পরীক্ষার প্রথম দিনে যানজট ও বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ শিক্ষার্থীদের
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে নারায়ণগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়েছে এইচএসসি ও সমমানের ১ম পরীক্ষা। সকালে থেকেই কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য পরীক্ষার্থীদের মাঝে ছিলো উৎসাহ। সড়কে পথে রিকশায় বা অটোতে বই নিয়ে পড়তে পড়তে যেতে দেখা গেছে অনেক শিক্ষার্থীকেই। পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর হলের বাহিরে বসে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে অভিভাবকদের। প্রথম পরীক্ষায় কেমন কমন পড়লো, কেমন পরীক্ষা হলো সেই নিয়ে উদ্দীপনা বিরাজ করছিলো তাদের মধ্যে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকালে নগরীর চাষাড়া, কালিরবাজারসহ আশে পাশের বিভিন্ন জায়গায় দেখা মেলে এমন চিত্রের। সড়কে সকাল থেকে বিভিন্ন জায়গায় যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা এ যানজট নিরসনে কাজ করতে দেখা গেছে। নারায়ণগঞ্জ কলেজ, সরকারি তোলারাম কলেজ ও সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রের বাহিরে সময়ের অনেক আগেই উপস্থিত হতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।
পরীক্ষা শুরুর আগে তাহসীন নামের এক পরীক্ষর্থী বলেন, আমার বাসা সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড মুক্তিনগর এলাকায়। আমার পরীক্ষার সিট পরেছে নারায়গঞ্জ কলেজে। সেই মুক্তিনগর থেকে আসতে হবে বলে হাতে সময় নিয়ে বের হয়েছি। এছাড়া প্রথম পরীক্ষায় সিটও খুজে নিতে হবে। তবে আসার পথে কিছু কিছু জায়গায় জ্যামে বসে থাকতে হয়েছে। পরীক্ষা চলছে বলে কিছু অটোতে ভাড়া বেশিও রাখছে। আজ এসে যতোটুকু বুঝলাম বাকি পরীক্ষাগুলোতে এভাবেই হাতে অতিরিক্ত এক থেকে দেড় ঘন্টা নিয়ে বের হতে হবে। পরীক্ষার প্রিপারেশন ভালো নিয়েছি, তবে প্রশ্ন কেমন হয় সেটা জানি না। আশা করছি ভালো হবে।
পরীক্ষা শেষে সিনথিয়া রুহি নামের এক পরীক্ষার্থী বলেন, আজকের প্রথম পরীক্ষা নিয়ে কিছুটা নার্ভাস ছিলাম। তবে হলে প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর কিছুটা আত্মবিশ্বাস আসছে। পরীক্ষা শেষমেশ ভালো হয়েছে। শিক্ষকরাও ভালো এবং বিনয়ী ছিলেন। আগামী পরীক্ষাগুলো এরকম হলে ভালো রেজাল্ট পাবো বলে আশা রাখি।
এক শিক্ষার্থীর বাবা তাইজুল ইসলাম বলেন, বড় মেয়ে এবার পরীক্ষা দিচ্ছে, তাই তার সাথে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে এসছি। মেয়ের ছোট থেকে প্রতিটা বোর্ড পরীক্ষা বা বার্ষিক পরীক্ষায় সাথে আসার চেষ্টা করি। আজও তাই ছিলো। মেয়েটা পরীক্ষার হল থেকে বের হয়ে বড় হাসি দিয়ে বলেছে পরীক্ষা ভালো হয়েছে। ওর খুশিতেই আমি খুশি। বাসা বন্দর হওয়ায় পরীক্ষার হলে আসতে আমাদের নদী পার হতে হয়েছে। পরীক্ষার সময়গুলোতে নদী পার হওয়ার সময় ট্রলারে চাপ বেশি থাকে। স্বাভাবিকের তুলোনায় ট্রালারে বেশি লোক একবারে উঠে, যেটা একটু রিস্কি হয়ে যায়। প্রশাসনের বা সংশ্লিষ্টদের কাছে অনুরোধ থাকবে, যেহেতু আমাদের বন্দরঘাটে কোন সেতু নেই ট্রলার বা নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে, তাই এখানে নৌকার ও ট্রলারের সংখ্যা কিছুটা বাড়িয়ে দেয়। সাথে নিরাপত্তার কিছু ব্যবস্থা রাখে। বন্দর থেকে আমাদের মতো অনেক শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা এই নদী পার হয়ে পরীক্ষা হলে আসেন।
পরীক্ষা বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি শাখা) ফারাহ ফাতেহা তাকলিমা বলেন, “নারায়ণগঞ্জে প্রথম দিনের পরীক্ষা সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বছর জেলার ১৯টি কেন্দ্রে এইচএসসি এবং ৭টি কেন্দ্রে সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পরীক্ষাকে ঘিরে প্রতিটি কেন্দ্রের আশেপাশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে, যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিতে পারে।
প্রসঙ্গত, সকাল ১০ টা থেকে অনুষ্ঠিত এই পরীক্ষায় জেলার মোট ২৬টি পরীক্ষা কেন্দ্রে অংশ নেয় মোট ২১ হাজার ৭১১ জন পরীক্ষার্থী। তবে মোট পরীক্ষার্থীদের এর মধ্যে ১ম পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলো ৩৫৭ জন।