দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে কিছু নাই, একাত্তরের পর স্বৈরাচারের পতন হয়েছে: মির্জা আব্বাস
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ৭১ সালে আমরা অনেক কষ্ট করে দেশ স্বাধীন করেছি। দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে কিছু নাই, স্বাধীন হয়েছি একাত্তরে এ। আমরা বাংলাদেশকে পরপর ২ বার স্বৈরাচার মুক্ত করেছি, প্রথমে এরশাদ পরে শেখ হাসিনাকে পতন করিয়েছি। কেউ ২য় স্বাধীনতা বলবেন না। এতে স্বাধীনতাকে ও সেই শহীদদের ছোট করা হয়, আপনারা স্বৈরাচারের পতন বইলেন।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) নগরীর মিশনপাড়ায় জেলা বিএনপির জণসভায় যোগ দিয়ে এ কথা বলেন মির্জা আব্বাস।
এসময় তিনি আরও বলেন, এখন অপকর্ম যেই করুক না কেন, নাম হচ্ছে বিএনপির। বিএনপির জনপ্রিয়তা দেখে কিছু দল বা মানুষ হিংসা করে বিএনপিকে দুর্নাম করার চেষ্টা করছে। বিএনপি ভারতেই তাবেদারী করে না। বিএনপি নির্দোষ দল না, লক্ষ্য লক্ষ্য নেতাকর্মীকে মধ্যে একজন খারাপ হতে পারে। কিন্তু তাদের ছাড় দেয়া হবে না। আপনারা আমাদের তথ্য দেন, যদি কারো বিরুদ্ধে প্রমাণ দিতে পারেন তাহলে আমি মির্জা আব্বাস কথা দিচ্ছি সে বিএনপিতে থাকতে পারবে না।
আওয়ামীলীগের সময় আমি এই নারায়ণগঞ্জের মিটিং করতে এসেছিলাম। আমার নেতাকর্মীরা অনেক ভয়ে হলেও নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে বসার ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু আজ কোনো ভয় ছাড়াই এই লাখো মানুষের মাঝে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারছি। প্রথমে আমাদের নিজেদের মধ্যে ঐক্য থাকতে হবে পরে জাতির মধ্যে ঐক্য থাকতে হবে।যারা আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চাচ্ছেন, তাদের এই চাওয়া উদ্দেশ্যমূলক। তাদের এই উদ্দেশ্য ষড়যন্ত্রমূলক। দেশে এখন অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে, আর এই ষড়যন্ত্র হচ্ছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য। গ্রামে গঞ্জে অনেকের পায়ের তলার মাটি নেই, স্থানীয় সরকার নির্বাচন করে তারা পায়ের তলার মাটি করতে চাচ্ছে। আমরা আন্দোলন লড়াই করেছি গণতন্ত্র ও সংসদ নির্বাচনের জন্য। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য লড়াই করিনি। ঘোড়ার আগে গাড়িতে উঠতে হয় না।
জণসভায় তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে যারা মিথ্যা মামলা এখনও জেলে পচে মরছে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হোক। আওয়ামী লীগ সরকার থাকতে তাদের কারণেই পুলিশ এদেরকে ছাড়তে পারেনি। কিন্তু এ সরকার থাকা অবস্থায় কেন তাদের ছাড়া হচ্ছে না তা আমার জানা নেই। আমি মনে করি তাদেরকে বিনা শর্তে মুক্তি দেওয়া হোক। এদেশের মানুষের ঐক্য কখনও কেউ ভাঙতে পারবেন না। মানুষ শান্তি চায়, নিরাপদে বাঁচতে চায়। কিন্তু যারা এই শান্তিতে থাকতে দিচ্ছে না তাদের জনগণ ছেড়ে দেবে না। এই সরকারের কাছে আমাদের দাবি ছিলো দ্রব্যমূল্য কমানোর ও সুষ্টু নির্বাচন দেওয়া। এই সরকার আসার সময় আমরাই সমর্থন করেছিলাম। আমরা বলেছি এ সরকারকে সফল করতে হবে, যদি এ সরকার ব্যর্থ হয় তাহলে দেশের জনগণ ব্যর্থ হয়ে যাবে। কিন্তু যদি আজীবন ক্ষমতায় থাকার ষড়যন্ত্র হয় তাহলে সেই ষড়যন্ত্র আমরা রুখে দিবো। অনেকেই বলে যারা নির্বাচন চায় তারা দেশের ভালো চায় না, যারা এগুলো বলেছে তারা এই ১৭ বছর কই ছিল ? আমরা নিজেদের জন্য নির্বাচন চাই না। অনেকেই ধরে নিয়েছে নির্বাচন হলেও বিএমপি ক্ষমতায় আসবে। তারা ধরে নিয়েছে কারণ তারা বুঝেছে এই দেশে বিএনপিকে মানুষ চায়।
এ সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীবের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি’র সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহম্মেদ টিুট, কেন্দ্রীয় সহ অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, জেলা বিএনপির ১ম যুগ্ম আহ্বায়ক হয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, যুগ্ম আহ্বায়ক শরীফ আহমেদ টুটুল, সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, সোনারগাঁ বিএনপির সভাপতি ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান, রেজাউল করিম, কাজী মনিরুজ্জামান, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক, সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনিসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।