চেয়ারম্যান আমাকে আহ্বায়ক করলে আমাকে অপমান করা হতো: গিয়াসউদ্দিন
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, ‘একজন নির্বাচিত সভাপতি তো আহবায়ক হতে পারে না। আমাদের দলের অনেক সদস্য আছে, তারা এই মান সম্মানের বিষয়গুলো বোঝে না। তাদের কথা হলো আমার একটা পদ পাইলেই হয়। আর আমাকে আমাদের চেয়ারম্যান সর্বোচ্চ সম্মান দিয়ে সদস্য রেখেছেন। যদি উনি আমাকে আহ্বায়ক করতেন তাহলে আমাকে অপমান করা হতো। কারণ আমি তো নির্বাচিত ছিলাম, কেউ নির্বাচিত হলে কিভাবে আবার আহ্বায়ক হয়। আহবায়কের পদ থেকে নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের পদ বড়। যে কাজটা হয়েছে অনেকে সেটা নিয়ে হাসাহাসি করে। এত রং ঢং এর তো কিছু নাই। আমরা রাজনীতি করি, দায়িত্বে থাকলেও আছি না থাকলেও আছি। দলের বৃহত্তম স্বার্থে কাজ করতে হবে।’
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারী) সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাথে এক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য এ কথা বলেন জেলা বিএনপির সাবেক এই সভাপতি।
সভায় তিনি আরও বলেন,পাঁচ সদস্যের কমিটির মধ্যে বয়সের থেকে বয়োজ্যেষ্ঠ আমি, বিগত দিনে বড় বড় পদগুলো দায়িত্ব পালন করে এসেছি আমি। সকলকে বড় ধরে আমাকে সদস্যের সাথে ছোট ধরে ভুল করবেন না। দ্বায়িতের দিক থেকেও তাদের থেকে আমার অনেক বেশি। আমি ধরে নিলাম পাঁচজনের মধ্যে সর্বনিম্ন পদে আমি আছি, কিন্তু বিবেকের দিক থেকে আমি অনুভব করি এই পাঁচজনের মধ্যে সব থেকে বেশি দায়িত্ব আমার। আমাদের সকলের দায়িত্ব হবে এই কমিটির সফলতা কিভাবে করা যায় সেদিকে। কে কোন পদে থাকলাম সেটা বড় বিষয় নয়, শুধু পদ পাইলে খুশি হলাম এটা হতে পারে না।’
গিয়াস উদ্দিন আরও বলেন, ‘আমি যখন আহবায়ক থেকে সভাপতি নির্বাচিত হলাম তখন বিভিন্ন মিছিল মিটিং সদস্যদের ডাকতাম। কিন্তু তারা আসেনি। নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা গিয়ে মিছিল অংশগ্রহণ করেছি, তারা আমাদের সাথে না গিয়ে আলাদা ব্যানার নিয়ে ফেসবুকে দেওয়ার জন্য ছোট করে মিছিল করতো। এটা ছিল গঠনতন্ত্র সম্পন্ন পরিপন্থী ও দলের সাথে সব থেকে বড় বিশ্বাসঘাতকতা। এত বছর পরও আমি কেন্দ্রীয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধে একদিনের জন্য অভিযোগ দেইনি। তাদের বিরুদ্ধে আমি অভিযোগ দিতে পারি না কারণ তারা আমারই কর্মী ও সহকর্মী। গত বছর যে আমরা দায়িত্ব পালন করলাম একদিনের জন্য কেউ বসেনি আমাদের সাথে। অথচ গত পরশুদিন প্রথম মিটিং ডাকা হয়েছে, এখানে আমি যোগদান করেছি। আমার বয়স দলের প্রতি দায়িত্ব এবং নেতার প্রতি আনুগত্য দিক থেকে আমি সেই মিটিং এ অংশগ্রহণ করেছি। যদি কোন নেতা শৃঙ্খলা বোঝেনা, কিন্তু সে যদি নেতৃত্ব দেয় তাহলে নারায়ণগঞ্জের কি হবে সেটা আপনারা জানেন। গঠনতন্ত্র সকল নেতার মানতে হবে, মুখে নয় কাজেও দেখাতে হবে। এই দল আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে, তাই এই দলকে দেওয়ার আমার কাছে অনেক কিছু আছে। নারায়ণগঞ্জের সাংগঠনিকভাবে যে জিনিসটা ছিল না আমরা সেটাই ফিরিয়ে এনেছি। এবং আমার বিশ্বাস হলো কর্মীরা আমাদের সাথে থাকবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এখন আমাদের চূড়ান্ত বিচার অর্জন হয়নি। মানুষ স্বৈরাচার সরকারের বিদায়ের পর এখন মানুষ চায় মুক্ত ভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করার। কিন্তু নির্বাচন নিয়েও কত তালবাহানা চলছে। আমাদের আন্দোলনে কোনো শেষ হয়নি আগামীতেও তীব্র আন্দোলন সংগ্রাম করতে হতে পারে। এজন্য আমাদের সংগঠনকে দলকে আরো শক্তিশালী ভাবে গড়ে তুলতে হবে। এ দলকে শক্তিশালী করার পেছনে থাকতে হবে ঐক্য। আমাদের ঐক্যের মধ্যে যেন কেউ ফাটল ধরাতে না পারে। আমরা আমাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে কমিটির সফলতা আনতে চাই। দল ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন কোন কাজে কেউ যাবেন না। কেউ যদি হিংস্র মনোভাব দেখায় বা পায় পা দিয়ে ঝগড়া করতে চায়, তাহলে আপনাদের কাছে অনুরোধ আপনারা পা সরিয়ে নিয়ে আসবেন। কোন ঝগড়া বিবাদ করবেন না। যুগে যুগে মীরজাফর ও স্বার্থপর মানুষ তৈরি হয়েছে। কতদিন আমাদের সাথে ছিল কিন্তু এখন পদ পদবী পাওয়ার জন্য এদিক সেদিক দৌড়াবে, ফুল দিবে। ধৈর্য ধরেন সঠিক সময়ের। ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে নিজেদের নেতাদের এ নিয়ে কমিটি গড়বেন এত সহজ না। যারা আন্দোলন সংগ্রামে ত্যাগ স্বীকার করেছে তাদের মূল্যায়ন করতে হবে।