র্যাবের অভিযানে ২২ মামলার আসামি কুখ্যাত ডাকাত সর্দার ‘নাক বোঁচা হালিম’ গ্রেপ্তার
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: সিদ্ধিরগঞ্জ মৌচাক এলাকা থেকে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার আব্দুল হালিম ওরফে নাক বোঁচা হালিম ওরফে আলিম (৫০) কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১। বাদল বাহিনীর প্রধান হিসেবে পরিচিত এই কুখ্যাত ডাকাতের বিরুদ্ধে ১০টি ডাকাতিসহ মোট ২২টি মামলা রয়েছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শুক্রবার (২৩ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় র্যাব-১১’র অধিনায়ক (সিও) লেঃ কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তারকৃত বোঁচা হালিম বরগুনা জেলার সদর থানার জাকির তবক গ্রামের বাসিন্দা আলতাফ চৌকিদারের ছেলে।
র্যাব-১১’র অধিনায়ক লেঃ কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গত ২০২৪ সালের ২৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানাধীন সস্তাপুর (গাবতলার মোড়) এলাকার ব্যবসায়ী ঢাকা টেক্সটাইলের মালিক রেজাউল করিম মালার বসত বাড়ি থেকে ৫০ ভরি স্বর্ণালংকারসহ আনুমানিক সাড়ে ৭ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় একদল ডাকাত। এ ঘটনায় ব্যবসায়ী রেজাউল করিম মালার ছেলে মোঃ আলাউদ্দিন ফতুল্লা থানায় একটি ডাকাতি মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনতে র্যাব-১১ গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। উক্ত মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন মৌচাক বাস স্টেশন এলাকা থেকে বোঁচা আলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাত সর্দার নাক বোঁচা হালিম র্যাবকে জানায় যে, সে এবং তার দল ২০১২ সাল থেকে অদ্যাবধি দেশের বিভিন্ন জেলায় ডাকাতি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। তারা সাধারণত শহরের বিত্তশালী এবং অর্থনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বাসা-বাড়িকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে ডাকাতি করতো। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, তার দলে ৭-১৫ জন সদস্য রয়েছে যাদের প্রায় সবাই বরগুনা জেলার সদর থানা এবং আমতলী থানার স্থায়ী বাসিন্দা। তবে তারা বেশিরভাগ সময় রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ফরিদপুর, বরগুনা, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী ও মুন্সিগঞ্জ জেলা সমূহে ডাকাতি কার্যক্রমে লিপ্ত ছিল।
ডাকাত সর্দার হালিমের ভাষ্যমতে, ডাকাতি কাজে তারা আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করতো। গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল হালিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১০টি ডাকাতি, অস্ত্র আইনে ২টি, হত্যাচেষ্টা মামলায় ৪টি, নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় ২টি, মাদক মামলায় ২টি এবং মানবপাচার মামলায় ১টিসহ সর্বমোট ২২টি মামলা রয়েছে। এছাড়াও সে গত ২০১২ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ১৫টি ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত ছিল বলে স্বীকার করেছে। সে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের একজন সক্রিয় সদস্য।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুল হালিম উল্লিখিত ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। সে আরও স্বীকার করে যে, ডাকাতির লুন্ঠিত মালামাল থেকে সে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ভাগ পেয়েছিল। এই ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে র্যাব-১১’র অভিযান অব্যাহত রয়েছে।