অভিজাত থেকে ফুটপাত, নগরী জমেছে ঈদের কেনাকাটায়
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ঈদের বাকি আর হাতে গোনা ২ সপ্তাহ। তাইতো ঈদকে সামনে রেখে কেনাকাটায় নেমে পড়েছেন নগরীর জণসাধারণ। বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ী আর হকাররা পাল্লা দিয়ে বিক্রি করছেন পণ্য। তাদের হাক-ডাকে মুখরিত থাকছে পুরো নগরী। সারাদিন বিভিন্ন বিপনী বিতানে ভিড় তুলোনামূলক কম থাকলেও ভিড় বাড়ে ইফতারের পরে। পরিবারের সদস্যদের জন্য পছন্দমতো জামা, জুতা, আনুষঙ্গিক কেনাকাটা করতে বের হন নগরবাসী। সারাদিন ঘোড়াফেরার পর অনেকেই ইফতার করেন বাহিরে। নগরীর চারদিকে বিরাজ করছে ঈদের আমেজ।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) নগরীর আলমাস পয়েন্ট, ডিআইটি মার্কেট, সান্তনা মার্কেট, সমবায় মার্কেট, মার্ট টাওয়ার, কালিরবাজারের ফ্রেন্ডস মার্কেটসহ বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতের দোকানগুলোতে দেখা যায় এমন চিত্র। ঈদের জন্য জামা, জুতো, নারীদের প্রসাধনী, পাঞ্জাবিসহ নানান জিনিস কিনতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। শুধু তাই নয় ঈদ উপলক্ষে ভিড় দেখা গেছে বিভিন্ন ক্রোকারিজ শপও। ঈদ যতো কাছাকাছি আসছে, ভিড় ততো বাড়ছে। শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী মানুষ কেনাকাটা করতে ভিড় জমাচ্ছেন দোকানগুলোতে। ক্রেতাদের চাহিদা ও রুচির বিষয়টি মাথায় রেখে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ সব বয়সী মানুষের জন্য নতুন নতুন ডিজাইনের পোশাক আনা হয়েছে এবারের ঈদের কালেকশনে। প্রতিদিনই বাড়ছে বেচাকেনা। তবে শুরুর দিকে শিশু ও নারীদের পোশাক বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এসময় ঈদের কেনাকাটা করতে আসা ফাহিমা বলেন, ‘প্রতি বছর নিজের পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনের জন্য কেনাকাটা করি৷ কিছুদিন পর ভিড় আরও বেড়ে যাবে। তাই আগেই কেনাকাটা সেরে ফেললাম। প্রতিবার বিভিন্ন ড্রেস ট্রেডিংএ থাকে, বিগত বছরে পাখি ড্রেস, মাসাককলি, লং ডেস ও গাউন ছিলো। এবার চারদিকে পাকিস্তানি ড্রেস বেশি দেখছি। যদি পছন্দ হয় তাহলে সেটাই কিনবো।’
ক্রেতা বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘প্রতিবছর বাবা আমাকে ও আমার বোনকে শার্ট-প্যান্ট, জামা কিনে দিতো। এবার আমি এসেছি বাবা মা বোনকে নিয়ে, তাদের জন্য কিছু কিনবো। এই ঈদটা আমার কাছে একটু বেশি স্পেশাল। বিকেলের আগে বের হয়েছি যাতে ইফতারের আগে কেনাকাটা শেষ করতে পারি। আশেপাশের দোকার ঘুড়ছি, আপাতত ছোট বোন আর মায়ের জন্য কেনা হয়েছে বাকিটুকু দেখছি।’
আরেক ক্রেতা মিনহা তাবাসসুম বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে গ্রামের বাড়ি চলে যাবো। এজন্য এখন কাপড় কিনতে আসা৷ পরিবারের লোকজনের জন্য কিনে নিয়ে যাবো৷ তবে ঈদে মার্কেটের জামার দাম অনেক চাচ্ছে। দোকানে যে শার্ট ১২০০ টাকা চায় সেখানে ফুটপাতে ৫০০ টাকা হলে দিয়ে দেয় তাই এখানে আসা। ফুটপাতে দোকান ভাড়া নাই, কমচারী থাকে না তাই শার্ট-প্যান্টের দাম কম থাকে। তাছাড়া চাষাড়া থেকে একদম উকিলপাড়া পর্যন্ত অনেক দোকান বসে। সাথে রিভারভিউ বা হকারর্স মার্কেট তো আছেই। এখানে একসঙ্গে অনেক দোকান থাকায় পছন্দমতো সামর্থের মধ্যে কেনাকাটা করা যায়।’
বিক্রেতা শাহীন হোসেন বলেন, ‘গত শুক্রবার থেকেই ঈদের কেনাবেচা মূলত শুরু হয়েছে। পুরোদমে বিক্রি এখনো শুরু হয়নি। এখনো ঈদের বাকি আরও ১৩ দিন। অন্যবারের তুলনায় এবার কেনাবেচা ভালো হবে বলে আশা রাখি।’
ফুটপাতের বিক্রেতারা আহসান কবির বলেন, ‘আমাদের ফুটপাতে দোকান ভাড়া নাই। তাই কম দামে পণ্য বিক্রি করতে পারি। আর যতো মধ্যবিত্ত আর নিম্তবিত্ত মানুষ আছে তারা মার্কেটের তুলোনায় কম দামে পাওয়ায় ফুটপাত থেকেই বেশি কেনাকাটা করেন। ঈদের আগে প্রতি বছরই আমাদের প্রত্যাশা থাকে অনেক৷ এবছরও প্রত্যাশা আছে। বিক্রিও ভালো হবে ইনশা-আল্লাহ। লোকজন আসতে শুরু করেছেন৷ কয়েকদিন পরে ভিড় আরও বাড়ব৷ আশা করছি ভালো বিক্রি করতে পারবো৷’