আগ্রাসী কর্মকাণ্ড নয়, রাজনৈতিকভাবেই ফ্যাসিবাদ নিমূর্ল করতে হবে: বাসদ
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: শতাধিক পণ্যে বর্ধিত ভ্যাট বাতিল, রেশন ব্যবস্থা চালু, দ্রব্যমূল্য কমানো, লুটপাট ও পাঁচারকৃত টাকা উদ্ধার, দমন-পীড়ন, মব ভায়োলেন্স বন্ধ, ধর্ম জাতিগতসম্প্রীতি রক্ষা, প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবিতে সিদ্ধিরগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারী) বিকেল সাড়ে ৪ টায় সিদ্ধিরগঞ্জ চৌধুরীবাড়ি বাস স্ট্যান্ডে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
বাসদ সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সমন্বয়ক সেলিম মাহমুদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির সদস্য রুহুল আমিন সোহাগ, হাসান মাহমুদ, তৌহিদুল ইসলাম সুজন, ফারুক।
নেতৃবৃন্দ বলেন, যেখানে ক্রমাগত পণ্য মূল্যস্ফীতিতে সাধারণ মানুষের জীবন বিপর্যস্ত, সেখানে অর্থবছরের মাঝখানে নতুন করে শতাধিক নিত্যপণ্যের উপর ভ্যাট ও শুল্ক বাড়িয়ে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন আরও বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে। আইএমএফ এর পরামর্শে এই করারোপের কোন নৈতিক ভিত্তি বর্তমান সরকারের নেই। এটি শ্রমজীবী, কর্মজীবী নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য মরার উপর খাড়ার ঘায়ের সামিল। যেখানে আমাদের প্রবাসী শ্রমিকেরা মাসে ২ বিলিয়ন ডলার দেশে প্রেরণ করে সেখানে মাত্র দেড় বিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য আইএমএফ এর চাপে করারোপের কোন মানে হয় না। দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রন না হলে কোন সংস্কারই জনগণের কাজে আসবে না। বিগত স্বৈরাচারী শাসনের সময় সবচেয়ে আলোচিত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে এসরকারও কোন ব্যবস্থা নিতে পারে নাই। অন্তবতীর্কালীন সরকারকে সিন্ডিকেট ভাঙ্গা ও সিন্ডিকেটের জন্য দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তথাকথিত তৌহিদী জনতার নামে সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী গোষ্ঠী দিনাজপুর ও জয়পুরহাটে মেয়েদের ফুটবল খেলা বন্ধ করে দিয়েছে। এর আগে ঢাকায় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী আদিবাসী সমাবেশে হামলা চালিয়েছে। মৌলবাদী গোষ্ঠী দেশে একটি সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে। সরকার এখানেও নীরব ভূমিকায় আছে। মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী দেশে বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে। এগুলো বন্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, শেখ হাসিনাসহ স্বৈরাচারী সরকারের মন্ত্রী এমপি ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা—কমীর্ যারা বিগত সাড়ে পনর বছরের শাসনের সময় বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত করেছে এবং শেষে হত্যাযজ্ঞ ঘটিয়েছে কারও বিচার কার্যের কোন দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। এই সুয়োগে আজ পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারত থেকে তথাকথিত জাতির উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখার স্পর্ধা প্রদর্শন করছে। আবার এটাকে কেন্দ্র করে দেশে আন্দোলনকারী ছাত্র জনতার নামে বুলডোজার দিয়ে দেশীয় ঐতিহ্যসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙ্গা হচ্ছে। সরকার নির্বিকার ভূমিকায় আছে। দেশ যখন ক্রমাগত স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরে আসছে তখন এরকম মব বাঞ্ছনীয় নয়, এর জন্য সরকারকে দায়ী থাকতে হবে। এসময়ে ফ্যাসিবাদী আগ্রাসী কর্মকাণ্ড নয়, রাজনৈতিকভাবেই আমাদের ফ্যাসিবাদ নিমূর্ল করতে হবে। অবিলম্বে প্রয়োজনীয় সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করা এবং সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে গণতন্ত্রে উত্তোরণের পথ সুগম করতে হবে। একই সাথে গণঅভ্যুত্থানের চেতনা শোষণ বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য শুধু ক্ষমতার হাত বদল নয়, ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামে সামিল হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানই। নেতৃবৃন্দ গ্রাম ও শহরের শ্রমজীবী মানুষের জন্য সর্বজনীন রেশন চালু ও ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু করার দাবি জানাই।