দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান, আনন্দঘন পরিবেশে বিকেএমইএ’র ভোটগ্রহণ
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: দীর্ঘ বারোটি বছর যেন অপেক্ষার বাঁধ! অবশেষে সেই বাঁধ ভেঙে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার ভোটকেন্দ্রে সকাল থেকেই বইয়ে এসেছে আনন্দ আর উদ্দীপনার ঢেউ। বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ’) র নির্বাচন যেন এক আনন্দযজ্ঞে পরিণত হয়েছে।
সকাল ৯টা থেকে একটানা বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলেছে ভোটগ্রহণ পর্ব, যেখানে আগামী (২০২৫-২০২৭) সালের জন্য তাদের নতুন ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের নির্বাচিত করতে নিজেদের মূল্যবান ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন ৫৭২ জন ভোটার। এই নির্বাচনের প্রেক্ষাপট মনে করিয়ে দেয় সেই ২০১০ সালের স্মৃতি, যখন শেষবার বিকেএমইএ’র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
আজকের সকালটা ছিল অন্যরকম। বিকেএমইএর সদস্যরা, বিভিন্ন গার্মেন্টসের কর্ণধাররা যেন উৎসবে মেতে উঠেছেন। দীর্ঘ বিরতির পর এমন প্রাণবন্ত পরিবেশে ভোট দিতে পেরে তারা বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। ৩৫টি পরিচালক পদের জন্য লড়ছেন মোট আটত্রিশ জন প্রার্থী। একদিকে বর্তমান সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমের নেতৃত্বে গঠিত প্রগ্রেসিভ নীট এলায়েন্সের ৩৫ জন প্রার্থী, অন্যদিকে স্বতন্ত্রভাবে তিনজন প্রার্থী নির্বাচনী ময়দানে নিজেদের ভাগ্য পরীক্ষা করছেন।
দীর্ঘদিন পর এমন উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে পারার আনন্দ যেন ব্যবসায়ীদের চোখেমুখে দ্যুতি ছড়াচ্ছে। তাদের একটাই চাওয়া, এই আনন্দঘন ভোটের আবহ যেন চিরস্থায়ী হয়। তারা মনে করেন, এমন পরিবেশে একদিকে যেমন ভোটারদের মূল্যায়ন করা হয়, তেমনি প্রার্থীরাও সকলের কাছে নিজেদের কাজের জবাবদিহি করার সুযোগ পান।
স্বতন্ত্র প্রার্থী মনির হোসেন শেখের কন্ঠেও শোনা গেল আশার বাণী। তিনি স্পষ্ট করে জানালেন, তাদের তিনজনের অংশগ্রহণের কারণেই বিকেএমইএ’র এই নির্বাচন এক ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে, সৃষ্টি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশের। নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক না কেন, তারা তা মাথা পেতে নেবেন। তবে তাদের জোরালো দাবি, প্রতি বছর যেন এই আনন্দমুখর পরিবেশে ভোটের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের যোগ্য নেতা নির্বাচিত হন।
অন্যদিকে, প্রগ্রেসিভ নীট অ্যালায়েন্সের দলনেতা মোহাম্মদ হাতেম আত্মবিশ্বাসের সুরে বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে বিকেএমইএর সদস্যদের সেবা করে তিনি ভোটারদের মন জয় করে রেখেছেন। তার দৃঢ় বিশ্বাস, এবারও তিনি সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত হবেন। সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হলে বিকেএমইএকে একটি গতিশীল ও ব্যবসাবান্ধব প্রতিষ্ঠানে রূপ দেওয়ার অঙ্গীকার করেন তিনি। শুধু তাই নয়, বিকেএমইএ-ভুক্ত ব্যবসায়ীদের যেকোনো সমস্যা সমাধানে সরকারের সাথে দর কষাকষি সহ সকল প্রকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপে অংশ নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।
এই নির্বাচন যেন কেবল একটি নির্বাচন নয়, বরং দীর্ঘ নীরবতার পর বিকেএমইএ অঙ্গনে এক নতুন সুর, এক নতুন আশার সঞ্চার করেছে। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা, দেখার পালা, এই উৎসবের শেষে কারা হাসিমুখে বিজয়ের মালা পরেন।