না.গঞ্জে শ্রমিক উষ্কিয়ে ‘কমিশন বাণিজ্যে’র অভিযোগ কথিত নেতাদের বিরুদ্ধে, সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার ১
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করার পর বিছিন্ন কিছু ঘটনার একটি হলো শ্রমিক অসেন্তোষ। রফতানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষ বন্ধে মালিকদের পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকেও বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান এই খাতে শ্রমিক অসন্তোষ যেন থামছেই না। অনেকে বলছেন, পরিকল্পিতভাবে এই খাতকে অস্থিতিশীল করতে কাজ করছে শ্রমিকদের পাশাপাশি কিছু নামধারি শ্রমিক নেতা। নারায়ণগঞ্জে বেশ কিছু মালিক ব্যবসা করলেও শ্রমিকদের বেতন দিতে গড়িমসি করার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। এতে নানা পদক্ষেপ গ্রহন করছে দেশের অন্যতম প্রধান ব্যবসায়ী সংগঠন বিকেএমইএ।
নারায়ণগঞ্জে বিগত কয়েকমাস যাবত চাঁদাবাজ নামধারি শ্রমিক নেতারা আবারও সক্রিয় হয়ে উঠছে। জেলার গার্মেন্টস শিল্পখাতকে অশান্ত করতে নানা ধরণের ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকান্ড ঘটাচ্ছে তারা। শ্রমিকদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে ঘটাচ্ছে অসংগতিপূর্ণ ঘটনা। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন কার্যলয়ে ক্রোণী এপ্যারেলসের শ্রমিকরা বেতন বকেয়ার দাবিতে আন্দোলন করেছে। এসময় আন্দোলনরত অবস্থায় ক্রোণী এপ্যারেলসের চেয়ারম্যানের গাড়ি মনে করে ঘেড়াও করে ধরে বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম’র গাড়ি। ভেতর থেকে বের হয়ে আসতেই শ্রমিকদের ভুল ভাঙে, তবে একজন নেতা হিসেবে তিনি সেটা এড়িয়ে যাননি। তিনি গাড়ি থেকে নেমে শ্রমিকদের সমস্যা জানতে চায় এবং তাদের সমস্যার কথা শুনেন।
তিনি তখন শ্রমকিদের জানান, এর আগে তোমাদের বেতনের সমস্যা সমাধান করেছিলাম। তখন আমি জানি, তোমাদের বেতন বকেয়া থাকার কথা নয়। এর পরও তোমাদের যদি কারো বেতন বকেয়া থেকে থাকে, তোমরা আইডি সহ নামের তালিকা দাও, আমরা বিকেএমইএ পক্ষ থেকে ঈদের আগেই সমস্যা সমাধান করে দিবো।
শ্রমিকরা এমন আশ্বাসে ব্যবসায়ী নেতা মোহাম্মদ হাতেম এর প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে কৃজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সে সময় কিছু শ্রমিক অভিযোগ করেন, সমস্যা সমাধানের পর বেতন শ্রমিকদের হাতে আসলে কিছু নেতা কমিশন কেটে নেন আমাদের কাছ থেকে।
এদিকে শ্রমিকদের এ অভিযোগের সাথে সত্যতা মিলে, জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট মিটিংয়ে এক নেতা অভিযোগ করেন, কিছু কিছু নামধারী শ্রমিকনেতা কমিশন বাণিজ্যে জড়িত এবং তারা এ জন্য নানা ষড়যন্ত্র করে শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি করে। শ্রমিকদের নিয়ে তারা কমিশন বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে তাদের উষ্কিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে। তারা ইচ্ছাকৃত ভাবে শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি করে।
এদিকে সাধারণ শ্রমিকদের মাধ্যমে জানা যায়, শ্রমিক আন্দোলনের মধ্যে আজকে হাতে নাতে, জেলা শ্রমীক লীগের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাউসার আহম্মেদ পলাশের কেডার ও আওয়ামী লীগের চিহ্নিত চাঁদাবাজ এবং মামলার আসামি রুমান মাতুব্বর (৩৯)কে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অন্য দিকে কাশিপুর এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজ কথিত শ্রমিক নেতা আল আমিনও এর সাথে জড়িত আছে বলে অভিযোগ করে শ্রমিকরা।
গ্রেপ্তারের তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. জামাল উদ্দিন। তিনি জানান, আমরা আসমিকে আপাতত আমাদের হেফাযতে রেখেছি। তার বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলা রয়েছে। ওই মামলায় তাকে মঙ্গলবার আদালতে প্রেরণ করা হবে।