থানা বিএনপির সংবাদ সম্মেলন বিষয়ে টিটু ‘আমার অবদানকে ক্ষুন্ন করার জন্যই এই ষড়যন্ত্র করছে’
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ছররা গুলিতে আহত হয়ে দৃষ্টি হারাতে বসেছিলেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু। গুলিতে দুটি চোখই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার। বাম চোখে কিছুই দেখতে পান না তিনি। অপরদিকে অপারেশনের মাধ্যমে ডান চোখে ল্যাসিক করা হলেও চোখটি শঙ্কামুক্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। বিএনপি’র জন্য তাঁর ত্যাগ শুধু নারায়ণগঞ্জ না, সারাদেশেই বিএনপি নেতাদের প্রাণে জায়গা করে নিয়েছিলো। বিভিন্ন নেতাদের অনুপ্রাণিত করেছে টিটু।
এর আগে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থাকাকালীন দুই বছর আগে ২৯ জুলাই ২০২৩ সালে সিদ্ধিরগঞ্জর ডাচ বাংলা মোড়ে দলীয় কর্মসূচি পালনের সময় বিএনপির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ গুলি করলে টিটু চোখে গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার পরদিন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই মুমিনুল হক বাদী হয়ে ২৩ বিএনপি নেতার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে ১ আগস্ট ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার চোখের দ্বিতীয় দফায় অপারেশন সম্পন্ন হয়।
আন্দোলনে আহত হওয়ার পরও তিনি বিন্দু পরিমান পিছিয়ে পরেনি। জনমানুষের রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। দলীয় কর্মসূচি স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে তাক লাগানো সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। ১ চোখেই নেতৃত্ব দিয়ে বিএনপিকে শক্তিশালী করেছেন। তার মানবিক আচরণ মুগ্ধ হয়েছেন নেতাকর্মীরা। তারই ধারাবাহিকতায় ফতুল্লা কুতুবপুর ইউনিয়নে গুণিজনদের সংবর্ধণা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন তিনি। অনুষ্ঠানে নেতাকর্মীরা ওই এলাকার চেয়ারম্যানকে নিয়ে যুক্তি তর্ক দিয়ে নানান মন্তব্য করেন। আওয়ামী লীগের আমলে সেই নেতার আওয়ামী লীগের ঘরে থেকে বিএনপি’র জন্য সহযোগীতা তুলে ধরেন। সেই তাদের বক্তব্যের আলোকে শহিদুল ইসলাম টিটু ‘সেন্টু সাহেব প্রায় ৩০ বছর বিএনপি’র চেয়ারম্যান হিসেবে ছিলো, একপর্যায়ে তৎকালীন এমপি শামীম ওসামনের চাপে পরে নৌকা নিয়ে নির্বাচন করলেও বিএনপি’র কোন ক্ষতি করেনি’ বলে মন্তব্য করেন বলে জানান তিনি।
শহিদুল ইসলাম টিটু সাংবাদিকদের জানান, কুতুবপুর ইউনিয়নে গুণিজনদের সংবর্ধণা অনুষ্ঠানে শিক্ষক, ইমাম সাহেবের উপস্থিতে আমি সেই প্রোগ্রামে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলাম। একপর্যায়ে বিভিন্ন বক্তাদের কথার প্রেক্ষিতে আমি মন্তব্য করেছিলাম ‘সেন্টু সাহেব প্রায় ৩০ বছর বিএনপি’র চেয়ারম্যান হিসেবে ছিলো, একপর্যায়ে তৎকালীন এমপি শামীম ওসামনের চাপে পরে নৌকা নিয়ে নির্বাচন করলেও বিএনপি’র কোন ক্ষতি করেনি’। আমার এই বক্তব্য ভিন্ন দিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে একদল লোক। তারা বলছে আমি নাকি সেন্টু চেয়ারম্যানকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছি। কথাটা আসলেই অনেক হাস্যকর। আমার মন্তব্য হলো আমি সেন্টু সাহেবকে পুর্ণবাসন করার কে? এটা দলের সিদ্ধান্ত, দল যেভাবে সিদ্ধান্ত নিবে আমি কেন, সকল নেতাকর্মীদের সেই আলোকে নির্দেশ পালন করতে হবে। আমরা তো সেদিন বলিনি যে তার বহিস্কার আদেশ বাতিল করা হোক কিংবা তাকে পুনর্বাসন করা হোক। তাহলে কেনো আমার বিরুদ্ধে এমন ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, একেবারে শুধু শুধু এই সংবাদ সম্মেলন করেছেন তারা। এটার আসলে কোন প্রয়োজন ছিলো না। আমি প্রয়োজনে গণমাধ্যমকর্মীদের যাচাই বাছাই করার অনুরোধ করবো। আমি বিএনপি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় নৌকা নিয়ে নির্বাচন করা নেতাকে কেনো পুনর্বাসন করবো এটা আমার বোধদয় আসেনা। আমার কাছে মনে হচ্ছে এটা আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অপপ্রচার ও প্রতিহিংসা পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। আমরা যেখানে দলের জন্য এতো সংগ্রাম করেছি, সেখানে যারা সংবাদ সম্মেলন করলো তারা এই ১৭ বছরে কোনদিন জেল খাটেনি। তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোন মামলা হয়নি, শেষে দু-একটা মামলা বাদে। সেখানে আমরা শতাধিক মামলার আসামি। তারা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে আমার যে অবদান আছে সেটাকে ক্ষুন্ন করার জন্যই এই ধরণের ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপি’র এই নেতা।