বুধবার, এপ্রিল ১৬, ২০২৫
Led04সদর

শহীদ মিনারে ত্বকী হত্যার ১২ বছরে আলোক প্রজ্বালন

# শেখ হাসিনা, ওসমান পরিবার দিয়ে না.গঞ্জের মানুষের জীবন দুর্বিসহ করে রেখেছিলেন: রাব্বি

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার ১২ বছর উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন আয়োজন করেছে। শনিবার (৮ মার্চ) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ওই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

সংগঠনের সভাপতি এড. জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে ও সাধররণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নিহত ত্বকীর বাবা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি রথীন চক্রবর্তী, দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক এড. মাহাবুবুর রহমান মাসুম, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা ভবানী শংকর রায় ও নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক দীপু।

রফিউর রাব্বি বলেন, শেখ হাসিনা ত্বকীসহ দেশে বহু হত্যার বিচার বন্ধ করে রেখেছিলেন। গুম, খুন, আয়নাঘর প্রতিষ্ঠা করে, বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ভয়াবহ এক রাষ্ট্র—ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। রাষ্ট্র—ক্ষমতার মোহ তাকে উন্মাদ করে ফেলেছিল। কিন্তু হাজারো ছাত্র—তরুণদের হত্যা করেও তিনি ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেন নি। তিনি পুরোপুরি নির্ভর করেছিলেন পুলিশ ও মাফিয়াগোষ্ঠীর উপর। জনগণ ছিল উপেক্ষিত। নারায়ণগঞ্জে ওসমান পরিবারকে দিয়ে নারায়ণগঞ্জের মানুষের জীবন দুর্বিসহ করে রেখেছিলেন। সে পরিবার আজকে তার মতই পালিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, এখন ওসমান পরিবারের ফেলে যাওয়া সম্পত্তি রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে ফকির গ্রুপ। ‘ক্রয় সুত্রে এই সম্পত্তির মালিক ফকির এ্যপারেলস’ এমনি ভুয়া সাইনবোর্ড লাগিয়ে তারা ওসমানদের সম্পত্তি রক্ষার কৌশল নিয়েছে। ফকির গ্রুপ, নীট কনসার্ন এরা ওসমান পরিবারের লুটপাটের নৈতিক সহায়ক ছিল। ওসমান পরিবারের সম্পত্তি নারায়ণগঞ্জের মানুষের রক্তে গড়া সম্পত্তি। আমাদের দাবি ওসমান পরিবারের সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রের কোষাগারে জমা করতে হবে। তারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছে। দলের সর্বোচ্চ মহল থেকে মন্ত্রী, এমপি, আমলা সকল পর্যায়ে তারা এই লুটের টাকা বণ্টন করেছে।

তিনি আরও বলেন, তাদের নিজ দলীয় নেতারা বলেছেন, মন্ত্রী ওবায়েদুল কাদেরকে দশ কোটি টাকা দিয়ে ‘নাসিম ওসমান সেতু’, ‘শামসুজ্জোহা সড়ক’ ও ‘নাগিনা জোহা সড়ক’ নাম করণ করা হয়েছে। সে সময় আমি প্রশ্ন করেছিলাম, আমরা জানতে চাই নারায়ণগঞ্জে এই মানুষগুলোর অবদান কী? কেন একই সাথে তিনটি রাস্তা ও সেতুর নাম একই পরিবারের নামে করা হলো। তারা তখন আমার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়েছিল। আমরা আজকে সরকারের কাছে এই খুনী পরিবারের নামে থাকা সেতু ও সড়কের নাম পরিবর্তন দাবি করছি।

রফিউর রাব্বি বলেন, ত্বকী হত্যার সকল ঘাতকদের অভিযোগপত্রে যুক্ত করে আমরা দ্রুত অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সিপিবি জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাসদের জেলা সদস্য সচিব আবু নাইম খান বিপ্লব, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয় তরিকুল সুজন, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি হাফিজুর রহমান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি মাহমুদ হোসেন, সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ সড়কের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। এর দু’দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গত ৫ আগস্ট সরকার বদলের পরে অন্তর্বর্তী কালীন সরকার ৬ জন ঘাতককে গ্রেপ্তার করে, কাজল হালদার নামে একজনের জবানবন্দি গ্রহণ করে বিচার কার্যক্রম আবার শুরু করে। ত্বকী হত্যার পর থেকে বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।

RSS
Follow by Email