মঙ্গলবার, এপ্রিল ২২, ২০২৫
রাজনীতি

সেলিম মাহমুদের মুক্তির দাবিতে শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের সমাবেশ

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: জেলা গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি সেলিম মাহমুদের মুক্তির দাবিতে সমাবেশ করেছে জেলা শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদ। সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকাল ৫টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এ সমাবেশ ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক আবু নাঈম খান বিপ্লবের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় নেতা হাফিজুল ইসলাম, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি হাফিজুর রহমান, বিপ্লবী শ্রমিক সংহতির জেলার সভাপতি শহীদুল আলম নান্নু, গার্মেন্টম শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি অঞ্জন দাস, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র জেলার সভাপতি শাহীন, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট জেলার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কাদির।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৫ এপ্রিল দিবাগত রাত দেড়টায় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার নিজ বাসা থেকে দরজা ভেঙ্গে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাংস্কৃতিক সম্পাদক এবং গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ কে কোন গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই তুলে নিয়ে রুপগঞ্জ থানায় সোপার্দ করে ঐ এলাকায় দায়িত্ব পালনকারী সেনাবাহিনির সদস্যরা, গ্রেপ্তারের সময় সেলিম মাহমুদের পরিবারের সদস্যদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা হয় যা মানবাধিকারের লঙ্ঘন। সেলিম মাহমুদ কে রবিনটেক্স ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের এবং পুলিশের দায়েরকুত দুটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ১২ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে যার একটি মামলায় ১৯৭৪ সালের কালো আইন বিশেষ ক্ষমতা আইনের ধারা যুক্ত করা হয়েছে। ৮ এপ্রিল শ্রমিক ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে রবিনটেক্স শ্রমিকদের আন্দোলন কে দমন করার উদ্দেশ্যে ৭৮ জন শ্রমিকের নাম উল্লেখসহ কয়েকশো শ্রমিককে অজ্ঞাত আসামি করে দায়েরকৃত এই মামলায় ইতিপূর্বে রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ২২ জন শ্রমিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। দায়েরকৃত মামলায় সেলিম মাহমুদের নাম ছিল না। শুধুমাত্র রবিনটেক্স কর্তৃপক্ষের অসৎ শ্রম আচরণ ও শ্রমিক নিপীড়নের প্রতিবাদে শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনে সংহতি জানানো এবং নিপীড়িত শ্রমিকদের আইনি সহযোগিতার ব্যবস্থা করায় সেলিম মাহমুদ কে গ্রেফতার করে পূর্বে দায়েরকৃত মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে তারা পূর্বের ফ্যাসিষ্ট সরকারের লুটপাটকারী মালিকদের পক্ষ নিয়ে শ্রমিক অধিকারহরণের নীতির ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে চায়।

নেতৃবৃন্দ বলেন, দায়েরকৃত মামলার এজাহারে উল্লেখ আছে যে, রবিনটেক্স কর্তৃপক্ষ ২৯ মার্চ ১৬ জন শ্রমিককে চাকরিচ্যূত করে অথচ ১৩ মার্চ শ্রম মন্ত্রনালয় থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে ঈদের আগে কোন শ্রমিক কে চাকরিচ্যূত করা যাবেনা। এমনকি ৮ এপ্রিল শ্রম সচিব হঁুশিয়ারী দিয়েছিলেন ঈদের পরে শ্রমিক ছাঁটাই করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ফলে, ঈদের আগে রবিনটেক্স কর্তৃপক্ষ কর্তৃক শ্রমিকদের চাকরিচ্যূত করা সরাসরি শ্রম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের লঙ্ঘন। তাছাড়া, শ্রমিকদের ইউনিয়ন করার অধিকার বাধাগ্রস্ত করতে ইউনিয়ন নিবন্ধন প্রক্রিয়া অনিস্পন্ন থাকা অবস্থায় শ্রমিক ইউনিয়নের কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যূত করার চেষ্টা শ্রম আইনেরও লঙ্ঘন। শ্রমিককে সংগঠিত হতে বাধা দেওয়া, দরকষাকষির সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার অর্থাৎ শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা অব্যাহতভাবে মালিক কতৃর্পক্ষ চালিয়ে যাচ্ছে। তারই অংশ সেলিম মাহমুদকে গ্রেফতার করা। রবিনটেক্সে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ মুখোশধারী শ্রমিক নিপীড়ক।

নেতৃবৃন্দ সাবধানবানী উচ্চারণ করেন যে, অবিলম্বে সেলিম মাহমুদসহ রবিনটেক্সের গ্রেফতারকৃত শ্রমিকদের মুক্তি দেওয়া, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, চাকরিচ্যূতদের পুনর্বহালসহ উদ্ভুত শিল্প বিরোধের সম্মানজনক সমাধানের পদক্ষেপ না নিলে সারাদেশে, প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট সকল স্থানে মালিক এবং প্রশাসনের অসৎ শ্রম আচারণ এবং নিপিড়নের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।

RSS
Follow by Email