না.গঞ্জে হঠাৎ করেই সাময়িক গ্যাস সংকট, বিপাকে নগরবাসী
# বাহিরে থেকে হালকা খাবার আইন্না খাইয়া রোযাডা রাখছি: গৃহীনি
# গ্যাসের একটা সাময়িক সংকট দেখা দিয়েছে, এখন নেই: তিতাস
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ‘সন্ধ্যায় বাহির থেকে ইফতার কিন্না আইন্না খাইছি, তারাবি পড়ার পর সন্ধ্যার রাইত আর সেহরীর লাইগা খাওন বানাইতে গেছি, দেখি গ্যাস নাই। ভাবছি হয়তো আইসা পরবো, রাতে ১টা বাইজ্জা গেলেও কোন গ্যাস আহে নাই। পরে মধ্য রাইতে বাহিরে থেকে হালকা খাবার আইন্না খাইয়া রোযাডা রাখছি। রোজার দিনে এই কষ্ট অনেক ভোগান্তি হইয়া গেছে’ গ্যাস সংকটের কষ্টের কথাগুলো এভাবেই বর্ণনা করছিলেন নগরীর গলাচিপায় একজন গৃহিনী।
রান্নার গ্যাস ছাড়াও সিএনজি, শিল্পকারখানা এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রেও পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ বন্ধ ছিলো। সবমিলিয়ে নারায়ণগঞ্জে একটি সাময়িক তীব্র গ্যাস সংকট দিয়েছিলো। যদিও কিছুদিন পরপরই নারায়ণগঞ্জে গ্যাসের সংকট চরম আকার ধারণ করে। এতে শিল্প-কারখানার উৎপাদনে ধস নামে এবং স্থানীয়দেরও দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
তবে, শুক্রবার গ্যাস সরবরাহ লাইনে যান্ত্রিক ক্রটি ও দুর্ঘটনাজনিত কারণে গ্যাস সংকটে ভোগান্তিতে পড়েছে নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষ। বাসাবাড়ি, সিএনজি স্টেশন ও শিল্প-কারখানায় গ্যাসের চাপ কমে গেছে; এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
জানা যায়, গ্যাস সঞ্চালন লাইন থেকে দূরবর্তী শিল্প-কারখানাগুলোতে গ্যাসের চাপ থাকে না। বিশেষ করে ফতুল্লা বিসিকে শিল্পাঞ্চল এলাকায় গ্যাসের চাপ অনেক কমে গেছে। তবে এই বিষয়ে তিতাস গ্যাস কতৃপক্ষ জানায়, গ্যাস সরবরাহ লাইনে যান্ত্রিক ক্রটি ও দুর্ঘটনাজনিত কারণে পুরো গ্যাস লাইন বন্ধ রাখা হয়েছে।
কাজল বেগম নামে এক গৃহিনী বলেন, দুই তিনদিন যাবত সকাল থেকে একেবারেই গ্যাস থাকে না। সন্ধ্যায় ইফতারের জন্য খাবার তৈরি করতে পারিনা। হোটেল থেকে কিনে এনে ইফতারের সময় পাড় করলেও রাতের খাবার তৈরি করতে পারিনি। তবে রাত আড়াইটার পরে গ্যাস এসেছে।
শহরের গলাচিপা এলাকার অধিবাসী ছকিনা (ছদ্মনাম) বলেন, সন্ধ্যা থেকেই গ্যাসের সংকট শুরু হয়েছে। রাতে তো সংকট প্রকট রূপ নিয়েছে। গ্যাসের সমস্যার কারণে রান্না করতে পারছি না। রোজা মাসে বাহিরের খাবার খাওয়া অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি।
কিছু এলাকায় গ্যাসের সমস্যা বড় আকার ধারণ না করলেও নগরীর ঘনবসতি এলাকা গুলোতে গ্যাসের চাপ অনেকটাই কম থাকে। এলাকা ভিত্তিক জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ শহরের গলাচিপা, নিতাইগঞ্জ, ডনচেম্বার, মিশনপাড়া, বাবুরাইল, পাইকপাড়া, শহীদনগর, নলুয়াপাড়া, ফতুল্লার কাশিপুর, হরিহরপাড়া, ভূঁইয়ারবাগ, দেওভোগ, চাঁদমারী, ইসদাইর, মাসদাইর, পশ্চিম মাসদাইর, জামতলা, দাতা সড়ক প্রভৃতি এলাকায় গ্যাস সংকট ও গ্যাসের চাপ কম হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।
নারায়ণগঞ্জে গ্যাসের সংকট সম্পর্কে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ তিতাস গ্যাসের উপমহাব্যবস্থাপক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রকৌশলী মো. মফিজুল ইসলাম ও উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. মুকবুল আহম্মদ এর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছে। তাদের সরকারি সাইটে দেয়া মুঠোফোনের নাম্বার গুলো বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিলো।
নারায়ণগঞ্জ তিতাস গ্যাসের হট লাইলে ফোন করা হলে এক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে জানায়, শুক্রবার ফতুল্লা বিসিক এলাকায় একটি যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দিয়েছিলো। এছাড়া অগ্নিকান্ডের একটা দুর্ঘটনায় আমারা গ্যাস লাইন বন্ধ রেখেছিলাম। যার ফলে গ্যাসের একটা সাময়িক সংকট দেখা দিয়েছে। তবে এখন সেই সংটক নেই। এছাড়া আমাদের গ্যাসের প্রেশার অনেক কম। আমরা মানুষের চাহিদা পূনণের চেষ্টা করছি, কিন্তু সম্ভব হয়ে উঠছে না। কবে নাগাদ এই সমস্যা সমাধান হবে তা কেবল উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলতে পারবে।