেখানে এই সড়কটা এতো গুরুত্বপূর্ন সেখানে কেন এটাকে এতো অযত্ন করা হয় জানা নেই। আগে শুধু বড় বড় গর্ত হতো আর বালি ইট-সিমেন্টের টুকরা দিয়ে যাইতো। এরপর অনেক সময় নিয়ে রাস্তা বন্ধ রেখে সংস্কার করলো। কিন্তু শেষমেষ পিচ ডালাই না দিয়েই রেখে দিসে। এটা আর কবে ঠিক হবে জানা নাই। আমরা স্থানীয়রা অনেকেই সিটি কর্পোরেশনে বলেছি এখানের ময়লার স্পটটা সরিয়ে নিতে। কিন্তু তাও এখানে ময়লা ফেলা হয় আর আমাদের দূগন্ধ সহ্য করতে হয়। ময়লার এই দুর্গন্ধের কারণে স্বাস্থ্য খারাপ হচ্ছে বলে অভিযোগ করে তিনি।
আফজাল হোসেন নামের এক পথচারী বলেন, শুধু এখানেই না, পত্রিকায় পড়েছি এই নারায়ণগঞ্জের মতো এই ছোট্ট শহরের প্রায় ২০-২২ টি স্থানে প্রতিদিন ময়লা ফেলা হয়। সবগুলো স্কুল-কলেজ-বাজার, বাসাবাড়ি বা হাসপাতালের সামনে। সারাদিন ময়লা সেখানে জমতে থাকে আর দুর্গন্ধ-রোগ জীবাণু ছড়াতে থাকে। পরের দিন ভোর সকালে এসে সিটি কর্পোরেশনের লোকরা এসে ময়লা নিয়ে যায়। তারপর আবার সারাদিন একই চিত্র। সিটি কপোরেশন নিয়ে যায় বলেই মানুষ এই জায়গাগুলোতে ময়লা ফেলে। এই ময়লার কারণে এখানে বাসিন্দাদের থাকতে অনেক কষ্ট হয়, তাছাড়া ভাড়াটিয়ারাও থাকতে চায় না। যেখানে সেখানে ময়লার স্তূপের কারণে তো আমাদের বাচ্চারা স্বাস্থ্য ঝুকিঁতেও পড়ছে। নারায়ণগঞ্জে অনকে রাজনীতিবিদরা উন্নত বা ধনী শহর বলে থাকেন। অন্যান্য ধনী শহরে প্রধান সড়কে রাস্তার পাশে ময়লার স্তুপ থাকে না।
টানবাজারের এক মুদি ব্যবসায়ি হুমায়ুন বলেন, সামান্য বৃষ্টিতেই এই রাস্তায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। সাথে থাকে কাদামাটি। এমন অবস্থা হয় যেন পথচারীরা হেটে যাবে সেই জায়টা থাকে না। গ্রামের কাঁচা রাস্তায় কাঁদা-ময়লা থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু একই অবস্থা এ শেহরের সড়কে হলে কিভাবে মানা যায়? বৃষ্টি হলেই পানি জমে যাবে, কাঁদা-ময়লার মধ্য দিয়ে আমাদের হেটে যেতে হবে। একে তো সড়রক ছোট, তাই গাড়ির সাথে ধাক্কা না খেতে চাইলে ময়লার উপর দিয়ে হেটে যেতে হয়, দূর্গন্ধ সহ্য না করতে পারলে গাড়ির সাথে ধাক্কা খেতে হয়। আমার দোকান বন্ধ করে বাসায় ফিরতে ফিরতে ১০টা বা ১১টা বাজে। কিছুদিন ধরে দেখছি এই সড়কের চাড়ারগোপ থেকে মেট্রোহল পর্যন্ত রাস্তার লাইট জ্বালানো হয় না। এই সময় এমনিতে মানুষ কম থাকে, ছিনতাই বা ডাকাতির ভয়ও থাকে। এনসিসিতে এখন কাউন্সিলর নেই, তাই যারা দায়িত্বে আছেন তাদের কাছে অনুরো করবো আগের মতো যেন জণগনকে ভোগান্তি পোহাতে না হয় সেই দিকে নজর রাখবেন। না হয় এই পরিবর্তনের মূল্য থাকবে না।