মহাসড়কে যানজট নেই, চলছে গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ঈদের আর মাত্র একদিন বাকি। এরই মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ প্রিয়জনদের কাছে পৌঁছে গেছেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে যারা যাত্রা করছেন, তারা পড়েছে এক তিক্ততায়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট নেই বললেই চলে, তারপরও গণপরিবহন চালকরা যাত্রীদের থেকে দ্বিগুণ, এমনকি তিনগুণ পর্যন্ত অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। শুধু মহাসড়ক নয়, নারায়ণগঞ্জ শহরের ভেতরের গাড়ির অভাবে ভোগান্তি ও বাড়তি ভাড়া আদায়ের একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। যানজট না থাকলেও, এই ভাড়া নৈরাজ্য ঈদের আগের দিনের আনন্দ ম্লান করে দিচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের মনে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
মহাসড়কে স্বস্তি, পকেটে চাপ
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে ঘরমুখো যাত্রীরা নির্বিঘ্নে গন্তব্যের দিকে ছুটছেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারির কারণে যানজটের সেই চিরায়ত ভোগান্তি এবার অনুপস্থিত। তবে, এই স্বস্তির উল্টো পিঠেই রয়েছে ভাড়ার যন্ত্রণাদায়ক বাস্তবতা। দূরপাল্লার বাসগুলো অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অনেক বেশি টাকা নিচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন যাত্রীরা।
যাত্রীরা জানাচ্ছেন, যানজটের কষ্ট এড়াতে পারলেও, পকেট কাটা যাচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়ায়। যাত্রীদের একজন বলেন, “যানজট না থাকায় যেখানে কিছুটা স্বস্তি পাওয়ার কথা, সেখানে অতিরিক্ত ভাড়া আমাদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে।” ঈদের আগে শেষ মুহূর্তে বাড়ি ফেরার তাড়া থাকায় অনেকে বাধ্য হয়েই এই অন্যায় মেনে নিচ্ছেন।
শহরের গণপরিবহনেও একই চিত্র
শুধু মহাসড়কই নয়, নারায়ণগঞ্জ শহরের ভেতরের গণপরিবহনেও একই অবস্থা। শহরের প্রধান পয়েন্টগুলোতে যানজট না থাকলেও, যাত্রী ও গাড়ির সংখ্যার মধ্যে বড় ধরনের অসঙ্গতি দেখা যাচ্ছে। এতে বাস সংকট তীব্র হয়েছে। আর এই সুযোগে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা (মিশুক) এবং অন্যান্য ছোট যানবাহনের চালকরা যাত্রীদের জিম্মি করে দ্বিগুণ বা তারও বেশি ভাড়া আদায় করছেন। সীমিত আয়ের মানুষজন বাধ্য হয়েই এই বাড়তি ভাড়া গুনছেন।
চালকদের দাবি, পুলিশের পর্যবেক্ষণ
অন্যদিকে, যাত্রীদের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাস চালকরা। তারা জানান, যাত্রীদের কাছ থেকে কোনো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে না। তাদের দাবি, “যাত্রীদের খুশি মতোই ভাড়া আদায় হচ্ছে এবং ঈদের জন্য কিছু টাকা চেয়ে নেওয়া হচ্ছে।”
তবে এই বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) অংক্যহলা মারমা জানান, “আমরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি। কেউ অভিযোগ করলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নিচ্ছি। এছাড়া আমাদের পুলিশ সদস্যরা টহল দিচ্ছি। যাতে কেউ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করতে পারে।”
যানজট নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে ঈদের আগের এই দিনটি যাত্রীদের জন্য তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ভোগান্তি নিরসনে দ্রুত হস্তক্ষেপ না করলে সাধারণ মানুষের ঈদ আনন্দ ফিকে হয়ে যেতে পারে।